অর্থনীতি বিষয়ের সুপরিচিত গবেষণা সংস্থা সানেম বলছে, দেশে দারিদ্র্যের সার্বিক হার বেড়েছে। নভেম্বর-ডিসেম্বরে পরিচালিত জরিপ থেকে পাওয়া তাদের হিসাবে দেশে দারিদ্র্যের হার ৪২ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। এক বছর আগের চেয়ে দারিদ্র্য পরিস্থিতি প্রায় দ্বিগুণ দেখা যাচ্ছে জরিপে। নিঃসন্দেহে মহামারির আঘাত এটা।

কিন্তু মহামারি সবাইকে পরাভূত করতে পারেনি। চায়ওনি হয়তো। মারির মধ্যেই দেশে ছয় মাসে কোটিপতি ব্যাংক হিসাব বেড়েছে ৪ হাজার ৮৬৩টি। ২০২০-এর মার্চে কোটি টাকার বেশি আমানত রাখা ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ছিল ৮২ হাজার ৬২৫টি। সেপ্টেম্বরে তুমুল করোনার মধ্যে সেটা দাঁড়িয়েছে ৮৭ হাজার ৪৮৮টি। কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে পাওয়া ছয় মাসের এসব তথ্য পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে সম্প্রতি।

সানেমের জরিপ সারা দেশে হয়নি। তাদের নমুনা সংখ্যা ৫ হাজার ৫৭৭। এ রকম জরিপ দেশজুড়ে আরও ব্যাপক আকারে হলে আরও নিখুঁত চিত্র পাওয়া যাবে। তবে সীমিত এই জরিপও মাঠের পরিস্থিতির কিছু ইঙ্গিত নিশ্চয়ই দেয়।

নতুন করে দারিদ্র্যের দীর্ঘমেয়াদি চক্রে মানুষ
সানেমের খানা জরিপে দেখা গেছে, করোনার প্রভাবে উপায়হীন বিপুল মানুষ খাবারের বাইরে অন্য অনেক খরচ বাদ দিচ্ছে। খাবারের তালিকাও কাটছাঁট করেছে। অনেকে সঞ্চয় ভেঙেছে এবং ভাঙছে। এসবের সঙ্গে দারিদ্র্য বাড়া–কমার সম্পর্ক সবার জানা। সানেম বাড়তি যেটা বলছে, নতুন পরিস্থিতিতে দরিদ্র মানুষ শিক্ষা ব্যয়ও কমাতে বাধ্য হচ্ছে। চিকিৎসা খরচ সামলাতে পারছে না।

২০১৮ সালের তুলনায় ২০২০ সালে অতিদরিদ্র পরিবারগুলো আগের বছরের তুলনায় প্রায় ৫০ ভাগের বেশি শিক্ষা ব্যয় কমিয়ে ফেলার তথ্য দিয়েছে। এর মানে দাঁড়ায়, দীর্ঘমেয়াদি এক দারিদ্র্যের চক্রে ঢুকছে এই মানুষেরা। কম শিক্ষা মানেই কম মজুরি, আর কম আয়ের এক দুষ্টচক্রে ঢুকে পড়া। এভাবে বিপুল জনগোষ্ঠী যখন শিক্ষা ব্যয় কমাতে বাধ্য হয়, তখন সমাজে অসমতা কাঠামোগত রূপ পেতে থাকে। এই অর্থে বাংলাদেশের আজকের নতুন পরিস্থিতি একধরনের নীরব কাঠামোগত সহিংসতার মতো; দরিদ্র ও হতদরিদ্ররা যার শিকার।



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews