সিরাজগঞ্জের তাড়াশে প্রসিদ্ধ বিনসাড়া হাটের সরকারি জায়গার অবৈধ দখল নিয়ে ঘর তুলে বছরের পর বছর পরিত্যক্ত অবস্থায় ফেলে রেখেছেন স্থানীয়রা। জায়গার সংকটের জন্য ধানের হাট বসানো হয় রানীহাট আঞ্চলিক সড়কের ওপরেই। ব্যস্ততম সড়কে চরম ঝুঁকির মধ্যেই চলে ভোর থেকে দুপুর অবধি বেচাকেনা ও ট্রাকে ধান তোলার কাজ।
রোববার (৫ ফেব্রুয়ারি) সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, হাটের মূল জায়গাতে ৫০টির বেশি ঘর তোলা হয়েছে। ঘরগুলো কোনো কাজেই ব্যবহার করা হয় না। অধিকাংশই তালাবন্ধ করে ফেলে রাখা হয়েছে। সড়কের ওপর বিশৃঙ্খলভাবে ধান বেচাকেনার জন্য বাস, ট্রাকসহ অন্যান্য যানবাহন চলাচলে চরম বিগ্ন ঘটে চলেছে। হাটের সীমানার এ প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত থেমে থেমে যানজট লেগে যাচ্ছে। বাধ্য হয়ে দূরপাল্লার গাড়িগুলো থেমে রয়েছে।
ভুক্তভোগী ও বিনসাড়া গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা আজম আলী, আলমগীর হোসেন, দুলাল হোসেন ও আশরাফ উদ্দিন বলেন, বারুহাস ইউনিয়নের বিনসাড়া গ্রামের বিনসাড়া হাটে সপ্তাহে রোববার ও বুধবার উপজেলার সবথেকে বড় ধানের হাট বসে। কিন্তু হাটের বেশিরভাগ জায়গা বেদখলে রয়েছে। সেসব জায়গাতে নামমাত্র দোকানঘর তুলে ফেলে রেখেছেন লোকজন। উত্তরবঙ্গের একমাত্র প্রবেশদ্বার রাণীহাট আঞ্চলিক সড়কে হাট লাগার কারণে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বেড়ে গেছে বহুলাংশে। তাছাড়া যানজটে আটকে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
আকবর মিয়া নামের একজন ট্রাকচালক বলেন, আমি ঈশ্বরদী থেকে চাল নিয়ে বগুড়ার শেরপুরে যাব। কিন্তু যানজটে অনেক সময় ধরে আটকে রয়েছি।
মন্টু হোসেন নামে এক বাসচালক বলেন, রানীহাট আঞ্চলিক সড়ক হয়ে আমি সকাল সারে সাতটার দিকে বাস নিয়ে সিরাজগঞ্জ জেলা শহরে যাই। কিন্তু সপ্তাহের রোববার ও বুধবার বিনসাড়া ধানের হাটের জন্য যানজটে পড়ে সঠিক সময়ে পৌঁছাতে পারি না। বিশেষ করে এ কারণে অনেক যাত্রীসাধারণের গুরুত্বপূর্ণ কাজে দেরি হয়ে যায়।
তাড়াশ পৌর এলাকার আসানবাড়ী গ্রামের কাঁচামালের ব্যবসায়ী মিলন ও মুর্শিদ বলেন, 'হাটে দোকান নিয়ে বসার জায়গা না পাওয়ায় ভেতরের রাস্তার ওপর ও হাটের আশপাশের পতিত জমির মধ্যে দোকান বসাতে হয়। দূর-দূরান্তের অনেক ব্যবসায়ী হাটে বসার জায়গা না পেয়ে ফিরে যান।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে হাটের জায়গার অবৈধ দখলদাররা বলেন, সরকারি নির্দেশনা পেলে হাটের জায়গা মুক্ত করে দিতে তারা রাজি আছেন।
বিনসাড়া হাটের ইজারাদার সামছুল ইসলাম বলেন, হাটে বসার জায়গা না থাকায় দূরের অনেকে দোকানি আসেন না। বেচাকেনাও কমে গেছে। আগের তুলনায় সরকারের রাজস্ব অর্ধেকেরও কমে নেমে এসেছে।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ভারপ্রাপ্ত সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. মেজবাউল করিম ইত্তেফাককে বলেন, ইতোমধ্যে তাড়াশের সব হাট ও বাজারের সমস্যা চিহ্নত করা হয়েছে। সরকারি বিধি অনুযায়ী পর্যায়ক্রমে সমাধান করা হবে।