রাজধানীর উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল দখল নিয়ে বিএনপির দুই গ্রুপের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এসেছে। এই ঘটনায় ওই হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার তানভীর মাহমুদ তৌহিদকে চাকরিচ্যুত করেছে কর্তৃপক্ষ। পৃথক আদেশে চারজন মেডিকেল অফিসারকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এসব চিকিৎসকের অভিযোগ, শুধুমাত্র মেডিকেল কলেজ দখল দিতে উদ্দেশ্যমূলকভাবে এমন হয়রানি করা হচ্ছে।
শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটে এক সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেন ওই চিকিৎসকরা। সংবাদ সম্মেলনে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) আধুনিক মেডিকেল সাবেক সভাপতি ডা. রোকনুজ্জামান রুবেল বলেন, ‘বাংলাদেশ মেডিকেল স্ট্যাডিজ অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউট একটি ট্রাস্ট। এর অধীনে বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল পরিচালিত হয়। জুলাই আন্দোলনের আগে ট্রাস্টের চেয়ারম্যান ছিলেন সাবেক কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক। তবে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর তিনি গ্রেপ্তার হয়। পরে অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) প্রধান উপদেষ্টা ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনারকে নিয়মবহির্ভূতভাবে ওই পদে বাসানো হয়েছে। একইভাবে বিএনপির নেতা বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজের গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান পদে অধ্যাপক ডা. কাজী মাজহারুল ইসলাম দোলনের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এই দুইজনের নিয়োগে বাধা দেওয়ায় মেডিকেল অফিসার তানভীর মাহমুদ তৌহিদকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। এছাড়া ডা. জাহিদ হোসেন, ডা. হারুণ আল রশিদ ও ডা. রোকনুজ্জামান রুবেলকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। আমরা এসব আদেশ প্রত্যাহার চাই। যোগ্য মানুষকে যোগ্য জায়গাতে বসানো হোক।’
সংবাদ সম্মেলনের পর চাকরিচ্যুতির বিষয়ে জানতে চাইলে বিএমএসআরআই অনারারী সেক্রেটারী মেজর জেনারেল (অব). মো. রফিকুল ইসলাম সমকালকে বলেন, ‘জুলাই বিপ্লবের পর আধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল দখল নিয়ে বিএনপির দুই গ্রুপে দ্বন্দ্ব চলমান রয়েছে। মেডিকেল অফিসার তানভীর মাহমুদ তৌহিদকে কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তে উত্তরা আধুনিক হাসপাতাল থেকে ধানমন্ডির বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বদলি করা হয়। তবে সেখানে যুক্ত হয়নি। পরে বৈঠকের মাধ্যমে কর্তৃপক্ষ তার নিয়োগ বাতিল করে। এছাড়া হাসপাতালের শৃঙ্খলা নষ্টের দায়ে আরও চারজনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এই ঘটনা একটি তদন্ত কমিটি হয়েছে। প্রতিবেদন দেওয়ার পরে এই চারজনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে বিএনপির সহযোগি সংগঠন ড্যাব থেকে ডা. রোকনুজ্জামান রুবেলকে বহিস্কার করেছে বিএনপি। আর ডা. ডোনার ও ডা. দোলন নিয়মতান্ত্রিকভাবে নিয়োগ পেয়েছেন। তাদের নিয়োগ দিয়েছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন।