সম্প্রতি ছবিলাপুর গ্রামে গিয়ে কথা হয় জুলফিকারের সঙ্গে। তিনি বলেন, ১৯৮২ সালে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার সময় এক সভায় গিয়ে জানতে পারেন, গাছ লাগালে পুণ্য হয়। তখন থেকেই গাছ লাগানোর চিন্তা মাথায় আসে। শুরুতে সব ধরনের গাছ লাগাতেন। পরে তাঁর মাথায় আসে বটগাছের কথা। বটগাছ একসঙ্গে অনেককে ছায়া দেয়। বটগাছের ফল পাখি ভালোবাসে। এতেই গাছটির প্রতি তাঁর ঝোঁক বাড়ে। তিনি দেখেন, গ্রামের ঈদগাহ মাঠে কোনো গাছ নেই। সেখানে একটি বটের চারা লাগান। পরে গ্রামের একমাত্র স্কুলমাঠের খালি জায়গায় লাগান বটগাছ। এভাবেই বটগাছ লাগানোর শুরুটা হয়।
বটগাছের রাজত্ব
মেলান্দহের রাস্তাঘাটে, স্কুল-কলেজের মাঠে ও হাটবাজারে বটগাছ চোখে পড়ে। এর প্রায় সবই জুলফিকারের লাগানো। এ ছাড়া পাশের জেলা শেরপুর ও বগুড়ার কিছু স্থানেও আছে জুলফিকারের লাগানো বটগাছ। এখন পরিকল্পনা করছেন দেশের সব রেলওয়ে স্টেশনে তিনি বটগাছ লাগাবেন।
মেলান্দহের ঘোষেরপাড়া চৌরাস্তা বাজারে বটতলায় বিশ্রাম নেওয়ার সময় কথা হয় ছবিলাপুর গ্রামের আবদুল মমিনের সঙ্গে। তিনি বলেন, উপজেলার যেখানেই বটগাছ দেখবেন, সেটাই লেবু স্যারের লাগানো। তিনি শুধু গাছ লাগিয়েই ক্ষান্ত হননি। গাছ বড় হওয়ার পর এর নিচে বসার জন্য পাকা বেদিও করে দিয়েছেন।
দক্ষিণ কাহেতপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. শহীদুল্লাহ বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই গাছ লাগানো জুলফিকারের নেশা।’
বটের চারা বেশি লাগান কেন জানতে চাইলে জুলফিকার আলী বলেন, ‘বটের ছায়া শীতল। সেখানে একত্রে অনেক মানুষ বসতে পারে। বটগাছ সহজে মরেও না। দেশে একসময় অনেক বটগাছ ছিল। এখন সংখ্যায় কমে এসেছে। বটগাছ লাগালে আমি আলাদা শান্তি পাই।’