৯ দেশের বিজ্ঞানীদের একটি দল দাবি করেছে, বিশ্বের দীর্ঘতম লবণের গুহা (সল্ট কেভ) রয়েছে ইসরায়েলে। ‘লবণ গুহা’ ম্যালাম কেভের দৈর্ঘ্য প্রায় ১০ কিলোমিটার। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, এর আগে দীর্ঘতম সল্ট কেভ রেকর্ডের মালিক ছিল ইরান।বিশ্বে সল্ট কেভের সংখ্যা খুবই কম। যেগুলো আছে সেগুলোরও বেশিরভাগ আধা মাইলের চেয়ে ছোট। লবণ গুহাগুলো সাধারণত পাওয়া যায় খুবই শুষ্ক অঞ্চলে। প্রায় দুই বছর ধরে গবেষকরা চুইয়ে পড়া লবণের সারি চিহ্নিত করে করে শেষ পর্যন্ত সম্পূর্ণ ম্যালাম গুহার নকশা মানচিত্রে লিপিবদ্ধ করেছেন।
গুহাটি যেখানে অবস্থিত সে স্থানটি বাইবেলে বর্ণিত হয়েছে। খ্রিস্টান ধর্মীয় এই গ্রন্থটির ভাষ্য, ধ্বংস করে দেওয়া সোডোম ও গোমরাহ শহরের দিকে ফিরে তাকাতে নিষেধ করা হলেও লুত নবীর স্ত্রী তা অমান্য করেছিলেন। তাই তিনি পরিণত হয়েছিলেন লবণের স্তম্ভে। ম্যালাম গুহার লবণের সারি শুরু ওই স্তম্ভের কাছ থেকেই।
এখন পর্যন্ত ম্যালাম গুহার দৈর্ঘ্য ১০ কিলোমিটার। তবে গবেষকরা মনে করেন, যত বেশি বৃষ্টির পানি পড়বে, এর দৈর্ঘ্য তত বাড়বে। গুহার ভেতরে লবণের এমন সারি সারি স্তূপ সৃষ্টি হয়েছে বৃষ্টিপাতের পানি চুইয়ে চুইয়ে পড়ার কারণে। গুহার দেয়ালের ফাটল দিয়ে বৃষ্টির পানি চুইয়ে পড়ার সময় তার সঙ্গে আসে লবণ। আরেক ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, ম্যালাম কেভের ভেতর শত শত শাখা। এর মধ্যে সবচেয়ে দীর্ঘ শাখাটির দৈর্ঘ্য আধা কিলোমিটারের চেয়েও বেশি দীর্ঘ।
যে ম্যালাম কেভে লবণের এই স্তম্ভগুলো রয়েছে তার একটি অংশ মাউন্ট সোডোমের অংশ। এটি ইসরায়েলের সবচেয়ে বড় পর্বতমালা। ১৯৮০ সালের দিকে এর মানচিত্র সম্পূর্ণ করা হয়। বছর দুই আগে ইসরায়েলের ইয়োভ নেগেভ নামক ক্লাব স্থানটির একটি জরিপ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। তাদের সঙ্গে যোগ দেন গবেষক ও গুহা বিশেষজ্ঞরা। ‘হিব্রু ইউনিভার্সিটি অব জেরুজালেম’র নেতৃত্বে গবেষক দলে ছিলেন ৯টি দেশের নাগরিক। জরিপের পর তারা দাবি উত্থাপন করেন, ইসরায়েলের ম্যালাম কেভেই সবচেয়ে দীর্ঘ লবণের গুহা।
দীর্ঘতম লবণের গুহা থাকার রেকর্ড আগে ছিল ইরানের। দেশটির কেসেম দ্বীপের ‘কেভ অব দ্য থ্রি নুডসকে’ দীর্ঘতম লবণ গুহা ধরা হতো।