কলম্বিয়ার পপ তারকা শাকিরা। তবে সম্পর্কসূত্রে গত এক দশকের বেশির ভাগ সময় কেটেছে স্পেনে। কারণ, স্প্যানিশ ফুটবলার জেরার্ড পিকের সঙ্গে তার সম্পর্ক। অবশ্য চলতি বছর সে সম্পর্কের সমাপ্তি ঘোষণা করেছেন তারা। এ বছরের শুরুতেই স্প্যানিশ ফুটবল তারকা জেরার্ড পিকের সঙ্গে বিচ্ছেদের পথে হাঁটেন পপ গায়িকা। দীর্ঘ ১২ বছর এক সঙ্গে থাকার পর এই সম্পর্কে ইতি টানেন তারকাযুগল। তাদের দুই সন্তান আছে এবং এই সন্তানরা কার কাছে থাকবে তা নিয়ে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি এখনও পর্যন্ত। সূত্র মারফত জানা যায়, বার্সেলোনার স্প্যানিশ তারকার অন্য মহিলার সঙ্গে সম্পর্কের জেরেই এই সম্পর্ক থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন গায়িকাা।
দুই তারকাই একটি যৌথ বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ‘দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি আমরা আলাদা হয়ে যাচ্ছি, এই মুহূর্তে সন্তানরাই আমাদের প্রাধান্য। আমাদের ব্যক্তিগত সময়কে সম্মান জানানো হোক।’ পিকের সঙ্গে বিচ্ছেদের পর পরই শাকিরার কর ফাঁকি দেয়ার অভিযোগ ওঠে। যদিও পপসঙ্গীত তারকার দাবি, সেই অভিযোগ মিথ্যা। বর্তমানে কর ফাঁকির অভিযোগে আইনী লড়াইয়ের মুখোমুখি তিনি। সংবাদ সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, ১১৫ কোটি টাকারও বেশি কর ফাঁকি দেয়ার অভিযোগ করা হয়েছে কলম্বিয়ার এই তারকার বিরুদ্ধে। এই অভিযোগ প্রমাণিত হলে শাকিরার আট বছরের জেল হতে পারে।
পাশাপাশি ২.৩৫ কোটি ডলারেরও বেশি জরিমানা দিতে হতে পারে তাকে। দীর্ঘ পাঁচ বছর পর গানের এ্যালবাম মুক্তির সময় তার বিরুদ্ধে যাবতীয় অভিযোগ নিয়ে মুখ খুললেন ‘পপ সম্রাজ্ঞী’। শাকিরার মতে কর ফাঁকির অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। তাকে অকারণে ফাঁসানো হয়েছে বলে দাবি তুললেন। এক প্রতিবেদন অনুসারে, এর আগেও আয়কর দফতর থেকে মিটমাট করে নেয়ার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিলেন শাকিরা। ২০১২ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে প্রায় ১২১ কোটিরও বেশি টাকার কর বাকি দেখানো হয়েছিল। স্পেনের গায়িকা জানিয়েছিলেন, তিনি সেই সময় দেশে ছিলেনই না! তাই কর দেয়ার প্রশ্নও ওঠে না। যদিও আদালতের নথি অনুসারে, শাকিরা সেই সময়সীমার মধ্যে স্পেনেরই নাগরিক ছিলেন।
কারণ তিনি ২০১২ সালে বার্সেলোনায় একটি বাড়ি কিনেছিলেন। সম্প্রতি এক পত্রিকার সঙ্গে সাক্ষাতকারে গায়িকা জানালেন, তার বিরুদ্ধে ভুয়া অভিযোগ আনার পর তিনি এবার ‘নীতিগতভাবে’ মামলায় লড়বেন। শাকিরার যুক্তি, কর দেয়ার মতো উপযুক্ত সময় তিনি দেশে কাটানইনি। বললেন, ‘বিশ্বজুড়ে আমার পেশাদার প্রতিশ্রুতি পূরণে ব্যস্ত ছিলাম...স্প্যানিশ সরকার আমার কাছে এক পয়সাও পায় না।’ গায়িকা জানান, তিনি শুরু থেকে স্বচ্ছভাবে কাজ করছেন। তার কাছে যথেষ্ট প্রমাণ আছে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করার। সেগুলো আদালতের সামনে পেশ করবেন। আরও বলেন, ‘মামলা দায়ের করার আগেই আমার যা যা কর বাকি ছিল, তা সবই মিটিয়ে দিয়েছি।’ স্পেনের সরকারী আইনজীবীর তরফে দাবি করা হয়েছে যে, বার্সেলোনার ফুটবলার জেরার্ড পিকের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ানোর পর ২০১১ সালে স্পেনে বসবাস শুরু করেন শাকিরা।
২০১২ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে স্পেনের সাধারণ নাগরিক ছিলেন শাকিরা। ২০১২ সালের মে মাসে বার্সেলোনায় বাড়ি কিনেছিলেন গায়িকা। শাকিরার তরফে দাবি করা হয়েছে, ২০১৫ সাল পর্যন্ত বাহামসের করদাতাদের তালিকায় ছিল তার নাম। তবে স্পেনের সরকারী আইনজীবীর তরফে শাকিরাকে কী চুক্তির প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল, তা জানা যায়নি। এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিনক্ষণও জানানো হয়নি।