দারুণ কর্নার নিলেন জামাল ভূঁইয়া, বল বাতাসে ভেসে ছুটল পোস্টের দিকে, হামজা চৌধুরী লাফিয়ে মাথা ছোঁয়ালেন, বল চোখের পলকের ভুটানের জালে। এরপর ঝাঁকড়া চুলের বাবরি দুলিয়ে হামজা ছুটলেন জামালের দিকে। আলিঙ্গনে বেঁধে সেদিন কি বলেছিলেন, সে গল্পই বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে শোনালেন জামাল।
খুব বেশি কথা বলেননি হামজা, কিন্তু যতটুকু বলেছিলেন, সেখানে ছিল আন্তরিকতার পরশ। কৃতজ্ঞতার সুর। সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ম্যাচ সামনে রেখে জামালের কাছে জানতে চাওয়া হয়, সেদিনের গোলের উদযাপনে ছুটে এসে কিছু একটা বলেছিলেন হামজা। তাতে জামালের মুখে মিষ্টি হাসি খেলে যায়।
“ওই সময় হামজা যখন গোল করে ছুটে এসে আমাকে আলিঙ্গন করল, ও তখন আমাকে বলল, ‘ক্যাপ্টেন, বিউটিফুল ক্রস, একেবারে পারফেক্ট।’ হামজা আমার দিকে আঙুল তুলে পয়েন্ট করেছে, কেননা ও আমার কর্নার থেকেই গোল করেছে। এই গোল নিয়ে ও খুব বেশিই খুশি ছিল। কেননা, দেশের মাঠে এটা ওর প্রথম ম্যাচ ছিল। আমার মনে তখন মনে হয়েছিল, দেশের জাতীয় স্টেডিয়ামে ওর শুরুটাও নিখুঁত হয়েছে।”
‘নিখুঁত’ শুরু পেয়েছেন হামজা, কিন্তু নানা কারণে ইদানিং সেরা একাদশে জামালের জায়গাটা হয়ে গেছে নড়বড়ে। গত মার্চে ভারতের বিপক্ষে এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের তৃতীয় রাউন্ডের ম্যাচে অধিনায়ক হিসেবে সংবাদ সম্মেলনে এসেছিলেন জামাল। বলেছিলেন, প্রত্যাশা ও লক্ষের কথা। কিন্তু তাকে খেলাননি হাভিয়ের কাবরেরা। ভারত ম্যাচে তার না খেলার কারণগুলোর একটি ছিল বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের প্রথম পর্বে চুক্তি সংক্রান্ত জটিলতায় মাঠের বাইরে থাকা।
কদিন আগে ভুটানের বিপক্ষে ২-০ গোলে জেতা ম্যাচের সেরা একাদশে ফিরে জামাল। খেলেছেন অ্যাটাকিং মিডফিল্ডে। হামজার গোলে অবদানও রাখেন তিনি। কিন্তু মঙ্গলবার ঢাকা জাতীয় স্টেডিয়ামে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ৩৫ বছর বয়সী এই ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডারের খেলার সম্ভাবনা নিয়ে দোলাচল কম নয়।
কানাডা লিগে খেলা শোমিত সোম দলে আসায় জামালের জন্য সুযোগ পাওয়ার পথটা সংকীর্ণ হয়েছে আরও। ২৭ বছর বয়সী এই তরুণ মিডফিল্ডারকে মাঝমাঠে জায়গা দেওয়ার ইঙ্গিত বাংলাদেশ কোচ দিয়ে রেখেছেন। নিজের খেলার প্রশ্নে জামাল অবশ্য বল ঠেলে দিয়েছেন কাবরেরার কোর্টে। পাশাপাশি বলেছেন, নিজের মতো করে প্রস্তুত থাকার কথা। যেন সুযোগ পেলেই সেট-পিসে কিংবা অন্য কোনো উপায়ে ঝলক দেখাতে পারেন।
“এইটা তো আমি চাইবোই (ক্রস বাড়াব, হামজা বা অন্য কেউ গোল করবে)। যদি আমি অ্যাসিস্ট করতে পারি, তাহলে খুশিই হব। তবে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে, ভুটান ম্যাচে আমরা জয় পেয়েছি। কে অ্যাসিস্ট করল, কে গোল করল, সেটা আমার কাছে বিষয় নয়। আমার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে দলের জয়। সিঙ্গাপুর ম্যাচেও একই চাওয়া থাকবে।