দেশে নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গঠিত না হলে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও বিনিয়োগ আসবে না বলে মনে করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

তিনি বলেছেন, “আমরা স্বৈরাচারকে বিতাড়িত করেছি। কিন্তু এখনও নির্বাচিত সরকার হয়নি। বাংলাদেশের জনগণের কাছে জবাবদিহি কোনো সরকার হয়নি। যতক্ষণ সেটা না হবে, ততক্ষণ রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আসবে না। ততক্ষণ বিনিয়োগ হবে না। দেশের মধ্যেও হবে না, দেশের বাইরে থেকেও হবে না।”

দেশে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত বিনিয়োগ সম্মেলন ও অন্তর্বর্তী সরকারের বিনিয়োগ চেষ্টাকে ‘সার্কাসের’ সঙ্গে তুলনা করেন এ বিএনপি নেতা।

তিনি বলেন, “আমরা তো বিনিয়োগের অনেক সার্কাস দেখতে পাচ্ছি। দুঃখের সাথে বলছি আমি। বিনিয়োগের সার্কাস দেখছি না আমরা? কত সার্কাস দেখতেছি বিনিয়োগের। আমার কথাগুলো অনেক সময় কড়া কড়া, কঠিন হয়ে যায়। কী করব, না বলেও পারি না।

“যারা বিনিয়োগ বুঝে, তারা জানে। এই সার্কাসের মাধ্যমে বিনিয়োগ হবে না। বিনিয়োগ হতে হলে বাংলাদেশে নির্বাচিত, স্থিতিশীল সরকার হতে হবে। তখনই বিনিয়োগকারীরা আশ্বস্ত হয় এবং সেই সরকারের পলিসি দেখে, সেই সরকারের অ্যাটিচিউড দেখে বিনিয়োগ করেন।”

চট্টগ্রাম নগরীর কাজীর দেউড়িতে একটি কনভেনশন সেন্টারে শুক্রবার সন্ধ্যায় যুবদল, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের আয়োজনে ‘কর্মসংস্থান ও বহুমাত্রিক শিল্পায়ন নিয়ে তারুণ্যের ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনারে কথা বলছিলেন আমীর খসরু।

সাম্প্রতিক বিনিয়োগ সম্মেলন নিয়ে তিনি বলেন, “এখানে যে বিনিয়োগ সম্মেলন হয়েছে, আমরা ওদের (বিনিয়োগকারীরা) সাথে কথা বলেছি। সব কথার শেষ কথা ওরা কী জিজ্ঞেস করে জানেন? তোমাদের নির্বাচন কবে? এটা হল শেষ কথা। অর্থাৎ এক কথায় বুঝায় দিচ্ছে, ভাই নির্বাচন না হলে এখানে কোনো ইন্টেরিম কিংবা ‘ফ্লুইড সিচুয়েশন’, এই সিচুয়েশনে তো কেউ কমিটমেন্ট করবে না। সুতরাং এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

“বাংলাদেশ সকলের। আজকে যারা ক্ষমতায় আছে, যারা পালিয়ে গেছে তারা এবং বাংলাদেশের মানুষের। তো আমরা বাংলাদেশে বিনিয়োগ চাই। এজন্য আমরা অংশগ্রহণ করে বলেছি, যে তোমাদের চিন্তার কোনো কারণ নাই। আগামী দিনে যদি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল সরকারে আসে, এইটা হচ্ছে আমাদের বিনিয়োগের নীতিমালা।”

সেমিনারের প্রধান অতিথি খসরু বিনিয়োগকারীদের নিয়ে বলেন, “আমরা পরিষ্কার করে দিয়েছি এবং লিখিতভাবে দিয়েছি। বুলেট পয়েন্ট দিয়ে দিয়েছি। বক্তৃতা করে দিয়েছি। যাতে করে এই লোকগুলো বাংলাদেশে বিনিয়োগ করে। আমরা চাই বাংলাদেশে বিনিয়োগ হতে হবে। এজন্য বিএনপির অবস্থান আমরা পরিষ্কার করেছি।

“আমাদের আগামী দিনের রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক পরিকল্পনা কি, তারা যাতে আশ্বস্ত হয়, তারা যাতে তাদের প্রোগ্রামটা এখন থেকে শুরু করতে পারে। সরকার পরিবর্তন হওয়ার সাথে সাথে আমরা বিনিয়োগে যেতে চাই।”

দলের প্রতিশ্রতির কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “অনেকগুলো প্রমিসের মধ্যে আমরা একটা প্রমিস করেছি, ১৮ মাসে এক কোটি চাকরির ব্যবস্থা আমরা করব। এটা পলিটিক্যাল স্টেটমেন্ট না। আমরা সব হিসাব করে বলেছি। আমরা যে প্রোগ্রাম নিয়েছি তরুণসহ সকলকে নিয়ে আগামীর বাংলাদেশে সেটা বাস্তবায়ন করতে পারব। এজন্য একটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আমাদের সেই ব্যবস্থা করতে হবে।

“নতুন বন্দোবস্তের কথা শুনি সবসময়। নতুন বন্দোবস্তের জন্যই তো ৩১ দফা দেওয়া হয়েছে। ভিশন টোয়েন্টি থার্টি দেওয়া হয়েছে। তারপরও যদি কারও মাথায় না ঢুকে, কেউ যদি ঢুকাতে না চায়, কেউ যদি জেগে ঘুমাতে চায়, তাহলে তো কিছু করার নাই। আমরা ৩১ দফা বাস্তবায়ন করে নতুন বন্দোবস্ত বাংলাদেশে করব।”

দেশ ও দেশের বাইরের বিনিয়োগের জন্য রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার কথা বলেন খসরু। তার কথায়, “একটা দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা কখন হয়? আমাদের সংবিধান যেটা বলে, জনগণের সরাসরি ভোটে একটি নির্বাচিত সরকার থাকলে। যেই সরকার জনগণের কাছে জবাবদিহি, দায়বদ্ধ থাকে। জনগণের কাছে বারবার যেতে হয় নির্বাচিত হওয়ার জন্য। তখনই স্থিতিশীলতা থাকে। আজকে বাংলাদেশের সে অবস্থা আছে?”

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের উপদেষ্টা মাহদী আমিন, রাজনৈতিক বিশ্লেষক জাহেদ উর রহমান, বিএনপি চেয়ারপারসনের ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটির সদস্য ইসরাফিল খসরু সেমিনারে বক্তব্য দেন।



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews