একুশে পদকপ্রাপ্ত ও চিরসবুজ খ্যাত অভিনেতা আফজাল হোসেন তাঁর ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছেন, যেখানে অভিনেতা বলেছেন- ছোট্ট আছিয়া সামান্য কয়দিনের দুনিয়াদারি করতে এসে বুঝে গেল, এটা নরক। ভালো করেই জেনে গেছে, মানুষ নামের মানুষে জগৎ সয়লাব- আসল মানুষ তেমন নেই। আছিয়ার শোকে দেশবাসী শোকে মুহ্যমান। শোক ছুঁয়ে গেছে অভিনেতা আফজাল হোসেনকেও।
তিনি লেখেন- স্বয়ং সৃষ্টিকর্তা আরও এক দফা বুঝিয়ে দিলেন, শ্রেষ্ঠত্ব নিয়ে সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ মানুষের কৃতজ্ঞতা বা গৌরববোধ নেই- তার বদলে নানা প্রকারে মানুষ প্রমাণ দিতে চায়, কতটা নিকৃষ্ট তারা হতে পারে। অভিনেতার কথায়, চলে গেল আছিয়া। জীবিতকালে তাকে সম্মান দেখাতে না পারি, মৃত্যুর পর অনেকটাই বোঝাতে পেরেছি, সম্মান দেখানোয় আমরা কতটা দক্ষ, আন্তরিক। দুঃখজনক হচ্ছে- দক্ষতা, আন্তরিকতা প্রকাশ করতে আমাদের কোনো না কোনো উপলক্ষের প্রয়োজন হয়। তিনি যোগ করেন, নিপীড়ন, অত্যাচার, অবমাননায় কারও মৃত্যু হলে তখনই সে জীবন সম্মান, মর্যাদাপ্রাপ্তির উপযুক্ত হয়ে ওঠে। তখনই কেবল সে জীবনের প্রতি সংবেদনশীলতা প্রদর্শনের তাগিদ অনুভব করি। আমরা এই মানুষ পরিচয়ের প্রাণীরা অসভ্যতা, বর্বরতায় খুব একটা বিব্রত, পীড়িত, অসম্মানিতবোধ করি না।
তাঁর কথায়- কোনো লজ্জা, ঘৃণা বা অতিরিক্ত বেদনার ঘটনা কেউ বেশি দিন মনে রাখে না। আছিয়াকেও মনে থাকবে না কারও কিন্তু নিজের জীবনের বদলে মানুষ ও সমাজের কুৎসিত রূপ সে খুব বড়, স্পষ্ট করে দেখিয়ে দিয়ে গেল। বুঝিয়ে দিয়ে গেল, তার জন্ম হয়তো সাধারণ ঘটনা ছিল; কিন্তু ছোট্ট সে জীবন মানুষের দায়িত্ব কর্তব্যে নয়, নিষ্ঠুরতা। সবশেষে লিখেছেন- নিকৃষ্ট ও শ্রেষ্ঠত্বের মাঝখানে ভেদ যে বিশেষ নেই, তা কি বোধগম্য হয়েছে আমাদের? হবে কোনো দিনও?