মধ্যপ্রাচ্য: তেল ট্যাংকারে প্রাণঘাতী হামলায় ইরানের বিরুদ্ধে অভিযোগ ইসরায়েলের

১৩ মিনিট আগে

ছবির উৎস, EPA

ছবির ক্যাপশান,

ইসরায়েলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়াইর লাপিদ

আরব সাগরে বৃহস্পতিবারের তেল ট্যাংকারে হামলার পেছনে ইরান জড়িত রয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে ইসরায়েল। ওই হামলায় জাহাজের দুইজন ক্রু নিহত হয়েছে- তাদের একজন ব্রিটিশ, আরেকজন রোমানিয়ার নাগরিক।

এমভি মার্সার স্ট্রিট নামের ওই জাহাজটি লন্ডন ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান যোডিয়াক ম্যারিটাইম পরিচালনা করে। বৃহস্পতিবার যখন ওই জাহাজে হামলার ঘটনা ঘটে, তখন সেটি ওমান উপকূলের কাছাকাছি, আরব সাগরে ছিল।

এই কোম্পানির মালিক ইসরায়েলি ধনকুবের ইয়াল ওফের। তিনি বলেছেন, আসলে কি ঘটেছে, সেটি জানার কাজ চরছে।

তবে ইসরায়েলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়াইর লাপিদ শুক্রবার অভিযোগ করেছেন, এটি ছিল 'ইরানি সন্ত্রাস'।

''ইরান শুধুমাত্র ইসরায়েলের সমস্যা নয়। বিশ্ব অবশ্যই নীরব থাকতে পারে না,'' বক্তব্যে তিনি আরও বলেছেন।

হামলা সম্পর্কে কী জানা যাচ্ছে?

তবে লাইবেরিয়ান পতাকাবাহী আর জাপান মালিকানাধীন এই তেলবাহী জাহাজে আসলে কি ঘটেছে, তা এখনো পরিষ্কার নয়।

এসব অভিযোগের ব্যাপারে এখনো কোন মন্তব্য করেনি ইরান।

এই ঘটনা ওই এলাকার উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কোন কোন তথ্যে জানা যাচ্ছে, এই ঘটনায় ড্রোন ব্যবহার করা হয়েছে।

যুক্তরাজ্য সরকারের একজন মুখপাত্র বলেছেন, আসলে কি ঘটেছে, সেটি তারাও জানার চেষ্টা করছেন।

''ওমান উপকূলের কাছে ট্যাঙ্কারে যে ব্রিটিশ নাগরিক মারা গেছেন, তাদের প্রিয়জনের পাশে আমরা রয়েছি,'' একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে।

ওমান উপসাগরে ২০১৯ সালের নভেম্বরে নওয়েজিয়ান মালিকানাধীন একটি জাহাজ হামলার শিকার হয়

ছবির উৎস, Getty Images

ছবির ক্যাপশান,

ওমান উপসাগরে ২০১৯ সালের নভেম্বরে নওয়েজিয়ান মালিকানাধীন একটি জাহাজ হামলার শিকার হয় (ফাইল চিত্র)

সেখানে আরও বলা হয়, নৌযানগুলোকে 'অবশ্যই আন্তর্জাতিক নিয়মনীতি মেনে স্বাধীনভাবে চলাচল করতে দিতে হবে''।

শুক্রবার একটি বিবৃতিতে জাহাজ পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান যোডিয়াক ম্যারিটাইম বলেছে, দুইজন কর্মীর মৃত্যুর ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। এতে আর কেউ আহত হয়নি বলেও তারা জানিয়েছে।

কোম্পানিটি জানিয়েছে, জাহাজটিকে এখন সেটির কর্মীরা পরিচালনা করছেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর সহায়তায় সেটি নিরাপদ স্থানের দিকে যাচ্ছে।

যুক্তরাজ্যের ম্যারিটাইম ট্রেড অপারেশন্স (ইউকেএমটিও) জানিয়েছে, ওই ঘটনার ব্যাপারে তারা তদন্ত করতে শুরু করেছে। যৌথবাহিনী জাহাজটিকে সহায়তা করছে বলেও তারা জানিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র বিভাগ জানিয়েছে, তারা এই ঘটনায় গভীরভাবে উদ্বিগ্ন এবং সেখানকার পরিস্থিতি ঘনিষ্ঠভাবে নজরে রেখেছে।

তানজানিয়ার দার এস সালাম থেকে রওনা হয়ে ভারত মহাসাগরের উত্তরভাগ দিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাচ্ছিল জাহাজটি।

যোডিয়াকের তথ্য অনুযায়ী, ঘটনার সময় জাহাজটিতে কোন পণ্য ছিল না।

এর আগেও এই এলাকায় ইরান ও ইসরায়েলি মালিকানাধীন জাহাজে বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে। সেসব ঘটনায় জাহাজের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তবে হতাহতের ঘটনা বিরল।

ছায়া যুদ্ধ

বিবিসির নিরাপত্তা বিষয়ক সংবাদদাতা ফ্র্যাংক গার্ডনার বলছেন, ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে যে অঘোষিত ছায়া যুদ্ধ চলছে, সেটি আরও বেড়ে চলেছে বলেই মনে হচ্ছে।

গত কয়েক মাসে ইরান ও ইসরায়েলি মালিকানাধীন জাহাজে বেশ কয়েকবার হামলার ঘটনা ঘটেছে। উভয় দেশই একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে এবং উভয়েই তা নাকচও করেছে।

কিন্তু এই হামলায় উত্তেজনা বিশেষভাবে বাড়বে, কারণ এতে দুইজন মৃত্যু হয়েছে।

ইসরায়েলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী এই ঘটনার শক্ত জবাব দিতে আহবান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এটি নিয়ে তিনি ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডমিনিক রাবের সঙ্গে কথা বলছেন এবং জাতিসংঘেও বিষয়টি নিয়ে যেতে চান।

ইরানের একটি আরবি ভাষার টেলিভিশনের খবরে অজ্ঞাত সূত্রের বরাত দিয়ে বলা হয়েছে যে, সিরিয়ার একটি বিমানবন্দরে যে ইসরায়েলি হামলা হয়েছে, তার পাল্টা জবাব হিসাবে এই হামলা করা হয়েছে।

নাম প্রকাশ না করা একজন ইসরায়েলি কর্মকর্তা বলেছেন, ইসরায়েলের পক্ষে এই হামলার ঘটনা উপেক্ষা করে যাওয়া কঠিন হবে।

বিবিসি বাংলার অন্যান্য খবর:



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews