ঢাকা: শ্রবণ ও বাক প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্তি ও প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করার অঙ্গীকারকে পুনর্ব্যক্ত করে সম্প্রতি আন্তর্জাতিক ইশারা ভাষা দিবস উদযাপন করেছে দেশের শীর্ষস্থানীয় মোবাইল অপারেটর গ্রামীণফোন।

গ্রামীণফোন এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, শ্রবণ ও বাক প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য আরও সহজলভ্য সেবা দেওয়ার লক্ষ্যে গ্রামীণফোন ‘সাইনলাইন’ সেবা দিয়ে আসছে।

এছাড়া অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে একটি বিশেষ সাইন ল্যাঙ্গুয়েজ প্লে-লিস্ট চালু করেছে গ্রামীণফোন। এখানে প্রতিদিনের কাজে ব্যবহৃত কিছু গুরুত্বপূর্ণ সাইন এবং সচরাচর জিজ্ঞাসিত টেলিযোগাযোগ সেবার টিউটোরিয়ালগুলো পাওয়া যায়। গ্রাহকরা মাইজিপি অ্যাপে সাইনলাইন লিঙ্কের মাধ্যমে সহজেই এই সেবা নিতে পারেন। এই উদ্যোগ সবার অন্তর্ভুক্তি এবং প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করতে গ্রামীণফোনের প্রতিশ্রুতিকে আরও দৃঢ় করেছে।

এই বছর আন্তর্জাতিক ইশারা ভাষা দিবস উপলক্ষে গ্রামীণফোন তাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে একটি আবেগঘন ভিডিও শেয়ার করেছে। এই ভিডিওটির মূল ভাবনা ছিল: সবার পৃথিবী না বুঝলে, পৃথিবী সবার হবে কিভাবে? ভিডিওতে মুক্তা নামের এক তরুণীকে দেখা যায়, যিনি একজন সাংকেতিক ভাষা বিশেষজ্ঞ। মুক্তা তার বাক প্রতিবন্ধী ভাই ইফতি, যিনি শিগগিরই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবেন এবং তার মতো আরও অনেকে যারা শ্রবণ ও বাক প্রতিবন্ধী তাদের জন্য একজন ব্যাখ্যাকার হিসেবে কাজ করেন। মুক্তার এই অভূতপূর্ব যাত্রা যোগাযোগের তাৎপর্য এবং অন্যকে বোঝার রূপান্তরকারী শক্তিকে তুলে ধরে।  

মুক্তা তার অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, যেহেতু আমার বাবা, মা ও ভাই- সবাই শ্রবণ ও বাক প্রতিবন্ধী তাই আমি শ্রবণ ও বাক প্রতিবন্ধী না হওয়া সত্ত্বেও সাংকেতিক ভাষা শিখেছি। আমি সাংকেতিক ভাষার ব্যাখ্যাকার হয়েছি, যাতে আমার ভাইয়ের মত অন্যদের যোগাযোগে ও সংযুক্ত থাকতে সহায়তা করতে পারি। এটি আমার কাছে অনেক বড় পাওয়া।

চলমান ‘ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তি’ প্রকল্পের মাধ্যমে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী ও বিশেষভাবে সক্ষম ব্যক্তিসহ প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে ডিজিটাল দক্ষতা প্রদানের লক্ষ্যে একসঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ ও গ্রামীণফোন। দুই বছরব্যাপী এই উদ্যোগে ডিজিটাল দক্ষতা এবং অনলাইন নিরাপত্তা নিয়ে কাস্টমাইজড প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে এসব গোষ্ঠীকে। এতে প্রান্তিক মানুষেরা গুরুত্বপূর্ণ ডিজিটাল সেবা, শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের সুযোগ পাচ্ছেন। এই প্রকল্পের মাধ্যমে ইতোমধ্যে ৩২ জেলায় ২১ লাখেরও বেশি মানুষকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে ৬৫ শতাংশই নারী। প্রশিক্ষণ, কমিউনিটি রেডিও এবং যুব-নেতৃত্বাধীন ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে গ্রামীণফোন এই জনগোষ্ঠীর অধিকারের পক্ষে কথা বলছে এবং ডিজিটাল অর্থনীতিতে তাদের সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে তাদের সামগ্রিক জীবনযাত্রার মানও উন্নত করছে। পাশাপাশি সুষ্ঠু পরিবেশ, সমাজ এবং সুশাসন (ইএসজি) নিশ্চিত করার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে কোম্পানিটি।

গ্রামীণফোনের চিফ মার্কেটিং অফিসার (সিএমও) মোহাম্মদ সাজ্জাদ হাসিব বলেন, গ্রামীণফোনে আমরা যা কিছু করি তার সব কিছুর কেন্দ্রে থাকেন গ্রাহক। আমাদের ৮.৫ কোটির বেশি গ্রাহকের মধ্যে শ্রবণ ও বাক প্রতিবন্ধীসহ বিভিন্ন ধরনের মানুষ রয়েছেন। ভাষার শক্তি যেমন অপরিহার্য, তেমনি ইশারা ভাষাকেও সমানভাবে গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন; যাতে আমরা একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গড়ে তুলতে পারি। আমাদের সেল্ফ সার্ভিস ডিজিটাল কেয়ার মাইজিপি অ্যাপে এবং ওয়েবসাইটে ‘সাইনলাইন’ সেবার অন্তর্ভুক্তি সেই প্রতিশ্রুতিরই একটি অংশ। এর মাধ্যমে আমরা বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিদের সেবা নিশ্চিত করতে চাই। আন্তর্জাতিক ইশারা ভাষা দিবস উপলক্ষ্যে ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তিতে আমাদের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করার পাশাপাশি আমরা আরও বেশি সংযুক্ত এক বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে সংকল্পবদ্ধ।

গ্রামীণফোনের চিফ কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স অফিসার (সিসিএও) হ্যান্স মার্টিন হেনরিক্সন বলেন, আমাদের প্রতিশ্রুতি শুধু অন্তর্ভুক্তির মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। আমরা ডিজিটাল দুনিয়ায় মানুষের ক্ষমতায়নে সংকল্পবদ্ধ। প্রান্তিক জনগোষ্ঠী যেন ভবিষ্যত উপযোগী দক্ষতা ও জ্ঞান অর্জন করতে পারেন এজন্য বিনিয়োগ করার মাধ্যমে আমরা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি যেন সবাই সমাজে অংশগ্রহণ করার সুযোগ পান। এই উদ্যোগটি আমাদের বিশ্বাসের প্রতিফলন যে, একসঙ্গে আমরা ভাষার বাধা দূর করতে পারি; আর সংযোগের সুবিধাগুলি সবার কাছে পৌঁছে দেওয়ার মাধ্যমে কাউকে পিছিয়ে না রেখে বৈষম্য কমাতে পারি।

বাংলাদেশ সময়: ১৮০৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ০১, ২০২৪
এমআইএইচ/এইচএ/



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews