এই ধরনের যুদ্ধনীতিকে বলা হয় স্ট্র্যাটেজিক বোম্বিং বা স্যাচুরেশন বোম্বিং বা টেরর বোম্বিং। দুই বিশ্বযুদ্ধের মধ্যবর্তী সময়ে ইতালির জেনারেল জুলিও দৌহে এই কৌশলটি প্রথম প্রস্তাব করেছিলেন। কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এই নির্মম বোমা হামলাগুলোর সঙ্গে সবচেয়ে বেশি জড়িয়ে পড়েন দুইজন। একজন হলেন, ব্রিটিশ রয়্যাল এয়ার ফোর্সের বোম্বার কমান্ড প্রধান আর্থার ‘বম্বার’ হ্যারিস এবং অন্যজন হলেন, মার্কিন বিমানবাহিনীর জেনারেল কার্টিস এমারসন লে’মে।
জেনারেল লে’মে ১৯৪৪ থেকে ১৯৪৫ সালের মধ্যে জাপানের বহু শহর একেবারে ধ্বংস করে দেন এবং লক্ষাধিক বেসামরিক মানুষকে হত্যা করেন। পরে তিনি নিজেই বলেন, ‘যদি আমেরিকা এই যুদ্ধে হারত, তাহলে আমাকেই যুদ্ধাপরাধী হিসেবে বিচার করা হতো।’
এই ইতিহাসগুলো দেখায়, সাধারণ মানুষের ওপর হামলা করে তাদের মনোবল ভেঙে দেওয়ার এবং তাদের সরকারবিরোধী বানানোর পরিকল্পনা যতবারই নেওয়া হয়েছে, ততবারই তা ব্যর্থই হয়েছে। বরং এই ধরনের কৌশল বর্বরতা ও যুদ্ধাপরাধের নামেই বেশি পরিচিতি পেয়েছে।
কৌশলগত বোমাবর্ষণ বা পরিকল্পিতভাবে শহরের ওপর ব্যাপক বিমান হামলা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় বহু শহরকে ধ্বংস করে দিয়েছিল। ব্রিটিশ কমান্ডার আর্থার হ্যারিস অনেক ‘বোচ’ (জার্মানদের জন্য অবজ্ঞাসূচক একটি শব্দ) হত্যা করতে চেয়েছিলেন এবং তা তিনি অনেকাংশে করতে পেরেওছিলেন। কিন্তু এই কৌশল যতই ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হোক না কেন, তা কোনো সময়েই জনতার বিদ্রোহ ঘটাতে পারেনি। হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে পারমাণবিক বোমা ফেলার পর জাপানে আমরা কোনো সরকারবিরোধী গণ-আন্দোলন দেখিনি।