রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার কান্দ্রা গ্রামের দরিদ্র কৃষক আলিমুদ্দিন। বড় শখ করে একটি ষাঁড় পুষেছেন তিনি। শান্তশিষ্ট বলে আদর করে নাম দিয়েছেন ‘শান্ত বাবু’। কিন্তু কোরবানির ঈদের বাজারে ২২ মণ ওজনের গরুটির কোনো ক্রেতা মেলেনি। প্রতিদিন গরুটিকে খাবার জোগাতে হাজার টাকা খরচ হয়ে যায়। আলিমুদ্দিনের আশা ছিল, ঈদে ষাঁড়টি বিক্রি করবেন। কিন্তু করোনা ও বন্যার কারণে এবার বাজার মন্দা ছিল। গরুটিকে বিক্রিই করতে পারলেন না। কৃষিকাজ ও দিনমজুরি করে পরিবারের ছয় সদস্যের মুখে খাবার তুলে দিতেই হিমশিম অবস্থা। এখন গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে ষাঁড়টি। আলিমুদ্দিন বলেন, ‘আবাদি জমিটা বন্ধক রেখে, খেয়ে না খেয়ে হলেও আমার ভালোবাসার ধনকে আমি পুষব।’
প্রথম আলোর প্রতিবেদনে উঠে আসে আলিমুদ্দিনের এ করুণ গল্প। গত দেড় বছরে করোনা মহামারি, টানা লকডাউন, বন্যা ও নদীভাঙনের শিকার হয়ে বিপর্যস্ত আলিমুদ্দিনের মতো দেশের লাখ লাখ কৃষক ও খামারি। কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে বুকে আশা বেঁধেছিলেন তাঁরা। সে আশারও গুড়ে বালি। গত ৫ বছরে সর্বনিম্ন পশু কোরবানি হয়েছে এবারের ঈদে। করোনা সংক্রমণের আগে প্রতিবছর পশু কোরবানির পরিমাণ বাড়ছিল। ফলে গ্রামে গ্রামে আলিমুদ্দিনের মতো অনেক খেটে খাওয়া মানুষ পশু পালনের দিকে ঝুঁকছিলেন। ঋণ নিয়ে বা জমি বন্ধক রেখে গরু কেনা থেকে শুরু করে পেলেপুষতে যাবতীয় খরচ মিটিয়েছেন। কিন্তু এক মহামারি এসে তাঁদের অকূল সাগরে ফেলে দিল।