শিক্ষার্থী আটকের প্রতিবাদে রাজধানীর উত্তরা পূর্ব ও পশ্চিম থানায় হামলা করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উত্তরার শিক্ষার্থীরা। এতে উত্তরা পশ্চিম থানার প্রায় পাঁচ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় এ হামলার ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেন উত্তরা পশ্চিম থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নাজমুল হাসান।
থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, উত্তরা পূর্ব থানা পুলিশ তিন শিক্ষার্থীকে আটকের প্রতিবাদে মঙ্গলবার বিকালে প্রথম উত্তরা পূর্ব থানায় হামলা করে বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীরা। পরে সন্ধ্যায় উত্তরা থানায় হামলা করে। এ সময় শিক্ষার্থীদের ছোঁড়া ইটপাটকেল থানায় কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হন। পরে রাত ১০টার দিকে সেনাবাহিনীর সহযোগিতার থানা এলাকা ত্যাগ করেন হামলাকারী শিক্ষার্থীরা।
নাজমুল হাসান বলেন, একটি অভিযোগ ভিত্তিতে থানা পুলিশ তিন শিক্ষার্থীকে আটক করে। পরে শতাধিক শিক্ষার্থী প্রথমে উত্তরা পূর্ব থানা ঘেরাও করে। এরপর সন্ধ্যায় তারা পশ্চিম থানায় হামলা করে। এঘটনায় সেনাবাহিনীর দুটি টিম ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনে। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
জানা যায়, সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে উত্তরা ১৩ নম্বর সেক্টরের গাউসুল আজম অ্যাভিনিউ সড়কে উত্তরা পশ্চিম থানা কমিটি গঠনের জন্য একটি মিটিংয়ের আয়োজন করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা। মিটিং থেকে আকাশ, রবিন ও বাপ্পি নামের তিন ছাত্রকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। এঘটনার রেশে আজ শতাধিক শিক্ষার্থী থানায় হামলা করে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের সহপাঠী আকাশ, রবিন ও বাপ্পিকে পুলিশ আটক করে উত্তরা পূর্ব থানায় নিয়ে যায়। পূর্ব থানায় আমরা গিয়ে জানতে পারি, তিন ছাত্রকে উত্তরা পশ্চিম থানার পুলিশ আটক করে পুলিশের হেফাজতে রেখেছে। এতে উত্তেজিত ছাত্ররা উত্তরা পশ্চিম থানায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেছে। সেই সঙ্গে থানার গেটে হামলা চালিয়েছে।
থানা থেকে ছাড়া পাওয়া শিক্ষার্থী আসিফুল হক রবিন বলেন, আমরা ঝুকি নিয়ে আওয়ামী লীগ ধরাই, ছিনতাকারী ধরিয়ে দেই। অথচ ক্রেডিট নেয় উত্তরা পশ্চিম থানার ওসি হাফিজুর রহমান। আবার সেই ওসিই আমাদের নামে অভিযোগ নিয়ে ধরেছিল। আমরা উত্তরার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তালিকা করছিলাম। ওই সময় উত্তরা পশ্চিম থানার এসআই আবু সাঈদ আমাদেরকে নিয়ে আসে। আটক করার কারণ জানতে চাইলে বলেন— আমাদের নামের উত্তরা পূর্ব থানায় একটি মামলা হয়েছে। ওসি বলেছে, ডিসি স্যার নিয়ে যাওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, উত্তরা পশ্চিম থানা থেকে উত্তরা পূর্ব থানায় নিয়ে আসছে, তখন উত্তরা পূর্ব থানা পুলিশ বলছে, ওদের নামে তো কোনও মামলাই নেই। ওদের কেন গ্রেফতার করবো?
পরবর্তী সময়ে রাত সাড়ে ৮টার দিকে উত্তরা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) রওনক জাহান, অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) আহম্মেদ আলী, উত্তরা জোনের সহকারী কমিশনার সাদ্দাম হোসেনসহ অন্যান্য পুলিশ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। পরে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে উত্তরা বিভাগের পুলিশ কর্মকর্তারা ও সেনাবাহিনীর সহযোগিতার আলোচনা করে বিষয়টি মিমাংসা করা হয়।