রাজধানীর কাঁচাবাজারে এক মুরগি ছাড়া বাকি প্রায় সব জিনিসপত্রের দাম চড়া; যেগুলোর কোনোটার বেড়েছে সপ্তাহের ব্যবধানে; কোনোটা আবার আগে থেকেই চড়া।
মুরগির দাম কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে ‘প্রচণ্ড গরমের’ কথা বলছেন ক্রেতা-বিক্রেতারা।
শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার, মোহাম্মদপুরের টাউন হল ও সাত মসজিদ কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির দাম কেজিতে প্রায় ১০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত কমেছে।
এসব বাজারে ব্রয়লারের কেজি ছিল ১৮০ টাকা, যা গেল সপ্তাহে ছিল ১৯০ টাকায়। আর সোনালি মুরগির কেজি বিক্রি ছিল ২৭০ টাকা। গেল সপ্তাহে এক কেজি কিনতে বেশি লেগেছে ৩০ টাকা।
দেশি মুরগির দাম অবশ্য খুব একটা কমেনি। আগের সপ্তাহের মতো ৬৫০ টাকা দরেই বিক্রি হয়েছে। ৫-১০ টাকা ছাড়া মিলছে দামাদামি করলে।
এদিন লাল লেয়ার মুরগির কেজি ছিল ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা। যা আগের সপ্তাহে ছিল ৩১০ টাকা পর্যন্ত।
টাউনহল বাজারের মুরগি বিক্রেতা আতাউর রহমান বলেন, “দুই দিন ধরে অনেক গরম। তাই মুরগির দাম কমেছে। এটা এমনই; দাম ওঠানামার মধ্যেই থাকে।”
টাউনহল বাজারে চাকরিজীবী হরিপদ সাহা শুক্রবার সকালে মুরগি কিনতে আসেন। তিনি বলেন, “মুরগির দাম কমেছে, কেজিতে আগের সপ্তাহ থেকে ১০ থেকে ২০ টাকা কমে পাওয়া যাচ্ছে।”
ডিম-সবজি চড়া
বাজারে টমেটো ছাড়া ৫০ টাকার নিচে কোনো সবজি নেই বললেই চলে। বেশির ভাগের দামই ৭০ থেকে শুরু। ১০০ টাকার বেশি দামের সবজিও আছে।
বাজারে পটল, ঢেড়শ ও পেঁপের কেজি ৫০ টাকার মধ্যে আছে। ধুন্দল, চিচিঙ্গা, করলার কেজি ৫০ থেকে ৭০ টাকা। বেগুনের কেজি ৭০ টাকাও আছে, ৮০ টাকাও আছে।
এছাড়া কচুর লতি ৮০ থেকে ১০০ টাকা, কচুরমুখী ১০০ থেকে ১২০ টাকা, বরবটি ৭০ থেকে ৮০ টাকা ও সজনে ১১০ থেকে ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে কাঁচামরিচের দাম কিছুটা বেড়েছে। শুক্রবার কেজিপ্রতি বিক্রি হয় ১০০ থেকে ১১০ টাকায়। আগের সপ্তাহে ৬০ থেকে ৮০ টাকা হলেই মিলেছে।
রাজধানীর বাজারে কিছু শীতকালীন সবজি এখনও আসছে। তবে দাম বেশ চড়া। শিমের কেজি গেল সপ্তাহের তুলনায় ২০ থেকে ৩০ টাকা বেড়ে হয়েছে ৮০ থেকে ৯০ টাকা। একেকটি আকৃতিভেদে ৫০ থেকে ৬০ টাকা; লাউয়ের ক্ষেত্রে লাগছে ৫০ থেকে ৮০ টাকা।
একেকটি চাল কুমড়া গত সপ্তাহের মত ৫০ থেকে ৬০ টাকার মধ্যে আছে। মিষ্টি কুমড়ার কেজি নেওয়া হয়েছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। হালিতে ১০ টাকা কমে কাঁচা কলা ঠেকেছে ৪০ টাকায়।
পাকা টমেটো ৩৫ থেকে ৪০, গাজর ৫০ টাকা, মুলা ৬০ টাকা ও শসা প্রকারভেদে ৬০ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে মিলছে।
লেবুর দাম আগের চেয়ে কমেছে। বাজারে লেবুর হালি ১০-২০ টাকা, ধনেপাতার কেজি ১৮০ টাকা ও কাঁচা আম ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে লাল শাক গেল সপ্তাহের তুলনায় কিছুটা কমে ১৫ টাকা আঁটি হয়েছে। আগের সপ্তাহে ছিল ২০ টাকা।
তাছাড়া লাউ শাকের আঁটি আগের সপ্তাহের মত ৪০ থেকে ৫০, পালং শাক ১৫, কলমি শাক ১৫, পুঁই শাক ৩০ থেকে ৪০ ও ডাটা শাকের আঁটি ১০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
বতুয়ার শাকের আঁটি ২০ টাকা, ঢেঁকি শাকের ৩০ থেকে ৪০ টাকা; কিছু দোকানে নাপা শাক মিলছে, বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ টাকায়।
পেঁয়াজ-রসুন মিলছে আগের দামেই
বাজারে আলু-পেঁয়াজসহ মসলাজাত পণ্যের বাজার স্থিতিশীল রয়েছে। বাজারে মাসখানেক ধরেই আলু ২০ থেকে ২৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া গত সপ্তাহের মতই দেশি পেঁয়াজ ৬০ টাকা ও ভারতীয় পেঁয়াজ (বড় আকারের) ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
আগের মতই আদা মানভেদে ১২০ থেকে ২৮০ টাকা, রসুন দেশি ১০০ থেকে ১২০ টাকা, ভারতীয় রসুন ২২০ থেকে ২৩০ টাকা, দেশি মসুর ডাল ১৪০ টাকা, ভারতীয় মসুর ডাল (মোটা দানা) ১২০ টাকা, মুগ ডাল ১৮০ টাকা, ছোলা ১০০ থেকে ১১০ টাকা ও খেসারির ডাল ১২৫ থেকে ১৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।