যে কোনো খেলোয়াড় শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ অবস্থায় প্রতিযোগিতায় অংশ নেবেন, এটাই প্রত্যাশিত। কিন্তু এবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টি ২০ সিরিজ খেলার অব্যবহিত আগে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সদস্যরা অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। তারা এখন মোটামুটি সুস্থ হলেও তাদের অনেকের ট্রমা কাটেনি এখনো।
এক ভয়ংকর সমুদ্রযাত্রার ধকল সইতে গিয়েই তারা অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। ক্রিকেট দলের সদস্যদের নিয়ে যাওয়া হয়েছিল সেন্ট লুসিয়া থেকে ডমিনিকায় আটলান্টিক মহাসাগরের উপর দিয়ে। সেন্ট লুসিয়া থেকে ডমিনিকার দূরত্ব ১৭৩ কিলোমিটার। এই নাতিদীর্ঘ দূরত্ব সহজেই আকাশপথে অতিক্রম করা যেত।
কিন্তু সেই ব্যবস্থা না করে টাইগারদের তুলে দেওয়া হয়েছে ফেরিতে। যাত্রার দুদিন আগে ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জে সাইক্লোনের কারণে সমুদ্র ছিল উত্তাল। এ তথ্য জানার পরও টাইগারদের ঠেলে দেওয়া হয় সমুদ্রপথে। আর তাতেই টাইগাররা প্রত্যক্ষ করেন আটলান্টিকের ভয়ার্ত রূপ। উত্তাল ঢেউয়ের তোড়ে দুলছিল ফেরি। এতে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েন টাইগাররা।
তারা ভুগতে থাকেন মোশন সিকনেসে। ক্রিকেটারদের কেউ বমি করেন একাধিকবার, কেউ অসুস্থ হয়ে শুয়ে পড়েন ডেকে। অবস্থা চরমে ওঠে তখন, যখন ফেরিটি ডলফিল চ্যানেল অতিক্রম করছিল। এ যেন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়া। বড় বড় ঢেউয়ে ফেরি দুলছে আর ক্রিকেটাররা সময় কাটাচ্ছেন মৃত্যুভয়ে।
প্রশ্ন হচ্ছে, বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে আকাশপথে না পাঠিয়ে কেন উত্তাল সমুদ্রপথে পাঠানো হলো? এর দায় কি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) নেবে না? জানা গেছে, ক্রিকেটারদের সমুদ্রপথে ডমিনিকায় নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত ওয়েস্ট ইন্ডিজ কর্তৃপক্ষ নিয়ে থাকলেও এ সিদ্ধান্তে বিসিবির সম্মতি ছিল। বিসিবি খুব সহজেই এ সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করতে পারত। কিন্তু তা তারা করেননি। বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সদস্যরা এ দেশের গর্বিত সন্তান। তাদের সার্বিক দেখভাল করার কথা বিসিবির। এ দায়িত্ব পালনে সংস্থাটি ব্যর্থ হয়েছে।
এ ব্যর্থতার দায় নিতে হবে তাদের। বাংলাদেশ দলের এক ক্রিকেটার বলেছেন-আমি অনেক দেশ সফর করেছি, কিন্তু এ ধরনের অভিজ্ঞতা এই প্রথম। আমরা আশা করব, আগামী দিনগুলোয় বিসিবি বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি যত্নশীল হবে এবং যে কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ বা সিদ্ধান্তে সম্মতি দেওয়ার আগে বিচক্ষণতার পরিচয় দেবে।