দীর্ঘ আন্দোলনের পর উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডন গেলেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। দেশে থাকলেও দীর্ঘদিন রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় থাকতে বাধ্য করা হয়েছিল সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে। রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় থাকলেও তাঁর উপস্থিতি নেতা-কর্মীদের মনোবল সব সময় চাঙা রাখত। এমন সময়ে খালেদা জিয়া বিদেশে অবস্থান করছেন যখন তাঁর দল দ্রুত নির্বাচনের দাবি করলেও সরকারঘনিষ্ঠ অনেকেই আগে সংস্কার পরে নির্বাচনের কথা বলছেন। দলের নেতা-কর্মীসহ জনমনে প্রশ্ন উঠছে খালেদা জিয়া চিকিৎসা শেষে স্বাভাবিকভাবে ফিরতে পারবেন কিনা। আবার অনেকে মনে করছেন, উন্নত চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে তিনি দেশে ফিরবেন। সঙ্গে আসবেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনিও দীর্ঘদিন দেশের বাইরে অবস্থান করতে বাধ্য হয়েছেন। এ অবস্থায় বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে দলে স্বস্তি ও উদ্বেগ দুটোই রয়েছে।

জানতে চাইলে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, পুরনো তিক্ত অভিজ্ঞতার কারণে মানুষ এমনটা চিন্তা করছে। কিন্তু ভীত হওয়ার কারণ নেই। তবে সতর্ক থাকতে হবে। তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়া অসুস্থ হওয়ায় এবং কারাগারে থাকার সময়েও রাজনৈতিক বিষয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলা যেত না। তখন হাজার মাইল দূর থেকে তারেক রহমানই এই দলকে সুসংগঠিত রেখে এগিয়ে নিয়ে গেছেন। এখনো সেভাবে দল এগিয়ে যাবে।

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল বলেন, ‘বিগত সরকারের সময় আমরা বারবার আবেদন করেছিলাম। আওয়ামী লীগ সরকার প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়ার বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেয়নি, চিকিৎসার ব্যবস্থাও করেনি। দেশের ১৬ কোটি মানুষের দোয়ায় আমাদের নেত্রী যেন সুস্থ হয়ে দেশে ফিরে আসেন, এটা আমাদের সবার প্রত্যাশা।’

বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু বলেন, ‘বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে অন্যায়ভাবে জেলে পাঠিয়ে নির্যাতন করেছিল। তাঁকে চিকিৎসার ব্যবস্থা তো করেইনি বরং তাঁকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছিল। ফ্যাসিস্ট করকারের বিদায়ের পর দেশনেত্রীর বিদেশে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা হয়েছে। এতে দেশবাসী স্বস্তি অনুভব করছে। আমরা প্রত্যাশা করছি আপসহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সুস্থ হয়ে দ্রুত দেশে ফিরবেন, ইনশাল্লাহ।’

বিএনপিসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পরও খালেদা জিয়া চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে যেতে চার মাস কেন সময় নিলেন, তা নিয়ে আছে নানা প্রশ্ন। তবে ২ জানুয়ারি রাতে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান সস্ত্রীক খালেদা জিয়াকে তাঁর গুলশানের বাসভবনে দেখতে গেলে তখনই বলা হয় যে খালেদা জিয়া দেশের বাইরে চিকিৎসার জন্য যাবেন। সে কারণেই সেনাপ্রধান খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করতে যান। সেনাপ্রধান ৪০ মিনিটের মতো সেখানে ছিলেন। 

তবে চিকিৎসার খোঁজখবর নেওয়া ছাড়া আর কিছুই তখন জানানো হয়নি বিএনপির পক্ষ থেকে। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া কবে ফিরবেন তা সুস্পষ্ট নয়। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান কবে নাগাদ দেশে ফিরতে পারবেন তা-ও এখনো অনিশ্চিত। কারণ মামলাগুলো চলছে ধীরগতিতে। 

তাঁরা বলছেন, ২০০৭ সালে সেনা-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা দেশে ফেরার সময় বাধাপ্রাপ্ত হয়েছিলেন। তখন রাজনীতিতে ‘মাইনাস টু’ ফর্মুলা আলোচনায় ছিল এবং দুই নেত্রীকে রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়াবার জন্য চাপ তৈরি করা হয়েছিল। এবারও খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে নিয়ে ‘মাইনাস টু’র বিষয়টিও আলোচনায় রয়েছে। 

তবে খালেদা জিয়া স্বাভাবিকভাবে ফিরতে পারবেন কি না, এমন নানা আলোচনা ডালপালা মেললেও এসবের কোনো ভিত্তি নেই বলেই মনে করেন বিএনপির দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা।

বিডি প্রতিদিন/কেএ



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews