অমর্ত্য সেন: ব্রিটিশ শাসকেরা কিন্তু হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা থামাতে যথেষ্ট চেষ্টা করেছে বলে মনে হয়নি। বরং তাদের ভারতবর্ষে থাকাটা প্রয়োজনীয় করে তুলতে দাঙ্গা উসকে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। দাঙ্গার শুরুর দিকে, আমার বয়স তখন ১০ বা ১১ বছর হবে, একদিন বাগানে খেলছি। হঠাৎ বাইরে থেকে আমাদের কম্পাউন্ডের ভেতর একজন মানুষ ঢুকে পড়লেন, যাঁর পিঠে ছুরি মারা হয়েছে। ভয়ানক রক্তপাত হচ্ছে। তিনি কাতর কণ্ঠে পানি চাচ্ছিলেন। বাবা তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে গেলেও বাঁচাতে পারেননি। মানুষটি ছিলেন দিনমজুর। মৃত্যুর আগে তিনি কয়েকটি বাক্য বলতে পেরেছিলেন। তাঁর ঘরে বাচ্চাদের জন্য কোনো খাবার ছিল না। এ কারণে তিনি ঘর থেকে বের হয়েছিলেন। হিন্দু সন্ত্রাসীরা তাঁর পিঠে ছুরি বসিয়ে দেয়। একই ঘটনা আবার হিন্দু দিনমজুরদের সঙ্গেও ঘটেছে। হিন্দু বা মুসলিম না, আসলে নিগৃহীতই তাঁদের বড় পরিচয়। ওই সময়ের দাঙ্গায় যাঁরা প্রাণ হারিয়েছেন সেই হিন্দু-মুসলিমদের অধিকাংশই কিন্তু নিম্ন আয়ের মানুষ।