জুলাই অভ্যুত্থান সফলতার পেছনে সাধারণ ছাত্রজনতার পাশাপাশি কওমি মাদরাসার ছাত্র-শিক্ষকদের অবদানও ছিল চোখে পড়ার মতো। অভ্যুত্থানের সাথে কওমি অঙ্গনের সম্পর্ক ছিল অত্যন্ত গভীর।

এ অঙ্গন থেকে যারা আন্দোলনের মাঠে সরাসরি অংশ নিয়েছেন এবং অসীম সাহসিকতা ও দূরদর্শিতার সাথে নেতৃত্ব দিয়েছেন, তাদেরই একজন রাজধানীর জামিয়া আরাবিয়্যা দারুল উলূমের মুহাদ্দিস ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের যুগ্মমহাসচিব মাওলানা ওয়ালি উল্লাহ আরমান।

অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে তিনি কথা বলেছেন নয়া দিগন্ত অনলাইনের সাথে। তার বক্তব্যে উঠে এসেছে অভ্যুত্থানের পেছনের প্রেক্ষাপট, কওমি জনগোষ্ঠীর আত্মত্যাগ এবং আরো নানা বিষয়।

নয়া দিগন্ত : জুলাই অভ্যুত্থানে কওমি মাদরাসার ছাত্র-শিক্ষকদের অংশগ্রহণ ছিল অত্যন্ত লক্ষ্যণীয়। আপনি কিভাবে এর সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন?

মাওলানা ওয়ালি উল্লাহ আরমান : জুলাইয়ের ১৫ তারিখের পর থেকে ছাত্র জনতার সংগ্রাম অগ্নিগর্ভ রূপ ধারণ করে। আমি রামপুরা ওয়াপদা রোড এলাকায় জনতার বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নিই। রামপুরা-বাড্ডা রাজধানীর প্রতিবাদ-প্রতিরোধের অন্যতম প্রধান স্পট হবার ফলে ওখানটায় মারণাস্ত্রধারী বাহিনীর উপস্থিতি এবং রুদ্র মূর্তি ছিল প্রচণ্ড। ১৭ তারিখে ওয়াপদা রোডের একটি মিছিলে বিজিবি কিংবা অন্য কোনো বাহিনীর গুলিতে আমাদের পার্শ্ববর্তী মাদরাসার একটি ছাত্র গুলিবিদ্ধ হয়, গুলিটি তার শরীরের একদিক দিয়ে ঢুকে অন্যদিক দিয়ে বের হয়ে যায়। ওই মিছিলে আমিও ছিলাম। রামপুরা বউবাজার এলাকায় তিন দিন আন্দোলনকারী ছাত্রজনতাকে খাবার এবং পানি দিয়ে পাশে দাঁড়ানোর সৌভাগ্য হয়েছিল। আন্দোলনের শেষ তিন দিন (৩-৫ আগস্ট) প্রতিদিন শাহবাগ, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, জাতীয় প্রেসক্লাব ও পল্টনে প্রতিবাদ বিক্ষোভে অংশ নিয়েছি। আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে সংগ্রামীদের হাতে সাধ্যমতো পানির বোতল তুলে দিয়েছি।

নয়া দিগন্ত : মাঠপর্যায়ে আপনার প্রত্যক্ষ ভূমিকা ও অভিজ্ঞতা সম্পর্কে জানতে চাই! আর আপনার এই অংশগ্রহণকে আপনি কিভাবে মূল্যায়ন করেন?

মাওলানা ওয়ালি উল্লাহ আরমান : দেশের নানাপ্রান্তে সরকারি বাহিনীর নৃশংস হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে ১৯ জুলাই জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সর্বদলীয় প্রতিবাদ সভার আয়োজন করা হয়। ওই সভায় জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা ড. গোলাম মহিউদ্দিন ইকরামের নেতৃত্বে আমরা অংশগ্রহণ করি। এর আগে সভাস্থলে যাওয়ার জন্য জুমার পর আমরা সেগুনবাগিচা হয়ে প্রেসক্লাবের দিকে অগ্রসর হলেই প্রথমে সশস্ত্র আর্মড পুলিশের বাঁধার সম্মুখীন হই। তাদের বাঁধা ডিঙিয়ে প্রেসক্লাবের বিপরীতে মূল সড়কে পৌঁছে তিন দিক থেকে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ি। হাইকোর্টের দিক থেকে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড এবং টিয়ারশেল ছুড়ে এগিয়ে আসতে থাকে। প্রেসক্লাবের প্রবেশ পথে বিজিবি রাইফেল উঁচিয়ে তেড়ে আসে। ওদিকে পল্টন মোড় থেকে পুলিশের ছত্রছায়ায় আওয়ামী সন্ত্রাসীরা অবৈধ অস্ত্র নিয়ে আমাদের লক্ষ্য করে ছুটে আসে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আমি ছাত্র জমিয়ত সভাপতি খালেদ মাহমুদকে সাথে নিয়ে প্রেসক্লাবের পূর্ব পাশ দিয়ে রিকশায় চড়ে সচিবালয় মসজিদের সামনে থেকে জিপিএ মোড় হয়ে বায়তুল মোকাররম চলে যাই।

সেখানে তখন ইসলামী আন্দোলনের প্রতিবাদ সমাবেশ পুলিশি বেষ্টনীতে পড়ে গেছে। দ্রুত পল্টন কালভার্ট রোডে চলে যাই। সেখানে সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্র জমিয়ত সভাপতি নিজামুদ্দীন আদনানসহ অন্যান্য সংগঠনের দায়িত্বশীলদের নেতৃত্বে তুমুল প্রতিরোধ শুরু হয়েছে। আমরা পুনরায় সেগুনবাগিচা হয়ে প্রেসক্লাবের দিকে যাওয়ার জন্য পল্টন টাওয়ারের সামনে সংগঠিত হয়ে বিজয়নগর পানির ট্যাংকির দিকে আগাতে থাকি। ইতোমধ্যে রক্তপিপাসু পুলিশের বড়সড় একটি দল গুলি ছুড়তে ছুড়তে আমাদের দিকে এগিয়ে আসে। বাধ্য হয়ে আমাদেরকে কালভার্ট রোডের দিকে পিছু হটতে হয়। পুলিশের গুলিতে পল্টন টাওয়ারের সামনে অন্তত তিনজন আন্দোলনকারী শহীদ হন। তাদের মাথার খুলি উড়ে যায়। আমাদের পক্ষে কালভার্ট রোডের আশপাশে টিকে থাকা সম্ভব হয়নি। কালভার্ট রোডের প্রতিরোধে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিনও ছিলেন। অতঃপর পুলিশ এবং সশস্ত্র আওয়ামী সন্ত্রাসীদের চোখ এড়িয়ে নানাপথ ঘুরে রামপুরায় আমার মাদরাসায় ফিরে আসি।

১৯ জুলাই ছিল শুক্রবার। রামপুরা বনশ্রী এলাকায় সেদিন পাখির মতো গুলি করে নিরীহ মুসল্লিদের হত্যা করা হয়। রাতে আমরা বনশ্রী এলাকার একটি হাসপাতালের ইমার্জেন্সি বিভাগে গিয়ে অন্তত ১০টি লাশ পড়ে থাকতে দেখি। দায়িত্বরত নার্সদের ভাষ্যমতে- সেদিন তাদের হাসপাতালে জরুরি চিকিৎসা নিতে এসে কমপক্ষে ২৫-৩০ জন আহত ব্যক্তি মারা যান। যদিও প্রশাসনের ভয়ে দুদিন পর পত্রিকায় নিউজে ওই হাসপাতালে মৃতের সংখ্যা তিনজন উল্লেখ করা হয়। পরে জেনেছি, সাদা পোশাকের লোকেরা সেদিন আশপাশের সকল হাসপাতালের রেজিস্টার খাতা নিয়ে যায়।

মূল্যায়নের কথা বললে আমি বলবো- বিগত ১৭ বছর আওয়ামী ফ্যাসিবাদের হাতে সারাদেশের মানুষের মতো আমরাও নিপীড়নের শিকার ছিলাম। একজন আলেম, একজন রাজনীতি সচেতন নাগরিক এবং জমিয়ত ও হেফাজতকর্মী হিসেবে নিত্যদিন দমনপীড়নের সম্মুখীন হতে হয়েছে। একাধিক মিথ্যা মামলার খড়গ নিয়ে আতঙ্কিত সময় কাটাতে হয়েছে। স্বাধীনভাবে শিক্ষকতা, ধর্মীয় দায়িত্ব এবং রাজনৈতিক তৎপরতা পরিচালনায় প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হতে হয়েছে। সুতরাং যেকোনোভাবে আওয়ামী লীগের পতন নিশ্চিত করণের সকল আন্দোলন সংগ্রামে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেছি। তারই চূড়ান্ত রূপ জুলাইয়ের ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণ।

নয়া দিগন্ত : অভ্যুত্থানে শুধু কওমি অঙ্গনেই অন্তত ৪২ জন শহীদ হয়েছেন, তাদের এই ত্যাগের বিনিময় কি আপনারা পেয়েছেন এবং তাদের স্মরণে ও সম্মানে কী পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন?

মাওলানা ওয়ালি উল্লাহ আরমান : শুরুতে এই আন্দোলন যে দাবিতে গড়ে উঠেছিল, তার সাথে কওমি মাদরাসা সংশ্লিষ্টদের কোনো সম্পৃক্ততা ছিল না। কারণ, সরকারি চাকরিতে কোটা থাকা না থাকায় কওমি শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের কোনো সম্পর্ক নেই। কিন্তু যখন জুলাইয়ের মাঝামাঝিতে সরকারি বাহিনী এবং আওয়ামী সন্ত্রাসীরা আন্দোলনকারীদের নৃশংস কায়দায় হত্যা এবং নারী শিক্ষার্থীদের ওপর নজিরবিহীন সন্ত্রাসী হামলা চালায়, তখন এই আন্দোলন আর শুধুমাত্র স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের ইস্যু থাকে না; বরং জাতীয় ইস্যুতে পরিণত হয়। মাদরাসা ছাত্ররা স্ব-উদ্যোগে, যে যেভাবে পেরেছে ঢাকাসহ সারাদেশে প্রশাসন ও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে আন্দোলনে সম্পৃক্ত হয়। প্রতিবাদ প্রতিরোধে বিভিন্ন সংগঠন এবং সংগঠনের বাইরে থাকা তরুণেরা অংশগ্রহণ করে।

কিন্তু সত্যিকারার্থে বললে এর কোনোরকম মূল্যায়ন কওমি ছাত্র-শিক্ষকরা পেয়েছে বলা যাবে না। বিচ্ছিন্নভাবে কেউ কেউ হয়তো স্বীকৃতি দিচ্ছেন, কিন্তু মূল্যায়ন অথবা নথিভুক্ত করার ব্যাপারে বরাবরের মতো এবারো কওমি সংশ্লিষ্টদের ঐতিহাসিক ভূমিকা এড়িয়ে যাওয়া হচ্ছে। এটা রাষ্ট্রীয়ভাবে যেমন হচ্ছে, বিভিন্ন সংগঠনও পাশ কাটানোর চেষ্টা করছে। দুর্ভাগ্যক্রমে এক্ষেত্রে আমাদের ব্যর্থতাও কম নয়। আমাদের অঙ্গনে সক্রিয় বিভিন্ন সংগঠন, শিক্ষাবোর্ড অথবা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকেও এ বিষয়ে কার্যকর কোনো উদ্যোগ চোখে পড়েনি।

নয়া দিগন্ত : আন্দোলন চলাকালে হেফাজতে ইসলাম অভ্যুত্থানে নিহতদের ‘শহীদ’ আখ্যা দিয়েছিলো। এই ঘোষণা কি আন্দোলনের গতি বাড়াতে কিংবা আন্দোলনে ইতিবাচক কোনো প্রভাব ফেলেছিল?

মাওলানা ওয়ালি উল্লাহ আরমান : নিঃসন্দেহে হেফাজতের ওই ঘোষণাটি ছিল সময়োপযোগী ও ঐতিহাসিক এবং আন্দোলনে নতুন মাত্রা যোগ করে। পাশাপাশি ধর্মীয় অঙ্গনকে আওয়ামী লীগের জুলুম, নির্যাতন এবং খুনের বিরুদ্ধে মাঠে নামতে উৎসাহ, উদ্দীপনা ও সাহস যোগায়।

নয়া দিগন্ত : রাজনৈতিক কোনো ব্যানারের বাইরে গণঅভ্যুত্থানে কওমি আলেমদের এই যে বৃহৎ অংশগ্রহণ, তাতে দেশের মানুষের কাছে তাদের গ্রহণযোগ্যতা ও মূল্যায়ন বৃদ্ধি পেয়েছে নাকি অবনতি হয়েছে বলে আপনি মনে করেন?

মাওলানা ওয়ালি উল্লাহ আরমান : আমার তো মনে হয় সাধারণ মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু আরবান মিডল ক্লাস বলতে যাদের বোঝায়, তাদের দৃষ্টিভঙ্গি এখনো অস্পষ্ট। মিডিয়াতেও আমাদের অবদান এড়িয়ে যাবার চিরাচরিত ঐতিহ্য বহাল আছে।

নয়া দিগন্ত : আন্দোলনের সময় রাষ্ট্রীয় দমন-পীড়ন, গ্রেফতার, নির্যাতন ইত্যাদি নিয়ে কী ধরনের অভিজ্ঞতা হয়েছে আপনাদের?

মাওলানা ওয়ালি উল্লাহ আরমান : আমাদের সহকর্মী ও ছাত্র জমিয়ত বাংলাদেশের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি নিজামুদ্দীন আদনান একদিন বিক্ষোভের মুখে পুলিশের গুলি থেকে বিস্ময়করভাবে বেঁচে যায়। জুলাইয়ের মাঝামাঝি থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল থেকে মধ্যরাত অবধি আমাদের মাদরাসার গেটে পুলিশের গাড়ি বসে থাকতো অথবা নিয়মিত বিরতিতে টহল দিতো। দুয়েকবার নামাজের সময় মাদরাসায় এসে আন্দোলনে না যাওয়ার জন্য হুমকি দিয়ে গেছে। কিন্তু আমাদের মাদরাসায় প্রতিদিন আসরের পর শহীদ এবং আহতদের জন্য ঘোষণা দিয়ে দোয়া করা হতো।

নয়া দিগন্ত : আন্দোলনে অংশগ্রহণের পেছনে কওমি ছাত্র-শিক্ষকদের নৈতিক ও আদর্শিক প্রেরণা কী ছিল? তারা কেন এই অভ্যুত্থানের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করলেন?

মাওলানা ওয়ালি উল্লাহ আরমান : সচেতনতা এবং সময়কে ধারণ করা এই প্রজন্মের একটা বিশেষ বৈশিষ্ট্য। মধ্য জুলাইয়ের পর থেকে গোটা দেশ যখন আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে আগ্নেয়গিরির মতো জেগে ওঠে, স্বাভাবিকভাবেই এই দেশের মাটি ও মানুষের সন্তান হিসেবে কওমি মাদরাসার ছাত্র-শিক্ষকরা স্বতঃস্ফূর্ত ও স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এই আন্দোলনে জড়িয়ে পড়ে। তারা বুঝতে পেরেছিল, যুগসন্ধিক্ষণে ইতিহাসের বাঁক বদলের এই দিনে পিছিয়ে থাকার সুযোগ নেই।

নয়া দিগন্ত : ইন্টারনেট ও মোবাইল নেটওয়ার্ক বন্ধ থাকার সময়ও মাঠে উপস্থিত জনশক্তির মধ্যে অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ কিভাবে বজায় রেখেছিলেন?

মাওলানা ওয়ালি উল্লাহ আরমান : একটি রাজনৈতিক সংগঠনের দায়িত্বশীল এবং সচেতন নাগরিক হিসেবে তাৎক্ষণিক যোগাযোগের জন্য মোবাইল কলের তুলনায় মোবাইল মেসেজে বার্তার আদান-প্রদান করেছি। আমাদের সংগঠন জমিয়তকর্মীদের সাথেও এভাবেই যোগাযোগ রেখেছি।

নয়া দিগন্ত : আন্দোলন কিভাবে একসাথে পরিচালিত হতো? কেন্দ্র থেকে আপনাদের দিকনির্দেশনা দেয়া হতো কিভাবে? আর এই দিকনির্দেশনাগুলো মাঠপর্যায়ের কর্মীদের কাছেই বা পৌঁছে দিতেন কিভাবে?

মাওলানা ওয়ালি উল্লাহ আরমান : ঢাকার ভেতরে কর্মীদের নির্দেশনা দায়িত্বশীলদের মাধ্যমে সরাসরি পৌঁছে দেয়া হতো। ইন্টারনেট বন্ধের সময় কখনো কখনো মোবাইলের সংক্ষিপ্ত কল, আর সাধারণত এসএমএসের মাধ্যমে দেয়া হতো।

নয়া দিগন্ত : কওমি অঙ্গনের মধ্যে বিভিন্ন মত ও সংগঠন থাকা সত্ত্বেও এই অভ্যুত্থানে ঐক্য দেখা গেছে। এর পেছনে মূল সূত্র কী ছিল?

মাওলানা ওয়ালি উল্লাহ আরমান : আমার মনে হয়- এককেন্দ্রিক অথবা একক নেতৃত্ব ছাড়াই এই যে জাতীয় ঐক্য গড়ে উঠেছিল, তার মূল কারণ ছিল বিগত ১৬ বছরে আওয়ামী লীগের জুলুম নির্যাতন, গুম-খুন, মিথ্যা মামলায় পুলিশি হয়রানি, দলীয় সন্ত্রাসীদের বাড়াবাড়ি, ভোটাধিকার হরণ, বিশেষ চেতনার নামে ন্যায্য নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা, সর্বোপরি ধর্মীয় স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ এবং আলেম ওলামাদের ওপর নিপীড়ন প্রভৃতি কারণে সর্বস্তরের জনগোষ্ঠী আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠে অঘোষিতভাবে জাতীয় ঐক্য তৈরি।

নয়া দিগন্ত : ভবিষ্যতের বাংলাদেশ কেমন দেখতে চান? ইসলামী নেতৃত্ব ও কওমি আলেমদের ভূমিকা আপনি কিভাবে কল্পনা করেন?

মাওলানা ওয়ালি উল্লাহ আরমান : আমার বিশ্বাস- আওয়ামী লীগের পতন, পলায়ন ও পরিণতি দেখে রাজনৈতিক সংগঠন এবং নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ সতর্ক হয়ে যাবেন এবং সহসা বাংলাদেশ ফ্যাসিবাদী রূপে দাঁড়ানোর দুঃসাহস কেউ করবে না। আমি মনে করি- পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে ইসলামপন্থীদের জন্য রাজনৈতিক তৎপরতা এবং দেশ পরিচালনায় অংশগ্রহণের চমৎকার সুযোগ তৈরি হয়েছে। যদি সংগঠনগুলো সঠিক ও সময়োপযোগী কৌশল গ্রহণ করতে পারেন, তাহলে জাতি তাদের দ্বারা উপকৃত হতে পারবেন এবং ইসলামের আওয়াজকে আরো উচ্চকিত করা সম্ভব হবে ইনশাআল্লাহ।



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews