ফেনী ছাগলনাইয়ায় সোমবার সন্ধ্যায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অভিযানকালে কর্মকর্তাদের হুমকি-ধমকিতে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ এক বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে।
নিহতের স্বামী মাদক মামলায় কারবারের অভিযোগে আটক হয়ে জেল হাজতে রয়েছেন।
জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আবদুল হামিদ জাফর আহাম্মদ নিহত বৃদ্ধার বাড়িতে অভিযানের কথা স্বীকার করলেও হুমকির কথা অস্বীকার করেছেন।
নিহতের স্বজন ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, সোমবার সন্ধ্যায় জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ আবদুল হামিদের নেতৃত্বে ছাগলনাইয়া পৌরসভার নদীর কুল বাঁশপাড়া গ্রামের বড় বাড়ির বাসিন্দা মাদক কারবারি জাফর আহমদ মিন্টুর বাড়িতে অকারণে অভিযান চালায়। এ সময় মিন্টুর দুটি ঘর তল্লাশির নামে লণ্ডভণ্ড করা হয়।
অভিযানের কারণ জিজ্ঞাসাবাদের সময় ঘরের সামনে বসে থাকা মিন্টুর স্ত্রী পারুল বেগমকে (৬০) হুমকি ধমকি দিতে থাকেন কর্মকর্তারা। এতে হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে ঢলে পড়েন। তখন অভিযানকারীরা তার মাথায় পানি ঢালার পরামর্শ দিয়ে স্থান দ্রুত স্থান ত্যাগ করেন।
স্বজনরা তাকে দ্রুত ছাগলনাইয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ইসিজি করার পরামর্শ দেন। পরে ছাগলনাইয়া সিটি ডিজিটাল ল্যাব ও তারেক মেমোরিয়াল-ইব্রাহীম জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
তারেক মেমোরিয়াল-ইব্রাহীম জেনারেল হাসপাতালের ডা. এমএম মমতাজুল হক জানান, আমাদের হাসপাতালে নিয়ে আসার অন্তত এক ঘণ্টা আগেই বৃদ্ধা মৃত্যুবরণ করেন।
পারুল বেগমের ছেলে আরিফ হোসেন ডালিমের অভিযোগ, সোমবার জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের লোকজন আমাদের বাড়িতে আসেন। এসময় তারা আমার মাকে হুমকি-ধমকি দিয়ে বলেন - তোমার স্বামীর বিরুদ্ধে মাদক মামলা রয়েছে সে কোথায়? এছাড়া ছেলের বিরুদ্ধেও মাদকের সম্পৃক্ততার অভিযোগ রয়েছে সে কোথায় আছে। তাকে না পেলে তোমাকে গ্রেফতার করা হবে বলে হুমকি দিলে ভয়ে মা হার্ট অ্যাটাক করেন।
ডালিম জানায়, আমার বাবা জাফর আহাম্মদ মাদক মামলায় বর্তমানে জেল হাজতে রয়েছেন। অথচ তারা আমার বাবাকে খোঁজ করতে বাড়িতে আসেন।
এ বিষয়ে জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আবদুল হামিদ জানান, জাফর আহাম্মদ মিন্টুর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে আমরা এর আগে মাদক উদ্ধার করি। মামলায় সে গ্রেফতার হন। বিষয়টি আমাদের জানা ছিল না। অভিযানে তার স্ত্রী পারুল বেগমকে আমরা কোনো ধমক দিইনি। তিনি ঘরের সামনে একটি চেয়ারে বসা ছিলেন। আমাদের সামনেই তিনি চেয়ার থেকে পড়ে যান। পরে রাত্রে তার মৃত্যুর সংবাদ পাই।