ফ্লোরিডার ‘কেপ ক্যানাভেরাল ইউএস স্পেস ফোর্স বেইজ’ থেকে উৎক্ষেপণ করা স্টারলাইনার ক্যাপসুলটি পৃথিবীতে অবতরণ করেছে বুধবার।

উৎক্ষেপণের এক সপ্তাহেরও কম সময় পর স্টারলাইনার-এর ‘সিএসটি-১০০’ ক্যাপসুলটি স্পেস স্টেশন থেকে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করে এবং প্যারাশুটের মাধ্যমে নিউ মেক্সিকো অঙ্গরাজ্যের ‘হোয়াইট স্যান্ডস স্পেইস হারবার’ মরুভূমিতে বুধবার সন্ধ্যায়, যুক্তরাষ্ট্রের পূর্বাঞ্চলীয় স্থানীয় সময় ৬.৪৯ মিনিটে অবতরণ করে বলে প্রতিবেদনে জানিয়েছে রয়টার্স।

ভূপৃষ্ঠের প্রায় ২৫০ মাইল উপরে থাকা স্পেস স্টেশন থেকে প্রায় পাঁচ ঘণ্টার এই ফেরত যাত্রা ছিল বোয়িংয়ের পরীক্ষামূলক অভিযানের সফল পুনরাবৃত্তি। ২০১৯ সালে প্রথম পরীক্ষামূলক অভিযান চালায় প্রতিষ্ঠানটি। তবে, সফটওয়্যার ত্রুটির কারণে সেই অভিযান ব্যর্থ হয়েছিল।

ব্যয়বহুল নির্মাণ ত্রুটি এবং বেশ কয়েকবার বিলম্বের পর স্টারলাইনারের সর্বশেষ এই পরীক্ষামূলক অভিযানটি সম্পন্ন হলো। এর ফলে মহাকাশ স্টেশনে নভোচারী বহনক্ষম যানের যে প্রতিশ্রুতি নাসাকে বোয়িং  দিয়েছে, সেই পথে আরও একধাপ এগিয়ে গেল বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ এই এয়ারলাইন নির্মাতা।

স্টারলাইনার ক্যাপসুলটি ‘অ্যাটলাস ভি’ রকেটের মাধ্যমে রওনা হয়েছিল ১৯ মে। ‘বোয়িং’ ও ‘লকহিড মার্টিন’-এর যৌথ প্রতিষ্ঠান ‘ইউনাইটেড লঞ্চ অ্যালায়ান্সের (ইউএলএ)’ নকশায় তৈরি হয়েছে রকেটটি। নির্মাণ ত্রুটির পরও অভিযানটি সফল হওয়ার কারণে প্রতিষ্ঠান দুটির মূল লক্ষ্য অর্জন করেছে।

মহাকাশ স্টেশনে যাওয়ার আগ মূহুর্তে থ্রাস্টার ত্রুটির পাশাপাশি স্টারলাইনার-এর তাপ-নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থায় ‘অস্বাভাবিক আচরণে’র কথা জানিয়েছিল বোয়িং। সেটিরও সমাধান করতে হয়েছে বোয়িং প্রকৌশলদের।

২০২০ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে মহাকাশে পুনরায় নভোচারী পাঠানো শুরুর পর নাসাকে এতোদিন নির্ভর করতে হত ইলন মাস্কের প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্সের ‘ফ্যালকন ৯’ রকেট এবং ‘ক্রু ড্রাগন’ ক্যাপসুলের উপর।

২০১১ সালে স্পেস শাটল প্রোগ্রাম সমাপ্তির পর কেবল রাশিয়ান সয়ুজ নভোযানের মাধ্যমে মহাকাশে নভোচারী পাঠাচ্ছিল নাসা।

নিজস্ব জেটলাইনার ব্যবসা ও স্পেস ডিফেন্স ইউনিটে প্রত্যাশা অনুযায়ী সাফল্য পায়নি বোয়িং। সেই বাস্তবতায় শিকাগো-ভিত্তিক নির্মাতার এই সাফল্য ‘অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ’ হিসেবে উঠে এসেছে প্রতিবেদনে। ২০১৯ সালের নির্মাণ ত্রুটির পর এক স্টারলাইনার পরিকল্পনার পেছনেই খরচ হয়েছে প্রায় ৬০ কোটি ডলার।

স্টারলাইনার আরও নয় মাস ভূমিতেই ছিল কারণ জ্বালানি নিয়ন্ত্রক কী কারণে বন্ধ ছিল এবং কোন প্রতিষ্ঠান সেটি ঠিক করবে, সেটি নিয়ে ‘বোয়িং’ ও ‘লকহিড মার্টিন’-এর মধ্যে দ্বিমত ছিল।

স্টারলাইনারের পরিচালন ব্যবস্থায় ক্রমাগত সমস্যা থাকায় গত গ্রীষ্মে দ্বিতীয়বারের মতো উৎক্ষেপণ পেছায় বোয়িং।

বুধবার শেষ হওয়া এই পরীক্ষামূলক অভিযানটি সফল হওয়ার কারণে আগামী বছর নাগাদ স্পেস স্টেশনে নিজেদের প্রথম নভোচারী অভিযান পরিচালনার দিকে একধাপ এগিয়ে গেল স্টারলাইনার। যদিও তার আগেই থ্রাস্টার ও তাপ-নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থায় ত্রুটির মতো বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করতে হবে প্রতিষ্ঠানটিকে।

বর্তমানে স্পেস স্টেশনে নাসার তিনজন, ‘ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি’র একজন ইতালীয় এবং রাশিয়ার তিনজন নভোচারী রয়েছেন। স্পেস স্টেশনে অবস্থানের সময় কয়েকজন নভোচারীর ক্যাপসুলে প্রবেশ করে ভেতরে থাকা কেবিনের অবস্থা পর্যাবেক্ষণ করার কথা প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে রয়টার্স।

সংশ্লিষ্ট খবর:

মহাকাশ স্টেশনে পৌঁছেছে বোয়িংয়ের ক্যাপসুল  



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews