নারী ক্রিকেট বিশ্বকাপের বাছাই পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে হেরেও মূলপর্বে জায়গা করে নিলেন নিগার সুলতানা জ্যোতিরা। গতকাল পাকিস্তানের লাহোরে বাছাই পর্বে দিনের প্রথম ম্যাচে স্বাগতিক দলের কাছে ৭ উইকেটের বড় ব্যবধানে হেরে বিশ্বকাপে খেলা অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছিল জ্যোতিদের। আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৭৮ রান তুলে বাংলাদেশ। জবাবে ৩৯.৪ ওভারে ৩ উইকেটে ১৮১ রান করে টানা পঞ্চম জয় পেয়ে শীর্ষ দল হিসেবেই বিশ্বকাপের মূলপর্বে নাম লেখায় পাাকিস্তান। তবে একই দিন অপর ম্যাচে থাইল্যান্ডের বিপক্ষে ৬ উইকেটে জিতেও বিশ্বকাপে খেলার স্বপ্নভঙ্গ হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজের। সমান ম্যাচে (৫) সমান পয়েন্ট (৬) পেলেও রান রেটে এগিয়ে থেকে টানা দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্বকাপের মূলপর্বে জায়গা করে নেয় বাংলাদেশ জাতীয় নারী ক্রিকেট দল।
থাইল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের জন্য সমীকরণ যত কঠিন ছিল, ব্যাট হাতে সেটার নমুনা দেখা গেল না সেই অর্থে। অধিনায়ক হেইলি ম্যাথিউস কিংবা শ্যানেল হেনরি লড়েছিলেন শেষ পর্যন্ত। কিন্তু সেটা যথেষ্ট হয়নি। ম্যাচের ১১তম ওভারের ৫ম বলে চার এবং ৬ষ্ঠ বলে ছক্কা হলেই কেবল বিশ্বকাপে যেত ওয়েস্ট ইন্ডিজ। কিন্তু সরাসরি ছয় হাঁকানোর ফলে ম্যাচ জিতলেও সেটা আর উইন্ডিজ নারীদের পক্ষে থাকেনি। নেট রানরেটে এগিয়ে থেকে বাংলাদেশ চলে যায় নারী বিশ্বকাপের মূলপর্বে। এই ম্যাচের পর ওয়েস্ট ইন্ডিজ নারী দলের নেট রানরেট ০.৬৩। আর বাংলাদেশের ০.৬৪। থাইল্যান্ডের দেয়া ১৬৭ রানের লক্ষ্য ১০.৫ ওভারে শেষ করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তবে দুর্দান্ত মারকুটে এই ব্যাটিংটাও এদিন কাজে লাগলো না তাদের। নিজেদের ম্যাচে দিনের শুরুতে বাংলাদেশ হেরে গিয়েছিল পাকিস্তানের কাছে। তারপরেও আশার প্রদীপটা একেবারেই নিভে যায়নি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের নারীদের হার কিংবা নেট রানরেটে পিছিয়ে থাকা জ্যোতির দলকে পৌঁছে দেবে বিশ্বকাপে এটাই ছিল সমীকরণ। সেই কাজ অনেকটাই সহজ হয়ে যায় থাইল্যান্ডের ব্যাটার নাত্তাখাম চাংথামের কল্যাণে। তার এক ফিফটিতে ভর করে উইন্ডিজ নারীদের বিপক্ষে থাইল্যান্ডের দলীয় সংগ্রহ দাঁড়ায় ১৬৬। থাইল্যান্ডের ইনিংস অবশ্য শেষ হতে পারতো আরও অনেক আগেই। ওয়েস্ট ইন্ডিজের নারীদের দুর্দান্ত বোলিংয়ে এক সময় ৮৫ রানেই ৭ উইকেট হারায় থাইল্যান্ড। চারে নামা চাংথাম একাই ছিলেন প্রাচীর হয়ে। খেলেন ৬৬ রানের ইনিংস। শেষদিকে থাই নারীদের আর কেউই দুই অঙ্কের ঘরে যেতে না পারলেও বলের পর বল খেলে গিয়েছেন, আর সেটাই বাংলাদেশের স্বপ্নটা উজ্জ্বল করেছে বিশ্বকাপের দৌড়ে। বহু জটিলতার পর জানা যায়, ১০.১ ওভারে ১৬৭ রান করতে হবে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। সেটা ১১ ওভার পর্যন্ত যেতে পারে। সেক্ষেত্রে স্কোর থাইল্যান্ডের সমান ১৬৬ করতে হবে। এরপরেই দরকার ১ ছক্কা। ১১ ওভারে ১৭২ রান হলেও বিশ্বকাপে বাংলাদেশকে টপকে চলে যেত ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দুই ক্যারিবিয়ান ওপেনার হেইলি ম্যাথিউস আর কিয়ানা জোসেফ ছিলেন দুর্দান্ত আগ্রাসী। ১২ বলে ২৬ করে কিয়ানা থামলেও অধিনায়ক হেইলি ছুটছিলেন দুর্বার গতিতে। ৭ম ওভারের শেষ বলে থামে তার ২৮ বলে ৭০ রানের ইনিংস। বাংলাদেশের স্বপ্নটাও উজ্জ্বল হয় তখন। কিন্তু তিনে নামা শ্যানেল হাল ছাড়ার নন। ১৭ বলে ৪৮ রান করেন তিনি। উইন্ডিজ নারীদের চার-ছয়ের কাছে তখন বাংলাদেশের দর্শকরা অসহায়। প্রতিটা ডট বল যেন টাইগ্রেসদের জন্য আশীর্বাদ। ১০.১ ওভারে উইন্ডিজের সংগ্রহ ছিল ১৫৭। পরের বলেই বাউন্ডারি লাইনে ধরা পড়েন শ্যানেল হেনরি। আলিয়াহ অ্যালেইনে প্রথম বলে চার মেরে জমিয়ে দেন সমীকরণ। পরের বলে সিঙ্গেলস হয়ে স্ট্রাইকে আসেন স্টেফেন টেইলর। উইন্ডিজের রান ছিল ১৬২। এই সময় ১ চারে ১৬৬ এবং ১ ছক্কায় ১৭২ রানই নিতে পারতো তাদের বিশ্বকাপে। কিন্তু স্টিফেন টেইলরের হাঁকানো বল সরাসরি মিড অফের ওপর দিয়ে চলে যায় বাউন্ডারি লাইনের ওপারে। ছক্কা হাঁকিয়ে জয় নিশ্চিত করলেও বিশ্বকাপটা উইন্ডিজ নারীরা মিস করে যায় ০.০১ রানরেটের জন্য। আর সেই ১ বলের সমীকরণ মিলিয়ে বাংলাদেশের ঠাঁই হলো সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে ভারতে অনুষ্ঠিতব্য নারী ক্রিকেট বিশ্বকাপে। আট দেশের এই টুর্নামেন্টে শেষ দল হিসেবে জায়গা পায় বাংলাদেশ।



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews