জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধিতে দেশের সব শ্রেণি-পেশার মানুষের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। জ্বালানিসংশ্লিষ্টরা মনে করেন, গত ১২ বছরে সরকারের নেওয়া সবচেয়ে বড় নেতিবাচক সিদ্ধান্ত এটি। এমন একটি সিদ্ধান্ত, যা সরকারের অনেক সফলতাকে মলিন করে দিতে পারে। তারা বলছেন, এতে জীবনযাত্রার ব্যয় যেভাবে বাড়বে, তাতে সাধারণ মানুষের দিশেহারা হওয়ার বিকল্প থাকবে না। চার ধরনের জ্বালানি তেলের মধ্যে পেট্রোল ও অকটেন ব্যবহার করেন সাধারণত উচ্চমধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্ত তথা ধনিক শ্রেণির মানুষ। কেরোসিন ব্যবহার করে থাকেন নিম্ন-আয়ের মানুষ। আর ডিজেলের ব্যবহার হয় সর্বত্র, যা সব ধরনের পণ্য ও সেবায় উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলে। আজ সারা দেশের মানুষের মনে যে অসন্তোষের জন্ম হয়েছে, তা মূলত ডিজেলের অপ্রত্যাশিত দাম বৃদ্ধির কারণে। কৃষি, শিল্প, পরিবহণ-সর্বত্র ডিজেলের ব্যবহার এত বেশি যে, এর দাম বৃদ্ধিতে সামগ্রিক অর্থনীতিতে অতিরিক্ত মূল্যস্ফীতি সৃষ্টি হতে বাধ্য। এমনিতেই আমরা অসহনীয় মূল্যস্ফীতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছি, তার ওপর ডিজেলের উচ্চহারে দাম বৃদ্ধি মানুষের জীবনধারণকে চ্যালেঞ্জের মুখে ঠেলে দেবে।





প্রশ্ন উঠেছে, আন্তর্জাতিক বাজারের দোহাই দিয়ে দেশীয়ভাবে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি করা কতটা নিয়মতান্ত্রিক, কতটা যৌক্তিক? দাম বৃদ্ধি এড়িয়ে বিকল্প কোনো ব্যবস্থা নেওয়া যেত কি না? এতে কোন নাগরিকদের কত বড় অংশ নির্মম ভোগান্তির শিকার হবে এবং কোন ক্ষুদ্র অংশ লাভবান হবে? এ প্রশ্নগুলোর যথার্থ জবাব এ দেশের আমজনতার কাছে আছে, নেই কেবল সরকার পরিচালনাকারীদের হাতে। কারণ তারা সব ধরনের যুক্তির বাইরে গিয়ে নিরীহ সাধারণ মানুষের ওপর মূল্যস্ফীতির বোঝা চাপিয়ে দিয়েছে। কোনো জনবান্ধব সরকার কি এমনটি করার কথা ভাবতে পারে?

অভ্যন্তরীণ কিংবা আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির কারণে পণ্যের দামের ওঠানামা হয় এবং তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে পণ্যের সরবরাহ ও চাহিদার মধ্যকার সম্পর্ককে ঘিরে। কিন্তু জ্বালানি তেল, গ্যাস ও বিদ্যুতের ক্ষেত্রে দাম নির্ধারণ স্বয়ংক্রিয়ভাবে হয় না, হয় একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে। এ তিনটি পণ্যের দাম নির্ধারণ করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এ সংস্থাটি ২০০৩ সালের ১৩ মার্চ প্রতিষ্ঠা করা হয়। যদি গ্যাস, বিদ্যুৎ কিংবা জ্বালানি তেলের দাম পরিবর্তন করতে হয়, তাহলে রেওয়াজ অনুযায়ী স্ব-স্ব পরিচালন প্রতিষ্ঠান রেগুলেটরি কমিশনকে অবহিত করে থাকে। রেগুলেটরি কমিশন তখন দাম বৃদ্ধির যৌক্তিকতা তুলে ধরার লক্ষ্যে একটি গণশুনানির ব্যবস্থা করে। সেই গণশুনানিতে অংশগ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিশেষজ্ঞ, সুশীলসমাজের প্রতিনিধি, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বসহ বিভিন্ন পেশার প্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ জানানো হয়। কমিশন যুক্তিতর্ক শেষে একটি সিদ্ধান্তে উপনীত হয়ে থাকে। গণশুনানিতে সরকারের ইচ্ছারই প্রতিফলন ঘটে, তবে ইচ্ছার বিপক্ষেও কিছু যুক্তি উঠে আসে। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) গত ৫ আগস্টের জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির ঘোষণায় এ স্বাভাবিক রীতিটি মানা হয়নি। অনেকেই মনে করেন, বিপিসির আর্থিক অস্বচ্ছতার কারণে তারা শুনানির মুখোমুখি হওয়ার শক্তি-সাহস রাখে না।

দাম বাড়ানোর কারণ হিসাবে বলা হয়েছে আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বৃদ্ধির কথা। এমন বক্তব্য অমূলক। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের পর আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বৃদ্ধি পেয়েছিল সন্দেহ নেই। কিন্তু এখন তা পড়তির দিকে। গত সপ্তাহে আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ৯০ ডলারে নেমে এসেছে। সুতরাং আন্তর্জাতিক বাজারের দোহাই দেওয়াটা জনগণকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা মাত্র। বিপিসি একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান। জনগণের সেবাদানই তার অঙ্গীকার হওয়া বাঞ্ছনীয়। আমরা কোনোমতেই চাইব না, প্রতিষ্ঠানটি দিনের পর দিন লোকসান দিয়ে দেউলিয়া হয়ে যাক। পাশাপাশি এটাও চাই না যে, তারা জনগণকে দুর্ভোগে ফেলে হাজার হাজার কোটি টাকার মুনাফায় পকেটভর্তি করুক। বিপিসির পক্ষ থেকে ফলাও করে বলা হচ্ছে, আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বৃদ্ধির ফলে ফেব্রুয়ারি থেকে ৬ মাসে ৮ হাজার কোটি টাকা লোকসান গুনতে হয়েছে। এ কথা শুনে অনেক দুর্বিনীতের চোখেও জল এসে যাবে। কিন্তু এর আগের লাভের কথাটা শুনলে অনেকেই ক্ষুব্ধ হয়ে উঠবে। ২০১৪ সাল থেকেই বিপিসিকে লোকসানের মুখ দেখতে হচ্ছে না। কেননা আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমলেও অভ্যন্তরীণভাবে কমানো হয়নি। এর মধ্যে ২০১৭ সাল থেকে গত পাঁচ বছরের লাভের পরিসংখ্যান তুলে ধরছি। বিপিসির মুনাফার ওপর সরকারকে কর দিতে হয়। সেই কর পরিশোধ করার পরও ২০১৬-১৭ অর্থবছরে বিপিসির মুনাফার পরিমাণ ৮ হাজার ৪৪ কোটি টাকা; ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৬ হাজার ৫৩৩ কোটি; ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৩ হাজার ৯৮১ কোটি; ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৫ হাজার ৬৫ কোটি এবং সর্বশেষ ২০২০-২১ অর্থবছরে কর-পরবর্তী মুনাফা করেছে ৯ হাজার ৯৩ কোটি টাকা। এ পাঁচ বছরে বিপিসি মোট কর-পরবর্তী মুনাফা করেছে ৩২ হাজার ৭১৬ কোটি টাকা (অবশ্য ২০১৫ সাল ধরে অনেকেই মনে করেন, এ মুনাফার পরিমাণ হবে কমপক্ষে ৪৩ হাজার কোটি টাকা)। এর বাইরে সরকার বিপিসির কাছ থেকে নিয়েছে ১০ হাজার কোটি টাকা। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বেড়ে তো আবার কমতির দিকে। এ আপৎকালীন ৮ হাজার কোটি টাকার লোকসান প্রায় ৩৩ হাজার কোটি টাকার মুনাফা সামাল দিতে পারল না? যে সঞ্চয় বিপদে কাজে আসে না, সে সঞ্চয়ের উদ্দেশ্য কী? এটি একটি প্রাসঙ্গিক প্রশ্ন। তারপরও সরকারের উপর মহল থেকে বারবারই বলা হচ্ছে, বিপিসির তেল কেনার মতো টাকা নেই। বিপিসির টাকা কোথায় আছে, তাও জনগণ জানে। বাংলাদেশের পাঁচটি ব্যাংকে বিপিসির দীর্ঘমেয়াদি এফডিআর রয়েছে, যার মোট পরিমাণ ১৩ হাজার ৫৪৬ কোটি টাকা। অঙ্কটা দয়া করে মিলয়ে নিন। জনতা ব্যাংকে আছে ৪ হাজার ৯৯৫ কোটি; সোনালী ব্যাংকে ৩ হাজার ৪৭ কোটি; অগ্রণী ব্যাংকে ২ হাজার ২৮৮ কোটি এবং আইসিবি ইসলামিক ব্যাংকে দীর্ঘমেয়াদি এফডিআর করা আছে ৪৮১ কোটি টাকার। টাকার সন্ধান আরও আছে। দেশের ২১টি বেসরকারি ব্যাংকে স্বল্পমেয়াদি এফডিআর আছে ২ হাজার ৭৯৭ কোটি টাকার। সব ব্যাংকের নাম উল্লেখ না করেই বলতে পারি, সরকারের উপর মহল থেকে জামায়াতবিরোধিতার কথা শোনা গেলেও ইসলামী ব্যাংকে বিপিসির স্বল্পমেয়াদি এফডিআর রয়েছে ১০১ কোটি টাকার। এছাড়া বিভিন্ন ব্যাংকে নগদ তেল বিক্রির অর্থ ছিল ১৫ হাজার ৮২২ কোটি টাকা। সব মিলে গত বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত বিভিন্ন ব্যাংকে বিভিন্ন হিসাবে বিপিসির জমাকৃত অর্থের পরিমাণ ছিল ৩২ হাজার ১৬৪ কোটি টাকা। তারপরও জনগণের ওপর কেন ভোগান্তির এ বাড়তি চাপ? এর কোনো জবাব পাওয়া যাবে না।

এবার আসুন দাম নির্ধারণের প্রসঙ্গে। আন্তর্জাতিক বাজারের দোহাই দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজারে এক ব্যারেল অপরিশোধিত তেলের দাম ৯০ ডলার। এ মুহূর্তে ডলারের দাম বাংলাদেশ ব্যাংক নির্ধারিত ৯৬ টাকা হলেও বিপিসির সুবিধার্থে আমরা তা বাড়িয়ে ১০০ টাকা ধরে নিলাম। তাহলে ১ ব্যারেল তেলের দাম হয় ৯ হাজার টাকা। ১ ব্যারেল সমান হলো ১৫৯ লিটার। তাহলে অপরিশোধিত তেলের আন্তর্জাতিক দাম দাঁড়ায় লিটারপ্রতি ৫৬ টাকা ৬০ পয়সা। এর সঙ্গে পরিবহণ খরচ যুক্ত হবে সর্বোচ্চ ৫ টাকা। অপরিশোধিত তেল বাংলাদেশের ইস্টার্ন রিফাইনারিতে পরিশোধন করতে ব্যয় হয় ১ লাখ টনে ১২ কোটি টাকা, অর্থাৎ লিটারপ্রতি ১ টাকা ২০ পয়সা। এর মানে হলো, বিদেশ থেকে অপরিশোধিত তেল বাংলাদেশে এনে পরিশোধন শেষে খরচ দাঁড়ায় ৬২ টাকা ৮০ পয়সা। সরকার যদি কোনো শুল্ক না নিত, তাহলে সেই তেল ৬৩ টাকায় বিক্রি করলেই লিটারপ্রতি বিপিসি লাভ করতে পারত ২০ পয়সা। কিন্তু সরকার এ দুরবস্থার মধ্যেও জনগণকে ছাড় দেবে না। সে তার পাওনা ৩২ শতাংশ নেবেই। সেক্ষেত্রে সরকারের কোষাগারে জমা দিতে হবে ২০ টাকা। তাহলে বিপিসির মোট খরচ দাঁড়ায় ৮২ টাকা ৮০ পয়সা। কিন্তু বিপিসি ডিজেলের দাম নির্ধারণ করেছে লিটারপ্রতি ১১৪ টাকা। এ বাড়তি ৩১ টাকা ২০ পয়সা বিপিসির মুনাফা, যা জনগণের কোনো কল্যাণে আসবে না, কেননা অতীতের মুনাফাগুলো কাজে আসেনি।

ডিজেলের সঙ্গে যেহেতু পরিবহণের সরাসরি সম্পৃক্ততা আছে, তাই ভাড়া সমন্বয় করা প্রয়োজন। এক্ষেত্রে একদিকে রয়েছে সরকারের উদাসীনতা, অন্যদিকে মালিকপক্ষের সুবিধার ক্ষেত্রে অসহায়ত্ব। উদাসীনতা এ কারণে বলব, ভাড়া বৃদ্ধির ঘোষণা দেওয়া হয়েছে ৫ আগস্ট, যা ৬ আগস্ট জিরো আওয়ার থেকে কার্যকর। আর ভাড়া সমন্বয় করার জন্য পরিবহণ মালিকদের সঙ্গে আলোচনায় বসা হয়েছে ঘোষণার পরের দিন। সাধারণ যাত্রীরা দুর্ভোগের শিকার হয়েছেন। কেন, ৩ বা ৪ আগস্ট বসলে ক্ষতি কী ছিল? এর কোনো জবাব নেই। এ উদাসীনতার পাশাপাশি রয়েছে পরিবহণ মালিকদের স্বার্থরক্ষার বিষয়টি। কিলোমিটারপ্রতি ভাড়া বাড়ানো হয়েছে ৪০ পয়সা। যাত্রী পরিবহণের কথাই যদি ধরি, আগের ভাড়া ছিল কিলোমিটারপ্রতি ১ টাকা ৮০ পয়সা। ভাড়া নির্ধারণ করা হয় পরিবহণ ব্যয়ের ওপর নির্ভর করে। মালিকের মুনাফা বাদ দিলে কিলোমিটারপ্রতি খরচ বা ব্যয় ১ টাকা ৫০ পয়সার বেশি নয়। জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধিতে শুধু তেলের ব্যয় বৃদ্ধি পাবে, আনুষঙ্গিক খরচ যেমন-স্টাফ ব্যয়, টায়ারসহ সরঞ্জমাদির ব্যয়, কাউন্টার ব্যয়, ঋণকৃত পুঁজির সুদ, সড়কপথের টোল প্রভৃতি ব্যয় অপরিবর্তিত থাকবে। সেক্ষেত্রে জ্বালানি তেলের ব্যয় হলো মোট ব্যয়ের ৪০ শতাংশ। জ্বালানি তেলের দাম বেড়েছে ৪২ শতাংশ। তাহলে ৪০ শতাংশ জ্বালানি তেলের ৪২ শতাংশ হলো ২৫ পয়সা। কিন্তু সরকার ও মালিকপক্ষ নির্ধারণ করেছে ৪০ পয়সা। এখানেই মালিকপক্ষ তেলের বাড়তি দামের চেয়ে কিলোমিটারপ্রতি প্রতি যাত্রী থেকে ১৫ পয়সা বেশি আদায় করবে।

সব মিলে দেখা যাচ্ছে, তেলের অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধির ফলে লাভবান হবে সরকার, বিপিসি ও পরিবহণ মালিকরা। বাদবাকি ১৮ কোটি মানুষ পড়বেন নির্মম ভোগান্তিতে। তারপরও তেলের দাম বৃদ্ধির পক্ষে উপর মহলের কিছু কিছু যুক্তি রীতিমতো হাস্যকর। প্রথমটি হলো, তেলের দাম কম থাকলে তা নাকি ভারতে পাচার হয়ে যায়। সেক্ষেত্রে প্রশ্ন হলো, হাজার কোটি টাকা ব্যয় করে আমরা যে সীমান্তরক্ষী বাহিনী মোতায়েন করেছি, তারা কি অদক্ষ বা অসৎ? এমন নেতিবাচক ধারণা আমাদের সীমান্তরক্ষী বাহিনী সম্পর্কে দেওয়া কি সঠিক? আমরা তা মনে করি না। এ ধরনের মনগড়া যুক্তি একটি বাহিনীর সম্মানকে মলিন করে দিতে পারে। দ্বিতীয় যুক্তির প্রচারণা দেখলাম মিডিয়াগুলোয়। তারা বিভিন্ন দেশের তেলের দামের সঙ্গে বাংলাদেশের তুলনা করেছেন। এটি একেবারেই অসম তুলনা। এ স্বল্প পরিসরে মাত্র একটি দেশের কথা আলোচনায় আনতে চাই। বলা হচ্ছে, আমেরিকায় ডিজেল বিক্রি হচ্ছে লিটাপ্রতি ১২৮ টাকায়, অর্থাৎ বাংলাদেশের তুলনায় ১৪ টাকা বেশি। কিন্তু আমেরিকার মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কত? আমেরিকার মাথাপিছু আয় প্রায় ৬৯ হাজার ডলার, বিপরীতে বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু আয় মাত্র ২ হাজার ৫০৩ ডলার। আরও সহজ করা যায়। আমেরিকার ফেডারেল গভর্নমেন্ট ঘণ্টাপ্রতি ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ করেছে ৭ দশমিক ২৫ ডলার। কিন্তু আমেরিকার গড় মজুরি ঘণ্টাপ্রতি ২৯ ডলার। আমাদের দেশের ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ করা হয়েছে মাসে ৮ হাজার ২০০ টাকা। তারপরও আমাদের গড় মজুরি ঘণ্টাপ্রতি ১৫০ টাকা। ১ ডলার সমান ১০০ টাকা হলে আমাদের ঘণ্টাপ্রতি গড় মজুরি মাত্র ১ দশমিক ৫ ডলার। বাংলাদেশের এ দেড় ডলার ক্রয়ক্ষমতার সঙ্গে আমেরিকার ২৯ ডলার ক্রয়ক্ষমতার তুলনা চলে? আমাদের দলকানাদের বিবেকের পাশাপাশি বুদ্ধিটাও লোপ পেয়েছে।

ডিজেল ও ইউরিয়া সারের দাম বৃদ্ধিতে প্রতি বিঘা আমন ধানের উৎপাদন খরচ বাড়বে প্রায় ১ হাজার টাকা। আমাদের ক্ষুদ্র কৃষকরা সাধারণ সময়ই অপ্রাতিষ্ঠানিক ঋণ নিয়ে উৎপাদন খরচ মেটায়, পায় না ন্যায্য দাম। এর ওপর খরচের বাড়তি চাপ কাঙ্ক্ষিত উৎপাদনকে ব্যাহত করবে।

তেলের দাম বৃদ্ধি কোনোক্রমেই বিবেচনাপ্রসূত সিদ্ধান্ত নয়। তাই দেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠীকে খানিকটা স্বস্তি দিতে তেলের দাম পুনর্নির্ধারণের বিষয়টি বিবেচনা করার জন্য মিনতি করছি।

মুঈদ রহমান : অধ্যাপক, অর্থনীতি বিভাগ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews