বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫১ বছর পূর্ণ হতে চলেছে। স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে ৫১ বছরের পথচলা সামান্য নয়। দীর্ঘ পাঁচ দশকের মাইলফলকে বীমা সেক্টরের প্রাপ্তিও অনেক। দীর্ঘ পরিক্রমায় আমরা অর্থনৈতিকভাবে বেশ সফল হয়েছি। আজ আমরা স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বিশ্বে পরিচিতি পেয়েছি। বীমা সেক্টরে আমরা একটি সুদূরপ্রসারী সঠিক দিকনির্দেশনামূলক বীমা নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষও পেয়েছি। ১ মার্চ পেয়েছি জাতীয় বীমা দিবস, যেটা অর্থনীতির অন্যান্য সেক্টরে নেই। এটাও আমাদের জন্য একটি বিশাল পাওয়া। বীমা নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে এ সেক্টর ক্রমান্বয়ে উন্নতির ধারা অব্যাহত রেখে চলেছে।
একটি সময় ছিল; মানুষ বীমার প্রতি বিরূপ ধারণা পোষণ করত। আজ তা অনেকটাই পরিবর্তনের পথে। এখন মানুষ নিজের প্রয়োজনেই বীমা করে। এ খাতের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)। তারা যেভাবে কার্যক্রম চালাচ্ছে, তা ভবিষ্যতে অব্যাহত থাকলে এ সেক্টর দেশের জিডিপিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আমাদের বিশ্বাস। প্রত্যাশার ক্ষেত্রে বলতে হয়, জিডিপিতে আমাদের যে অবস্থান সেটা কিন্তু খুবই সামান্য। জিডিপিতে আমাদের বীমা খাত যখন একটি শক্ত অবস্থানে যাবে, তখন হয়তো এই প্রত্যাশাও একটি প্রাপ্তির খাতায় যোগ হবে।

এ ছাড়া এখনও বীমা সেক্টরে কিছু অস্বাস্থ্যকর প্রতিযোগিতা রয়েছে। তা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসা উচিত। এটার জন্যও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের পদক্ষেপ আজ সময়ের দাবি। যার মাধ্যমে আমরা এই অস্বাস্থ্যকর প্রতিযোগিতা থেকে পরিত্রাণ পেতে পারি। এ অস্বাস্থ্যকর প্রতিযোগিতা থেকে বেরিয়ে আসতে হলে বেসরকারি বীমা খাতকে নন-ট্যারিফ মার্কেটে আসা উচিত। আমরা প্রত্যেকে আমাদের যোগ্যতা অনুযায়ী ব্যবসা করব। সাধারণ বীমা শতভাগ রি-ইন্স্যুরেন্স করুক। সরকারি যে ব্যবসা আছে সেটা সাধারণ বীমা করুক। সরকারি ব্যবসার যে অর্ধেক বেসরকারি খাতে দেওয়া হয়, তাও দেওয়ার কোনো দরকার নেই।

সাধারণ বীমার সঙ্গে আমাদের যে বাধ্যবাধ্যকতা রয়েছে, তা আরও সহজ করা প্রয়োজন, সাধারণ বীমা থেকে রিকভারি নিয়ে যাতে আমরা আমাদের গ্রাহককে সেবা দিতে পারি। এখন আমাদের বিদেশে রি-ইন্স্যুরেন্স করার সুবিধা হলো অর্ধশতাংশ। এখানেও একটা টার্গেট মার্ক রয়েছে যেটা অগ্নিতে ৪০০ কোটি, নৌ-কার্গো ১০০ কোটি, নৌ-হাল ৩০ কোটি এবং বিবিধ ২০ কোটি টাকার ওপরে গেলে (একক ঝুঁকিতে) আমি বিদেশ থেকে রেট আনতে পারব। নন-ট্যারিফ মার্কেট হলে আমি যে কোনো পরিমাণ টাকার ওপর মার্কেট থেকে রেট আনতে পারব। ট্যারিফ না থাকলে অসুস্থ প্রতিযোগিতাও কমে আসবে। মুক্তবাজার অর্থনীতিতে নন-লাইফ বীমা কোম্পানিকে ট্যারিফ দ্বারা আবদ্ধ না করা প্রয়োজন। এতে বীমা গ্রাহকরা স্বল্প প্রিমিয়াম হারে বিশ্ববাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য বজায় রেখে বীমা সেবা গ্রহণ করতে পারবে।
এ ছাড়া আমাদের প্রিমিয়াম জমার যে নিয়ম আছে, সেটাকে বাড়িয়ে এক মাসের গ্রেস সময় করে দিতে হবে। কারণ আমাদের গ্রাহকদের সুবিধা দিতে হবে। এক মাসের সময় দেওয়ার পরও যদি কেউ প্রিমিয়াম জমা না দেয় তাহলে তাকে জরিমানা হিসেবে পরবর্তী কার্যদিবসের জন্য চার্জ ধার্য করা যেতে পারে। এ দুটি বিষয় নন-ট্যারিফ মার্কেট ও প্রিমিয়াম জমার এক মাসের গ্রেস টাইম যদি দেওয়া হয়; বীমা সেক্টর একটি সুশৃঙ্খল অবস্থায় চলে আসবে। এটা করতে পারলে একটা সময় বীমা সেক্টর জিডিপিতে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সব সেক্টরে পরিবর্তন আনা হচ্ছে; ঢেলে সাজানো হচ্ছে। বীমা খাত নিয়েও ভাবতে হবে। এ খাতকে আরও ঢেলে সাজাতে পারলে জিডিপিতে বড় ভূমিকা রাখতে পারবে। এটা মুক্তবাজার অর্থনীতির যুগ। এখানে অর্থনীতিতে অবদান রাখতে পারে এমন সব খাতকেই গুরুত্ব দিতে হবে। সে ক্ষেত্রে বীমা খাতকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিবেচনায় আনা উচিত।
আহমেদ সাইফুদ্দীন চৌধুরী: মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা, বাংলাদেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লি.





Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews