১৯৬৬ সালে ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর পুনেতে প্রতিষ্ঠিত হয় সেরাম ইনস্টিটিউট। বেশ নামকরা এই ওষুধ প্রস্তুতকারক কারখানা গত কিছুদিনে যেন আরও বেশি পরিচিতি লাভ করেছে। কারণ করোনার এই সময়ে সারা বিশ্বের মানুষের কাছে সবচেয়ে কাঙ্ক্ষিত অ্যাস্ট্রাজেনেকা এবং অক্সফোর্ড কোভিশিল্ড ভ্যাকসিনের কোটি কোটি ডোজ তৈরি হচ্ছে এই সেরাম ইনস্টিটিউটে। বাংলাদেশও কিনছে এই টিকা।
সম্প্রতি বার্তা সংস্থা এএফপি সেরামের টিকা ব্যবস্থাপনা নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এতে বলা হয়, প্রতিদ্বন্দ্বী ফাইজার-বায়োএনটেক টিকার চেয়ে সেরামের কোভিশিল্ডের সংরক্ষণ এবং পরিবহনব্যবস্থার মান উন্নত। এটি ফাইজার বা মার্কিন সংস্থা মর্ডানার তৈরি ভ্যাকসিনগুলোর তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে সাশ্রয়ী, যা দরিদ্র দেশগুলোর মধ্যে সরবরাহ করা সহজ হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
মহামারির আগে থেকেই ভারতীয় এই সংস্থা টিকা তৈরি ক্ষেত্রে বিশ্বে অন্যতম সেরা অবস্থানে রয়েছে। গড়ে প্রতিবছর ১৫০ কোটি ডোজ টিকা উৎপাদন করে এই প্রতিষ্ঠান। কোভিড ছাড়াও পোলিও, ডিপথেরিয়া, টিটেনাস, হেপাটাইটিস বি, হাম ও রুবেলার টিকাও উৎপাদন করে প্রতিষ্ঠানটি, যা ১৭০টি দেশে রপ্তানি হয়ে থাকে।
সেরামের মূল যাত্রা শুরু হয় একটি ঘোড়াপালনের খামার দিয়ে। এর মালিক পুনেওয়ালা পরিবার ১৯৪৬ সাল ঘোড়ার প্রজনন নিয়ে কাজ শুরু করে। সে সময়ই প্রথম তারা ধারণা পায় প্রাণী থেকে প্রাপ্ত অ্যান্টিটক্সিন সেরামকে ভ্যাকসিন তৈরি করতে ব্যবহার করা যেতে পারে। পরে ১৯৬৬ সালে সাইরাস পুনেওয়ালা সেরাম ইনস্টিটিউট গড়ে তোলেন। দ্রুতই সেরাম ইনস্টিটিউট সাশ্রয়ী ও কার্যকর ওষুধ সরবরাহ করে কেবল ভারতের নয়, বিদেশের বাজারেও নেতৃত্ব নেয়। মূলত এখানকার তৈরি পণ্যের দাম কম, আবার মান ভালো। এ জন্য বিভিন্ন দেশের সরকার আগ্রহী হয়ে ওঠে এই প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে।