ব্যান্ড লালনের ভোকালিস্ট নিগার সুলতানা সুমি। যার অদ্ভুত গায়কি লালন সাঁইজির গানকে নিয়ে গেছেন অনন্য উচ্চতায়। এই রকস্টার মাঝে বিরতি নিলেও লালন ব্যান্ডকে নিয়ে নতুন উদ্যমে ফিরেছেন নিজের চেনা রাজ্যে। এই তারকার সঙ্গে কথা বলেছেন- পান্থ আফজাল
গানের সঙ্গে বসবাস, ব্যস্ততা কেমন চলছে?
প্রচুর ব্যস্ত। গত দুই মাস ধরে টানা শো করেছি। সবার রেসপন্স খুবই ভালো। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের। আমাদের শো নিয়ে তাদের উৎসাহ দেখে অনুপ্রাণিত হই। এর মধ্যে বেশ কিছু করপোরেট শো করেছি। নড়াইলে শো করলাম। গতকাল একটি ইউনিভার্সিটিতে শো করেছি। আর ১৩ তারিখে রাজশাহী, ১৫ তারিখে কক্সবাজার, এরপর ১৭ থেকে ২৭ পর্যন্ত মাসজুড়েই ব্যস্ত থাকব। আরও কিছুর কথা চলছে।
এই ব্যস্ততা কি নতুন বাংলাদেশ হওয়ার পর বেড়েছে বলে মনে হচ্ছে?
আসলে নতুন বাংলাদেশ হওয়ার পর অনেক চেঞ্জ এসেছে ইয়াং জেনারেশনের মধ্যে। তাদের মধ্যে গান শোনার প্রবণতা বেড়েছে। আগে যেখানে রিমোট এরিয়ায় শো হতো হাতে গোনা, সেখানে এখন অনেক বেশি শোর ডাক পাচ্ছি। কলেজ-ভার্সিটিতে শোও বেড়েছে। এটা ইতিবাচক।
মাঝে বিরতি, এরপর নতুনরূপে ফিরে আসাটা কি চ্যালেঞ্জিং ছিল?
বিরতির প্রয়োজন ছিল আমার রিফ্রেসমেন্টের জন্য। আসলে ছোটবেলা থেকেই তো গান গাই। প্রায় ১৬ বছর হলো। তবে মাঝে গানের প্রতি কিছুটা অনীহা চলে এসেছিল। এখন রিস্ট্যার্ট দিয়ে পুরোদমে ফিরেছি।
স্টেজে কি সব লালনের গানই করে থাকেন?
ফকির লালন সাঁইজির গান সব অ্যালবামেই আছে, তবে স্টেজে ৪-৫টা করে থাকি। বাকি সব মৌলিকই করি।
নতুন গান আসবে?
সহজিয়ার সঙ্গে কোলাবোরেশন করেছি ‘ফেরা’ গানটি। এরপর ‘পাগল চেনে না’ করেছি। তবে পুরাতন গানের মধ্যে ‘জাত গেল’ নিয়ে বলব যে, এই গানটি জুলাই গণ অভ্যুত্থানের ছাত্রদের নতুন করে জাগিয়ে তুলেছিল; আন্দোলনের গতিকে বাড়িয়ে দিয়েছিল।
ব্যান্ড লালনের অ্যালবাম নিয়ে পরিকল্পনা?
প্রজেক্ট করব। প্রয়াত পাগল হাসান ভাইয়ের ১টি গান করব ব্যান্ড লালনের সঙ্গে কোলাবোরেশন করে। এভাবে একটি একটি করে গান করে লিরিক্যাল ভিডিও আকারে প্রকাশ করব।
ব্যান্ড দলে ভাঙন কেন হয়?
এক্ষেত্রে আমি মনে করি, খ্যাতি সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত করে। আর এখন যেহেতু শুধু মিউজিক করে বেঁচে থাকা খুবই কঠিন। তাই কেউ কেউ অন্যপথে হাঁটে। অন্যদিকে সদস্যের সঙ্গে মতবিরোধ, একাত্মবোধের অভাব ব্যান্ড দলে ভাঙনের আরেক দিক। যারা মিউজিক লাভার তারা তো মিউজিক করতেই চায়; বাধ্য হয়েই অন্য পেশায় যায়। আসলে বাংলাদেশে মিউজিক নিয়ে কাজ করাটা অনেক বেশি চ্যালেঞ্জের। একসঙ্গে ৫-৬টা জেলার মানুষ একত্রিত হয়ে কাজ করাটা টাফ।
সাঁইজির গান অনেকেই অন্যভাবে গাইছে...
কে কীভাবে করছে তা নিয়ে কিছু বলতে চাই না কারণ আমি নিজেই এখনো লালন সাঁইজির গান শিখছি। আমাদের মূল বিষয় হচ্ছে, সাঁইজির বাণী, বৈষম্য, জাত-ধর্ম নতুন প্রজন্মের কাছে সঠিকভাবে পৌঁছে দেওয়া। এটাই স্বপ্ন।
ব্যান্ডের গানের সঙ্গে ফ্যাশন-স্টাইল কতখানি দরকারি?
আমরা যারা আর্ট-মিউজিকের মানুষ তাদের দেখার জন্য তো শত শত মানুষ বসে থাকে। তবে স্টাইল-সাজ থেকে মিউজিক গায়কি প্রেজেন্টেশন বেস্ট হলে এসবের প্রয়োজন নেই। আর্টিস্ট হিসেবে গত ৫-৬ বছর দেখেছি ভালো গান নেই; লিরিক-সুর নেই।