ইউক্রেনে রাশিয়ার দখল করা অঞ্চলগুলোতে যে তথাকথিত গণভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে সেটির মাধ্যমে সেসব জায়গাকে রাশিয়া তাদের অংশ করে নিতে ব্যবহার করতে পারে। দখলকৃত অঞ্চলে মস্কো যেসব কর্মকর্তাদের বসিয়েছে, তারা দাবি করছে এই গণভোটে অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে প্রায় সবাই রাশিয়ার অংশে যেতে মত দিয়েছে। এই গণভোটকে ‘জালিয়াতি’ আখ্যা দিয়ে প্রত্যাখ্যান করেছে ইউক্রেন এবং তার মিত্র দেশগুলো। এই গণভোট আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি না পাওয়ার কারণে এর প্রক্রিয়া স্বাধীনভাবে পর্যবেক্ষণ করা হয়নি।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্র তার নাগরিকদের রাশিয়া ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে। ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চল দোনেত্স্ক ও লুহানস্ক এবং দক্ষিণাঞ্চলে জাপোরিঝয়া অঞ্চলে এই গণভোট আয়োজন করা হয়। গণভোট থেকে প্রাপ্ত আংশিক ফলাফলে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে যে ব্যাপক সংখ্যক মানুষ রাশিয়ায় যোগ দেওয়ার পক্ষে মত দিয়েছে। যুদ্ধ-বিধ্বস্ত এসব অঞ্চলে প্রায় ৪০ লাখ মানুষকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছিল। এ চারটি অঞ্চল ইউক্রেনের মোট ভূমির প্রায় ১৫ শতাংশ। দোনেত্স্ক এবং লুহানস্ক অঞ্চলে রুশপন্থি বিভিন্ন সংবাদ সংস্থা খবর দিচ্ছে যে ৯৯ দশমিক ২৩ শতাংশ মানুষ রাশিয়ায় যোগ দেওয়ার পক্ষে ভোট দিয়েছে। গণভোটের ক্ষেত্রে এ ধরনের ফলাফল বেশ অস্বাভাবিক।
ধারণা করা হচ্ছে, প্রেসিডেন্ট পুতিন কাল শুক্রবার রাশিয়ার পার্লামেন্টের এক যৌথ অধিবেশনে এ চারটি অঞ্চলকে রাশিয়ার অংশ করে নেওয়ার ঘোষণা দেবেন। ২০১৪ সালের মার্চ মাসে একই ধরনের একটি গণভোটের আয়োজন মাধ্যমে পুতিন ক্রিমিয়াকে রাশিয়ার অংশ করে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন। এদিকে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের বিচ্ছিন্নতাবাদী অধ্যুষিত লুহানস্ক প্রজাতন্ত্রের মস্কো সমর্থিত নেতা লিওনিদ পাশেশ্চিনিক টেলিগ্রামে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে অঞ্চলটিকে রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত করতে প্রেসিডেন্ট পুতিনকে অনুরোধ জানিয়েছেন।
যুদ্ধ ভিন্ন মাত্রায় পৌঁছানোর ঝুঁকি :রাশিয়া যদি এই চারটি অঞ্চলে নিজেদের অংশ করে নেয়, তখন যুদ্ধ আরেকটি ভিন্ন এবং বিপজ্জনক মাত্রায় পৌঁছে যাবে। কারণ এসব অঞ্চল ফিরে পেতে ইউক্রেন যখন যুদ্ধ করবে তখন সেটিকে রাশিয়া তাদের সার্বভৌম ভূমিতে হামলা হিসেবে বিবেচনা করবে। জোর করে চারটি অঞ্চল রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার চেষ্টাকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি জাতিসংঘ সনদের চরম লঙ্ঘন হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘দখল করা এলাকাগুলোতে এ ধরনের প্রহসনকে গণভোটের নকলও বলা যায় না।’ —বিবিসি