বাঙালি 'অস্মিতা' ও 'বাংলাদেশি অনুপ্রবেশই' কি পশ্চিমবঙ্গে ভোটের ইস্যু হয়ে উঠছে?

ছবির উৎস, Getty Images/Mamata Banerjee Facebook

ছবির ক্যাপশান,

নরেন্দ্র মোদী ও মমতা ব্যানার্জী দু'জনের কণ্ঠেই বাঙালি অস্মিতার কথা শোনা গেছে

    • Author,

      রূপসা সেনগুপ্ত

    • Role,

      বিবিসি নিউজ বাংলা

  • ৪ ঘন্টা আগে

পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে আপাতত পাখির চোখ ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচন। একদিকে যেমন এই নির্বাচন তৃণমূলের জন্য ক্ষমতায় টিকে থাকার লড়াই, তেমনই বিজেপির জন্য ক্ষমতায় আসার।

আসন্ন নির্বাচনে ভালো ফল করার জন্য কোনো কসুর ছাড়তে চায় না দুটো দলই। নিজেদের অবস্থান মজবুত করতে বাঙালিদের 'মন পেতে' মরিয়া তারা। বাকি দলগুলোও অবশ্য পিছিয়ে নেই।

গত কয়েক সপ্তাহ ধরে তৃণমূল, বিজেপি, কংগ্রেস, বামসহ সব রাজনৈতিক দলের মুখেই ঘুরে ফিরে আসছে 'বাঙালি অস্মিতা'র প্রসঙ্গ।

এর সূত্রপাত দেশের বিভিন্ন রাজ্যে 'বাংলাদেশি' সন্দেহে ধরপাকড়ের ঘটনাগুলোকে কেন্দ্র করে।

ওই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর রাজ্য সফরের আগেই মিছিল করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তারপর সোমবার ২১শে জুলাইয়ের সভায় আবার সরব হয়েছেন মমতা ব্যানার্জী।

বাংলা বললে 'বাংলাদেশি' তকমা দেওয়ার ঘটনাকে "বাঙালিদের ওপর আক্রমণ" এবং "সন্ত্রাস" বলে আখ্যা দিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। তার অভিযোগ, এটা বাঙালি অস্মিতার (বাঙালি পরিচয় নিয়ে যে গর্ব বা জাত্যভিমান) ওপরেও 'আঘাত'।

পাশাপাশি তার অভিযোগ, যাদের বাংলাদেশি বলে জোর করে সীমান্তের অন্য প্রান্তে পাঠানো হয়েছে, তাদের অনেকেই পশ্চিমবঙ্গের বাঙালি। তার পাল্টা যুক্তি, বিজেপি ক্ষমতায় এলে বাঙালিদের আক্রান্ত হওয়ার এমন ঘটনা কমবে না।

অন্যদিকে, দুর্গাপুরের সভা থেকে নরেন্দ্র মোদী স্পষ্ট করে দিয়েছেন, বাঙালিদের নিয়ে অহংকার সমগ্র দেশের মতোই বিজেপিরও গর্বের কারণ। তিনি নিজে বাঙালিদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের 'গুণগ্রাহী'।

ডা. শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জীর প্রসঙ্গ টেনে তিনি বোঝাতে চেয়েছেন, বাঙালি অস্মিতা বিজেপির কাছে কতখানি মূল্যবান।

অনুপ্রবেশ ইস্যুতে তিনি স্পষ্ট বলেছেন ,"ভারতীয় নন, এমন কেউ" এদেশে থাকতে পারবেন না। তাদের ফেরত পাঠানো হবে। তার যুক্তি, যাদের ধরপাকড় করা হচ্ছে, তারা সকলেই অবৈধভাবে 'অনুপ্রবেশকারী' এবং 'বাংলাদেশি'।

এই সমস্ত কিছু থেকে দুটো বিষয় আপাতত স্পষ্ট।

প্রথমদ, ২০২৬ সালের নির্বাচনের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না হলেও ভোট যুদ্ধের তোরজোড় শুরু হয়ে গেছে। আর দ্বিতীয়ত, রাজ্য রাজনীতিতে তো বটেই, আসন্ন নির্বাচনেও 'বাংলা, বাঙালি এবং বাংলাদেশি' ইস্যু রাজনৈতিক প্রচারের কেন্দ্রে থাকতে চলেছে।

২১শে জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী বাংলাভাষীদের বিরুদ্ধে হেনস্থার অভিযোগ নিয়ে আবার সরব হয়েছিলেন।

ছবির উৎস, LightRocket via Getty Images

ছবির ক্যাপশান,

২১শে জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী বাংলাভাষীদের বিরুদ্ধে হেনস্থার অভিযোগ নিয়ে আবার সরব হয়েছিলেন

'বাংলা, বাঙালি ও অনুপ্রবেশ ইস্যু'

সাম্প্রতিক সময়ে মহারাষ্ট্র, রাজস্থান, ওড়িশাসহ একাধিক রাজ্যে অবৈধ 'বাংলাদেশি' দাবি করে বহু বাংলাভাষীকে আটক করা হয়েছে।

এদের কাউকে ডিটেনশন ক্যাম্পে রাখার পর পরিচয় যাচাই করে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

অন্যদিকে, 'বাংলাদেশি' তকমা দিয়ে জোর করে সীমান্ত পাড় করে বাংলাদেশে পাঠানো হয়েছে-এমন অভিযোগ উঠেছে।

এই নিয়ে একাধিক মামলাও দায়ের করা হয়েছে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকেও এর বিরোধিতা করা হয়েছে।

গত কয়েক সপ্তাহ ধরে রাজ্য রাজনীতির ময়দানে উত্তেজনার পারদ চড়েছে এই ঘটনাগুলোকে কেন্দ্র করে।

দিন কয়েক আগে দিল্লির জয় হিন্দ কলোনিতে বাংলাভাষী পরিবারগুলোকে বাংলায় কথা বলার কারণে 'বাংলাদেশি' তকমা দেওয়া হচ্ছে, জল ও বিদ্যুৎ পরিষেবার মতো মৌলিক অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে––অভিযোগ তুলে সরব হয়েছিলেন মমতা ব্যানার্জী।

বলেছিলেন, "কেউ বাংলায় কথা বললে তিনি বাংলাদেশি হয়ে যান না।"

বিজেপি-শাসিত রাজ্যে বাঙালিদের হেনস্থার অভিযোগ তুলে কলকাতায় মিছিল করেন তিনি।

এরপর ২১শে জুলাই তাকে বলতে শোনা গেছে, "বাংলায় কথা বলার জন্য দেখুন কত লোককে ডিটেনশন ক্যাম্পে রেখেছে, কত মানুষকে বাংলাদেশে পাঠিয়েছে, কত মানুষকে রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশের জেলে আটকে রেখেছে।"

বাঙালির ওপর 'সন্ত্রাস' চলছে বলে অভিযোগ তুলেছেন তিনি।

মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, "বাংলা ভাষার ওপর সন্ত্রাস চলছে কেন? বাংলা স্বাধীনতার জন্য লড়াই করেছে। নবজাগরণ হয়েছে বাংলা থেকেই। বাংলার মাটি দুর্বৃত্তদের হবে না। দরকার হলে আবার ভাষা আন্দোলন শুরু হবে।"

২৭ জুলাই থেকে এ নিয়ে প্রতিবাদী মিছিল করার কথা বলেছেন তিনি।

এদিকে, বিহারে ভোটের আগে ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ চলছে। সেই প্রসঙ্গে মমতা ব্যানার্জী বলেছিলেন, "বিহারে ৪১ লাখ মানুষের নাম বাদ দিয়েছে। এরপর ওরা বাংলাতেও করার চেষ্টা করবে। বাংলায় কারও নাম বাদ দিলে ঘেরাও হবে। কারও নাম বাদ দিতে দেব না! বাংলা ভাষার ওপর সন্ত্রাস চলছে। এই সন্ত্রাস মানব না।"

পশ্চিমবঙ্গে বিপুল সংখ্যক অবৈধভাবে অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গা রয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছিলেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী। সেই অভিযোগও খারিজ করে বিজেপিকে পাল্টা আক্রমণ করেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো।

মমতা ব্যানার্জী

ছবির উৎস, Mamata Banerjee/Facebook

ছবির ক্যাপশান,

বিজেপিশাসিত রাজ্যে বাংলাভাষীদের হেনস্থার অভিযোগ তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী

অন্যদিকে, অনুপ্রবেশ ইস্যুতে বিজেপি যে 'নমনীয়' হবে না তা আগেই স্পষ্ট করে দিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

দুর্গাপুরের সভা থেকে তিনি বলেছেন, "তৃণমূল বাংলার পরিচয় বদলে দিচ্ছে। অনুপ্রবেশকারীদের জন্য তারা ভুয়া নথি তৈরি করছে। তৃণমূল যা করছে, তা দেশের জন্য বিপদ ডেকে আনবে। এটা বাংলার সংস্কৃতির জন্য বিপদজ্জনক।"

অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করতে অন্যান্য রাজ্য সহযোগিতা করলেও পশ্চিমবঙ্গ তা করছে না বলে অভিযোগ।

এই নিয়ে মি. মোদী বলেছেন, "ওদের (তৃণমূলের) আসল রূপ প্রকাশ্যে এসে যাওয়ার পর তৃণমূল অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের বাঁচাতে সরাসরি মাঠে নেমে পড়েছে।"

তিনি পাল্টা যুক্তি দিয়েছেন, বিজেপি বাঙালি সংস্কৃতির কদর করে। তাদের উদ্দেশ্য অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া।

তিনি বলেছিলেন, "ভালো করে শুনে নিন। যে ভারতের নাগরিক নয়, যে অনুপ্রবেশ করেছে, তার সঙ্গে ভারতীয় সংবিধান অনুযায়ী ন্যায়সঙ্গত পদক্ষেপই নেওয়া হবে। বাংলার অস্মিতার আঘাত লাগে, এমন কিছু বিজেপি হতে দেবে না।"

"বাংলা অস্মিতা বিজেপির কাছে সবচেয়ে ওপরে। যতগুলো রাজ্যে বিজেপি ক্ষমতায় রয়েছে, সর্বত্র বাঙালিদের জন্য সর্বোচ্চ সম্মান রয়েছে।"

এই ইস্যু নিয়ে পিছিয়ে থাকেনি বাম ও কংগ্রেস। দুই দলই প্রতিবাদে পথে নেমেছে।

প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকার বলেছেন, "নির্বাচন আসলেই মোদীজির বাংলার প্রতি দরদ উথলে ওঠে। কিন্তু বিজেপি-শাসিত রাজ্যগুলোয় বাংলা ভাষাভাষী মানুষদের ওপর যে অত্যাচার করা হচ্ছে, সেই বিষয়ে তিনি চুপ কেন?"

অন্যদিকে বাম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেছেন, "বাংলা অস্মিতার কথা বলবেন, আর বাঙালিদের ওপর অত্যাচার হবে তা চলতে পারে না। বাংলা অস্মিতা রক্ষার কথা বলবেন আর রাজ্যের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে দুর্বল করে দেওয়া হবে এই দুটো একসঙ্গে চলতে পারে না।"

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী

ছবির উৎস, Hindustan Times via Getty Images

ছবির ক্যাপশান,

প্রধানমন্ত্রীর পাল্টা দাবি, বাংলার ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতি বিজেপির কাছে মূল্যবান

বাঙালি অস্মিতা

শিক্ষাবিদ ও ভাষাবিদ পবিত্র সরকার বিবিসি বাংলাকে ব্যাখ্যা করেছেন, "বাঙালির যে অস্মিতা বা অহংকার নিয়ে কথা হচ্ছে, সেটা অনেকদিনের, ঊনবিংশ শতকে রেনেসাঁসের পর থেকে। বহু মনিষী, সমাজ সংস্কারক, লেখক-কবি, শিল্পী, সঙ্গীতশিল্পীদের মত জ্ঞানী গুণী ব্যক্তিদের হাত ধরে বাংলার ঐতিহ্য বিশ্বের দরবারে পৌঁছেছে, বাংলাও এগিয়েছে।"

"বাঙালিরা সমাদরও পেয়েছেন। বাংলা সাহিত্যের অগ্রগতির কারণে ভাষা নিয়ে বাঙালির একটা আলাদা অহংকার ছিল।"

এর সঙ্গে সাম্প্রতিক সময়ে রাজনীতির যোগের বিষয়টা ব্যাখ্যা করেছেন তিনি।

তার কথায়, "এই অহংকার ভালো কী খারাপ সেই তর্কে আমি যাব না। কিন্তু ভাষা বিজ্ঞান নিয়ে চর্চা করেছি বলে আমি জানি, সব ভাষার মর্যাদা সমান। কোনো ভাষা বেশি ব্যবহার হতে পারে কিন্তু তাতে সেই ভাষার মর্যাদা বাড়ে না, অন্য ভাষার মর্যাদাও ক্ষুণ্ন হয় না।"

"আসলে রাজনীতিবিদরা মনে করেন এই বিষয়টা নিয়ে রাজনীতি করতে পারলে মানুষের আবেগকে সুড়সুড়ি দেওয়া যাবে।"

ভিন্ন রাজ্যে বাংলাভাষী শ্রমিকদের হেনস্থার অভিযোগের ইস্যুটা ভিন্ন বলে মনে করেন তিনি।

তার কথায়, "দেশের অন্যান্য জায়গায় বাঙালিদের হেনস্তা হওয়ার ইস্যুটা ঠিক ভাষার সমস্যার কারণে নয়। সমস্যা অন্য জায়গায় এবং এর পেছনে অনেক কারণ আছে।"

"এর একটা অর্থনৈতিক। হয়ত দেখা যাবে স্থানীয় শ্রমিকদের চেয়ে পশ্চিমবঙ্গের শ্রমিকরা অপেক্ষাকৃত কম পারিশ্রমিকে কাজ করেন। তাই স্থানীয় মানুষ ভাবতেই পারেন যে বহিরাগতরা আমাদের চাকরি বা জীবিকাতে ভাগ বসাতে কেন আসবে।"

"আর একটা কারণ হলো রাজনৈতিক, যেটা সাম্প্রদায়িক ইস্যুকে ইন্ধন দিচ্ছে। এই শ্রমিকরা বাংলাভাষী মুসলমান। তাই তারা বাংলাদেশি- এটা ভুল ধারণা। কারণ বাংলাভাষী বহু মুসলমান পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা, আসামেও রয়েছেন।"

তার মতে ওই ভ্রান্ত ধারণা বদলানোর চেষ্টা করা হয়নি।

"ওই ভ্রান্ত ধারণা কেউ শুধরে দেয়নি। অন্যান্যদের মতো পশ্চিমবঙ্গের মুসলমানদেরও যে দেশের অন্য প্রান্তে কাজ খোঁজা, ব্যবসা করা এবং থাকার সাংবিধানিক অধিকার আছে, সেটা বাকিদের কাছে স্পষ্ট করাটা কেন্দ্র সরকারের দায়িত্ব। সেটা তারা পালন করেনি। বরং হিন্দু-মুসলমানের বিষয় তুলে মানুষের মন সংস্কারাচ্ছন্ন করতে চেয়েছে।"

"রাজ্যসরকারও কিন্তু ওই ধারণা শোধরানোর চেষ্টা করেনি," বলেন তিনি।

দিল্লিতে ‘বাংলাদেশি’ সন্দেহে আটক ব্যক্তিদের সঙ্গে পুলিশ

ছবির উৎস, ANI

ছবির ক্যাপশান,

দিল্লিতে 'বাংলাদেশি' সন্দেহে আটক ব্যক্তিদের সঙ্গে পুলিশ

ভোট বড় বালাই

রাজনৈতিক বিশ্লেষক এবং অধ্যাপক ড. বিশ্বনাথ চক্রবর্তী মনে করেন, তৃণমূলের বাঙালিদের বিষয়ে সরব হওয়ার নেপথ্যে কারণ রয়েছে।

তার কথায়, "প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী দু'জনেই ২০২৬-এর বিধানসভা নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে বাঙালির মন পেতে চাইছেন। মুখ্যমন্ত্রী জানেন, রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার অভাব, চাকরি না থাকা, ব্যাপক দুর্নীতির মতো একাধিক সমস্যা রয়েছে এই রাজ্যে। সেগুলো থেকে নজর ঘোরাতে হবে। অন্য ইস্যুকে সামনে আনাটা প্রয়োজন। তাই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বাংলা বললেই আক্রান্ত হতে হচ্ছে এই ব্যাপারটাকে তারা তুলে ধরতে চাইছে।"

এটাই কী তাহলে ভোটের ইস্যু হয়ে দাঁড়াবে? বিশেষজ্ঞদের মতে, এখনো পর্যন্ত তেমনটাই মনে হচ্ছে।

অধ্যাপক চক্রবর্তীর কথায়, "এখনো পর্যন্ত বাংলা ও বাঙালির ইস্যুটাকে সামনে রেখে আগামী ভোটের জন্য তৃণমূল এগোচ্ছে। যেমন এর আগের ভোটে বাংলা নিজের মেয়েকেই চায়- স্লোগানকে সামনে রেখে সাধারণ মানুষের সেন্টিমেন্টকে ধরতে চেয়েছিল।"

"তৃণমূল বাংলা ও বাঙালির ইস্যুকে সামনে রেখে চললে, বিজেপির কাছে অনুপ্রবেশের বিষয়টাকে হাইলাইট করা ছাড়া উপায় নেই।"

রাজনৈতিক বিশ্লেষক সৌম্য গাঙ্গুলি মনে করেন বাঙালিয়ানার প্রতিফলন তুলে ধরতে বদ্ধপরিকর বিজেপি।

"রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্যকে সামনে রেখে একটা বাঙালি মুখ তুলে ধরতে চাইছে বিজেপি। প্রধানমন্ত্রীর দুর্গাপুরের সভাতেও সেই চেষ্টার প্রতিফলন দেখা গেছে। জয় শ্রীরামের বদলে মা কালী, মা দুর্গার কথা, বাঙালি অস্মিতার প্রসঙ্গ এসেছে," বলেন তিনি।

"আবার তৃণমূলও আগেরবারের 'বাংলা নিজের মেয়েকে চায়', 'নো ভোট টু বিজেপি'- স্লোগানের মতো এইবার বাংলা ও বাংলাই আক্রান্ত ইস্যুকে সামনে রেখে এগোতে চাইছে।"

তার মতে, এর পেছনে অন্য কারণও আছে।

"তৃণমূল জানে ভোটার লিস্ট সংশোধন এবং অবৈধ ভোটারদের চিহ্নিতকরণের কাজ হলে, তারা সমস্যায় পড়বে। কারণ এক্ষেত্রে অনুপ্রবেশকারী সন্দেহে নাম বাদ যাওয়ার সম্ভাবনা মুসলমানদের যারা তৃণমূলের ভোট ব্যাংকের একটা বড় অংশ। তাই বাঙালি আক্রান্ত বলে তারা আগে থেকেই পাল্টা যুক্তি দিচ্ছে।"

এই বিষয়টার প্রভাব কতটা পড়তে পারে সেই প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে অধ্যাপক চক্রবর্তী বলেছেন, "এই পুরো বিষয়টার একটা প্রভাব পড়বে বলে আমি মনে করি। এর মধ্যে একটা উল্লেখযোগ্য প্রভাব পড়তে পারে ভিন্ন রাজ্যে থাকা প্রবাসী বাঙালিদের ওপর। কারণ অন্যান্য রাজ্যে বাঙালিরা আক্রান্ত বলতে গেলে সেই রাজ্যের প্রসঙ্গ টেনে আনা হবে।"

"ফলে ওই রাজ্যে কর্মরতদের সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে। আর পশ্চিমবঙ্গে চাকরি নেই। তাই সাধারণ মানুষের কী হবে? তারা কোথায় যাবে?"



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews