সাত দফা গোলামি চুক্তির দাসখত নিয়ে ভারত বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে সহযোগিতা করে। যে চুক্তির ষষ্ঠ দফা ছিল ‘বিদেশ বিষয়ে ভারত যা বলবে, তাই মেনে চলতে হবে। অর্থাৎ, সাউথ ব্লকের এনেক্স হবে সেগুনবাগিচা।’ উল্লিখিত চুক্তি বলে ভারত বাংলাদেশের সামরিক ও পররাষ্ট্র বিষয়ের কর্তৃত্ব পেয়ে যায়। স্বাধীনতার ৫৩ বছরেও বাংলাদেশ প্রকারান্তে ওই গোলামি চুক্তি থেকে বের হয়ে আসতে পারেনি। বিশেষ করে বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের ১৬ বছর বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি ছিল প্রকারান্তরে ভারতনীতি।

’২৪-এর জুলাই বিপ্লবের শুরুর দিকে বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের প্রধানমন্ত্রীর তিন দিনের চীন সফর সংক্ষিপ্ত করেই ফিরে আসতে হয়েছিল মোটা দাগে অর্থনৈতিকভাবে কোনো কিছু অর্জন ব্যতিরেকেই। তার মাত্র আট মাস পরই বাংলাদেশের বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস চীন সফর করছেন। এটি প্রধান উপদেষ্টার প্রথম দ্বিপক্ষীয় সফর। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ২৬ মার্চ বুধবার চীনের পাঠানো একটি উড়োজাহাজে ঢাকা থেকে রওনা হবেন। শুধু তাই নয়, উপদেষ্টা ও তার সফর সঙ্গীদের আতিথেয়তায় নজির স্থাপন করতে যাচ্ছে চীন। সাধারণত বিশ্বের অত্যন্ত মর্যাদাসম্পন্ন খুব কম সংখ্যক ব্যক্তিত্বকে এমন মর্যাদা দিয়েছে চীন; প্রফেসর ইউনূস তাদের মধ্যে একজন।

২৭ মার্চ চীনের হাইনান প্রদেশে অনুষ্ঠেয় বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়ার (বিএফএ) সম্মেলনে যোগ দেবেন। সম্মেলনের উদ্বোধনী প্লেনারি সেশনে বক্তব্য দেবেন ড. ইউনূস। এ ছাড়া, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে চীনের স্টেট কাউন্সিলর এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রিমিয়ার দিং ঝুঝিয়াংয়ের বৈঠক হতে পারে। ২৮ মার্চ বেইজিংয়ের ‘গ্রেট হল অব দ্য পিপল’-এ চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সাথে বৈঠকে বসবেন ড. ইউনূস। একই দিনে হুয়াই কোম্পানির উচ্চ-প্রযুক্তিসম্পন্ন এন্টারপ্রাইজ পরিদর্শন করবেন তিনি। ২৯ মার্চ চীনের বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয় পিকিং ইউনিভার্সিটি তাকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি দেবে এবং সেখানে তিনি বক্তব্য রাখবেন। পরে বেইজিং থেকে চীনের একটি বিমানে ঢাকায় ফেরার কথা রয়েছে প্রধান উপদেষ্টার।

জানুয়ারির শেষের দিকে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই’র আমন্ত্রণে বেইজিং সফর করেছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো: তৌহিদ হোসেন। তার সফরটি বেশ সফল হিসেবে দেখছে ঢাকার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ওই সফরে বাংলাদেশের চীন থেকে প্রাপ্ত ঋণ পরিশোধের সময় বাড়ানো, সুদহার কমানোর আশ্বাস, কুনমিংয়ের তিনটি হাসপাতালে বাংলাদেশী রোগীদের চিকিৎসার জন্য নির্ধারণ, ঢাকায় চীনের দ্বারা একটি বিশেষায়িত হাসপাতাল নির্মাণসহ সাংহাই-কুনমিং-চট্টগ্রামের মধ্যে ফ্লাইট চালুর সিদ্ধান্ত এসেছে।

প্রধান উপদেষ্টার বেইজিং সফরে ছয় থেকে আটটি সমঝোতা স্মারক সই হওয়ার কথা রয়েছে। পাশাপাশি এ সফরে চারটি ঘোষণা আসবে। যার মধ্যে বেশ কয়েকটি প্রকল্পের অর্থায়নের জন্য বাংলাদেশকে এক থেকে দুই বিলিয়ন ডলার ঋণ সহায়তার ঘোষণা দেবে চীন; যেখানে মোংলা বন্দরের আধুনিকায়নে অর্থায়ন যুক্ত থাকবে। তবে ধারণা করা হয়, তার সফরে দ্বিপক্ষীয় চাওয়া-পাওয়ার চাইতে বেশি গুরুত্ব পাবে রাজনৈতিক সম্পর্ক ও ভূ-রাজনীতি। বিশেষ করে, অন্য দেশগুলোকে বিভিন্ন ধরনের বার্তা দেয়ার কৌশল হতে পারে এই সফরের মূল লক্ষ্য। কৌশলগত অংশীদার নয়, বন্ধু হিসেবে চীনের সাথে কাজ করবে সরকার। এই সফরে হবে সমঝোতা, মোংলা বন্দরের আধুনিকায়ন করবে চীন। কূটনৈতিক সূত্রগুলো ধারণা করছে, প্রধান উপদেষ্টার বেইজিং সফরে চাওয়া-পাওয়ার হিসাব মুখ্য নয়; বরং রাজনৈতিক বার্তাটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। মূল কথা হলো এই সরকারের সমর্থনে চীন থাকায়, এটি প্রতিবেশী দেশগুলোর জন্য একটি মেসেজ। সবচেয়ে বড় কথা হলো প্রেসিডেন্ট শির সঙ্গে বৈঠক, আর সেটি হবে পূর্ণাঙ্গ দ্বিপক্ষীয় বৈঠক। এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রাজনৈতিক, কৌশলগত, বাণিজ্যিক, উন্নয়ন সহযোগিতা ও সামরিক দিক বিবেচনায় চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সাথে বৈঠকে খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। ওই বৈঠকে নজর থাকবে ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া ছাড়াও বিভিন্ন দেশের।

এক কথায় এই সফরে প্রাপ্তির চেয়ে বিশ্ব তথা প্রতিবেশী রাষ্ট্রের কাছে বাংলাদেশের মর্যাদা বৃদ্ধি পাবে। তবে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ বাংলাদেশের ভারসাম্য পররাষ্ট্রনীতির বিষয়ে সজাগ থাকবেন। বিশেষ করে চীনের সাথে সম্পর্ক উন্নয়ন করতে গিয়ে এমন কিছু করবেন না, যেটি অন্য বড় শক্তিগুলোর অসন্তোষের কারণ হতে পারে। এই সফর ঘিরে অন্য আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক শক্তিগুলো কী প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারে, সেটি বিবেচনায় রাখবেন তিনি।

বাংলাদেশ চীন সফর থেকে কী পাবে তার চেয়েও বড় বিষয় হলো প্রতিবেশীদের কিছু বার্তা দেয়ার জন্য হলেও চীনের সাথে ভালো সম্পর্ক থাকা দরকার। বিশেষ করে, গত ৫ আগস্ট বাংলাদেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কে অস্বস্তি দেখা দেয়। অন্তর্বর্তী সরকার সাত মাস পার করলেও দুই প্রতিবেশীর মধ্যে সম্পর্কের টানাপড়েন থামছে না। যদিও বাংলাদেশের ভারতের সাথে সম্পর্ক আরো খারাপ না হওয়ার নীতি নিয়ে ভাবছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এমন পরিস্থিতিতে ভারতের বিকল্প খোঁজার পাশাপাশি দেশটির সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে এই চীন সফর কৌশলগত পন্থা হবে বলে আশা করা যায়। তবে চীন সফর নিয়ে ভারতের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রেরও উদ্বেগ থাকবে। কারণ দক্ষিণ এশিয়ায় ব্যবসায়-বাণিজ্যসহ সব ক্ষেত্রে চীনের প্রভাব বাড়ছে। যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম লক্ষ্য হচ্ছে চীনের প্রভাব ঠেকানো। সে জন্য চীনের প্রভাব ঠেকাতে যুক্তরাষ্ট্র ভারতকে সহায়ক শক্তি হিসেবে দেখছে। ভারসাম্য রক্ষা করে এই সফরকে ব্যবহার করার মতো প্রজ্ঞা ড. ইউনূসের সরকারের রয়েছে বলে আমরা আশা করি।

প্রধান উপদেষ্টার বেইজিং সফরের সময় গুরুত্বপূর্ণ কিছু ঘোষণা আসতে পারে। হতে পারে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ৫০তম বার্ষিকীতে এই সফর একটি মাইলফলক। তবে চীন জানে, বর্তমান বাংলাদেশের সরকার অন্তর্বর্তীকালীন, ফলে চীনের পক্ষে হয়তো বড় ধরনের কোনো প্রতিশ্রুতি দেয়া সম্ভব হবে না। অন্তত বাংলাদেশে যেন চীনের প্রকল্প চলমান থাকে, সেটি তাদের চাওয়া থাকবে। নতুন করে হয়তো কিছু প্রকল্পের ঘোষণা আসতে পারে, কিছু সমঝোতা স্মারক সই হতে পারে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত নিবিড়ভাবে ড. ইউনূসের চীন সফর পর্যবেক্ষণ করবে। সে জন্য ভারসাম্য কূটনীতিতে সরকার গুরত্ব দিতে চাইবে বলে মনে হয়।

আগেই বলেছি, প্রধান উপদেষ্টার এই সফর যতটা না অর্থনৈতিক তার চেয়ে বেশ ভূ-রাজনৈতিক। সুতরাং বড় আর্থিক সমর্থন নিয়ে আশা ও সংশয় দুই-ই থাকছে। তবে বাংলাদেশ চীনের সাথে আরো গভীর অর্থনৈতিক সহযোগিতার দিকে নজর দিচ্ছে। কারণ, প্রধান উপদেষ্টা এমন এক সময়ে এ সফরে যাচ্ছেন যখন চীন থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ঋণ সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়ে করা চুক্তি শূন্যের কোটায় নেমে এসেছে। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) চীনের সাথে আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন করে কোনো ঋণ সহায়তার চুক্তি হয়নি বাংলাদেশের। যা চুক্তি রয়েছে তার সবই ২০২৩-২৪ অর্থবছরের আগে। এ সময় আগে প্রতিশ্রুত ঋণের অর্থ ছাড় হয়েছে ২৭ কোটি ডলারের মতো।

এই সফরে বাংলাদেশ চীনের সাথে বাণিজ্য সম্পর্ক জোরদার, চীনা বিনিয়োগ আকর্ষণ এবং স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা ও পানি ব্যবস্থাপনাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়াতে আগ্রহী। চীনের কাছ থেকে আরো বিনিয়োগ এবং চীনে পণ্যের রফতানি বাড়ানোরও পরিকল্পনা রয়েছে। তবে চীনারা বুদ্ধিমান। তারা এখন সুযোগ বুঝে অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। ইতিবাচক ভাবভঙ্গি দেখাচ্ছে ঠিক। তারপরও অন্তর্বর্তী সরকার বলেই সহযোগিতার গতি কমিয়ে দেবে বলে মনে হয় না। দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নয়নের গতি অব্যাহত থাকবে বলেই মনে হচ্ছে। প্রকল্প অর্থায়ন-বিষয়ক কিছু হবে না হয়তো। কারণ এ সরকারের অর্থায়ন উপযোগী প্রকল্প তো এই সরকারের হাতে নেই। সে সুযোগও সরকার পায়নি। কাজেই এ রকম কিছু না হয়ে দুই পক্ষের জন্য যে সহজ ক্ষেত্রগুলো আছে, সেগুলোই হয়তো অগ্রাধিকারে থাকবে। আর্থিক সহায়তা, বাজেট সহায়তা, বাণিজ্য সহায়তা, রোহিঙ্গা-বিষয়ক সহায়তা, ছোট প্রকল্পগুলোয় সহায়তা দেয়া, কিছু ক্ষেত্রে ঋণ পরিশোধের সময় বৃদ্ধি করা এ ধরনের বিষয়গুলো নিয়ে আসন্ন সফরের ক্ষেত্রে প্রত্যাশা করা যেতে পারে। তিস্তার বিষয়ে কোনো অগ্রগতি হবে কি না সে বিষয়ে এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

চীন ইতোমধ্যে বাংলাদেশী রোগীদের জন্য চীনে চিকিৎসা সহযোগিতা শুরু করেছে। রোগীদের প্রথম দল ইতোমধ্যে চীনে চিকিৎসার জন্য গেছে। বাংলাদেশ চায় চীন ঢাকায় একটি আধুনিক হাসপাতাল স্থাপনে বিনিয়োগ করুক। এখন যা কিছু আশা করা হচ্ছে তার চেয়েও বড় হবে এই সফর-পরবর্তী নির্বাচিত সরকারের জন্য দীর্ঘমেয়াদি অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার ক্ষেত্র তৈরি করবে। সফরের স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারক পরের সরকারের জন্য বিনিয়োগ প্রতিশ্রুতির পথ প্রশস্ত করবে। দুই দেশের সম্পর্ককে আরো শক্তিশালী করবে। তিস্তার মতো বড় প্রকল্পগুলোর জন্য সম্ভবত নির্বাচনের পর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতে পারে। তবে চীনের কাছ থেকে বিনিয়োগ বা বড় চুক্তি নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে অন্তর্বর্তী সরকার কোনো বাধা নাও হতে পারে। কারণ চীন জানে, এই অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশের জনগণের পূর্ণ ম্যান্ডেট নিয়েই এগিয়ে যাচ্ছে। সুতরাং তিস্তা ইস্যুতে ঢাকার নিজস্ব স্বার্থে বেইজিংয়ের সাথে অংশীদারিত্ব করা উচিত। আগামী এপ্রিল মাসে ঢাকায় আয়োজিত বিনিয়োগ শীর্ষ সম্মেলনকে অর্থনৈতিক সম্পর্ক এগিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে চীনের সাথে বন্ধুত্ব একটি প্রতিশ্রুতিশীল প্ল্যাটফর্ম হতে পারে। জ্বালানি, স্বাস্থ্যসেবা ও অবকাঠামোতে চীনের আগ্রহকে বাংলাদেশকে কাজে লাগাতে হবে।

বাংলাদেশে চীন থেকে নতুন কোনো ঋণ সহায়তার আনুষ্ঠানিক প্রতিশ্রুতি মিলছে না প্রায় দুই অর্থবছর ধরে। টানা চতুর্থ মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের ভঙ্গুরতার ক্ষেত্রগুলো আগেই অনুধাবন করতে পেরেছিল চীন। পটপরিবর্তন হতে পারে এমন অনুমানও করতে পেরেছিলেন বেইজিংয়ের সরকার সংশ্লিষ্টরা। এ কারণে গত বছরের জুলাইয়ের শুরুতে অনুষ্ঠিত চীন সফরেও অবকাঠামো খাতে উল্লেখযোগ্য তেমন কোনো ঋণ চুক্তির ঘোষণা আসেনি। পূর্বনির্ধারিত সূচি অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের আগে দেশে ফিরে এসেছিলেন শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগের পতনের পর আগস্টে অন্তর্বর্তী সরকারের নীতিনির্ধারণী মহল থেকে চীনের পক্ষ থেকে সাত বিলিয়ন ডলার সহায়তার আশ্বাস পাওয়ার কথা জানানো হয়। যদিও এ নিয়ে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো চুক্তি সই হয়নি।

পরিশেষে বলতে হয়, চিনের এই সফর আঞ্চলিক প্রভাব বিস্তারে তাৎপর্যপূর্ণ। বাংলাদেশকে অবশ্যই তার স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। রোহিঙ্গা সঙ্কট ও পানি ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের মতো গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুগুলোকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। এই সফর রোহিঙ্গা সঙ্কট পুনর্বিবেচনার নতুন সুযোগ তৈরি করছে। কারণ ২০২৪ ও ২০২৫ সালে মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি অনেকটাই ভিন্ন। সুতরাং প্রধান উপদেষ্টার চীন সফরে দেশটির কাছ থেকে বড় ধরনের অর্থনৈতিক সহায়তার চেয়েও দুই দেশের সম্পর্কের ক্রমবর্ধমান গতিশীলতার বার্তা দিচ্ছে। যদি না চীন রাজনৈতিকভাবে নির্বাচিত সরকার না আসা বাংলাদেশকে আর্থিক সহায়তা দেয়ার ক্ষেত্রে কিছুটা রক্ষণশীল হয় তা হলে অন্তত অর্থনৈতিকভাবে এই সফর বাংলাদেশের জন্য একটি মাইল ফলক হতে পারে। বিশেষ করে চীন যদি বাংলাদেশের জনগণের জন্য সহযোগিতার কথা বিবেচনা করে তবে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে এই সফর বাংলাদেশের জন্য বয়ে আনবে স্থিতিশীলতা, ঐক্য ও গণতন্ত্রের বিকাশ। বৈশ্বিক জোটের রদবদলের মধ্যে বাংলাদেশ যখন তার পথ নির্ধারণ করতে চাচ্ছে, তখন এই সফর কৌশলগত বিবেচনার সঙ্গে অর্থনৈতিক আবশ্যিকতার ভারসাম্য বজায় রেখে চীনের সাথে সম্পর্ক আরো গভীর করার স্পষ্ট অভিপ্রায়ের ইঙ্গিত পাবে বাংলাদেশ। এই সফলতা এমন প্রতীকী তাৎপর্য বহন করবে যা ভবিষ্যতে পারস্পরিক সহযোগিতার ভিত্তি তৈরি করবে।

লেখক : অর্থনীতিবিদ, গবেষক ও কলামিস্ট

[email protected]



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews