টানা দ্বিতীয়বারের মতো নারী সাফ ফাইনালে শিরোপা জয়ে বাংলাদেশ দলকে অভিনন্দন জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন। বুধবার রাতে এক অভিনন্দন বার্তায় রাষ্ট্রপতি নারী ফুটবল দলের খেলোয়াড়, কোচ ও সংশ্লিষ্ট সবাইকে অভিনন্দন জানান। এই অর্জন দেশের ফুটবলের উন্নয়নে ইতিবাচক অবদান রাখবে বলে আশা প্রকাশ করেন রাষ্ট্রপতি।
নারী সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে নেপালকে ২-১ গোলে হারিয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মতো হিমাদ্রির শিখরে বাংলাদেশের মেয়েরা।
২০২২ সালে অনুষ্ঠিত গত আসরের শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচও হয়েছিল এই দুই দলের মধ্যে। ভেন্যুও ছিল একই। সেবার নেপালকে ৩-১ গোলে হারিয়ে প্রথমবারের মতো দক্ষিণ এশিয়ার সর্বোচ্চ নারী ফুটবল প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বাদ পেয়েছিল বাংলাদেশ।
হাইভোল্টেজ এই ফাইনাল দেখতে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় ১৫ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতার কাঠমান্ডুর দশরথ রঙ্গশালা স্টেডিয়াম। ফাইনালের মহারণে বাংলাদেশ খেলতে নামে একাদশে একটি পরিবর্তন এনে। ভুটানের বিপক্ষে সেমিফাইনালে খেলা সাগরিকার জায়গায় দলে ফেরেন ফরোয়ার্ড শামসুন্নাহার জুনিয়র। চোটের কারণে সেমিতে খেলতে পারেননি শামসুন্নাহার জুনিয়র।
৪-৩-৩ ফরমেশনে ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক খেলে বাংলাদেশ। নেপালী গোলরক্ষকের ভুলে দ্বিতীয় মিনিটেই সুযোগ এসেছিল তহুরার সামনে। তবে দুর্ভাগ্য, সাইড পোস্টে লেগে অল্পের জন্য গোল পাওয়া হলো না বাংলাদেশের।
ম্যাচের ৯ মিনিটে দারুণ এক সুযোগ পেয়েছিল বাংলাদেশ। যদিও ফিনিশিংয়ের অভাবে গোল মেলেনি। পরের মিনিটেই পাল্টা আক্রমণে সুযোগ পায় নেপাল। আমিশা কার্কির শট পোস্টে লাগলে বেঁচে যায় বাংলাদেশ।
৩৩ মিনিটে নেপালের বক্সের ঠিক বাইরে ফ্রি–কিক পায় বাংলাদেশ। সেখান থেকে মারিয়ার শট বারের অনেক ওপর দিয়ে চলে যায়। ৩৫ মিনিটে নেপালের ভুলে সুযোগ পেয়েছিলেন মনিকা। কিন্তু বল চলে যায় পোস্টের ওপর দিয়ে।
ভারত ম্যাচে লাল কার্ড দেখা রেখা পোডেলকে ফাইনালে পায়নি নেপাল। ৭ গোল করা এই ফরোয়ার্ডের অনুপস্থিতিতে আক্রমণভাগের দায়িত্ব ওঠে সাবিত্রা ভান্ডারির কাঁধে। তবে প্রথমার্ধে ফরাসি লিগে খেলা এই তারকাকে কড়া পাহারায় রাখেন আফিদা খন্দকার ও শিউলি আজিম।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই আক্রমণ - পাল্টা আক্রমণ চালায় দুই দল। অবশেষে ম্যাচের ৫২ মিনিটে ডেডলক ভাঙেন বাংলাদেশের মনিকা। তার গোলে ১-০ গোলে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। কিন্তু বেশিক্ষণ এগিয়ে থাকতে পারেননি সাবিনারা। ম্যাচের ৫৫ মিনিটে মাঝমাঠ থেকে প্রীতি রাইয়ের দুর্দান্ত এক থ্রো পাসে নেপালকে সমতায় ফেরান আমিশা কার্কি।
দুই দল সমতায় ফেরার পর থেকেই উত্তাপ বেড়ে যায় গ্যালারিতে। ৬০ মিনিটে কর্নার থেকে কাছাকাছি গিয়েও গোলের দেখা পায়নি সাবিনা খাতুনের দল। ৬৬ মিনিটে সুযোগ হাতছাড়া করে নেপাল। ৬৭ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে মারিয়ার দুর্দান্ত এক শট ঠেকিয়ে দেন নেপালের গোলরক্ষক আঞ্জিলা। ৭১ মিনিটে প্রতি–আক্রমণে কাছাকাছি গিয়েও গোল পায়নি নেপাল।
অবশেষে ম্যাচের ৮০ মিনিটে ঋতুপর্ণার অসাধারণ এক গোলে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। বাঁ প্রান্ত থেকে দারুণ এক শটে নেপালি গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন ঋতুপর্ণা।
শেষ পর্যন্ত তার গোলেই নির্ধারিত হয় শিরোপাভাগ্য। ২-১ গোলে নেপালকে হারিয়ে আরেকবার হিমালয় চূড়ায় উঠলো সাবিনা-তহুরারা। এর আগে নেপালকে হারিয়েই বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো দক্ষিণ এশিয়ার সেরা হয়েছিল। ওই ফাইনালের জোড়া গোলদাতা কৃষ্ণা রাণী সরকার এবারও খেলেছেন।