মধ্যপ্রাচ্য থেকে ইউক্রেন যুদ্ধ— সব সংকট সমাধানের কেন্দ্রস্থলে পরিণত হয়েছে মুসলিম বিশ্বের হৃদয়ভূমি সৌদি আরব। এসব উদ্যোগে নেতৃত্ব দিয়ে ক্রমেই বিশ্বনেতার পরিচয়ে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করছেন সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। সাবেক মার্কিন প্রশাসনের নানা চাপে বেকায়দায় পড়লেও, নিজের কৌশলগত দক্ষতা ও দূরদর্শিতার মাধ্যমে সমহিমায় উদ্ভাসিত হয়েছেন তিনি। যুবরাজের নানা উদ্যোগে বিশ্বজুড়ে সুন্নি মুসলিমদের প্রভাবও বৃদ্ধি পাচ্ছে।

ইউক্রেন সংকট যখন বিশ্বনেতাদের জন্য কঠিন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছিল, তখনই মধ্যস্থতার জন্য এগিয়ে আসে সৌদি আরব। রিয়াদে আয়োজিত বৈঠকে দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতা গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যস্থতায় সৌদি আরবের এই প্রচেষ্টা যুবরাজের বিশ্ব নেতৃত্বের অবস্থানকে আরও দৃঢ় করছে।

এই বৈঠক শুধু ইউক্রেন সংকট সমাধানের জন্যই নয়, বরং যুদ্ধ পরবর্তী গাজার ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনার একটি কৌশলও বটে। মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএন-এ দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সৌদি এক কর্মকর্তা বলেন, এই আলোচনার মাধ্যমে সৌদি আরব আন্তর্জাতিক কূটনীতির কেন্দ্রে পরিণত হচ্ছে।

বিশ্লেষকরা মনে করেন, যুবরাজ সালমান সৌদি আরবকে শুধু জ্বালানি তেল সমৃদ্ধ একটি রক্ষণশীল দেশ হিসেবে সীমাবদ্ধ না রেখে, এক শক্তিশালী বৈশ্বিক কৌশলগত খেলোয়াড় হিসেবে প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছেন। এই উদ্যোগ সৌদি আরবের মর্যাদাকে বহুগুণ বাড়িয়ে তুলবে এবং দেশটির পরোক্ষ প্রভাব আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক পর্যায়ে আরও সুসংহত হবে। সৌদি ধারাভাষ্যকার আলী শিহাবীর মতে, ইউক্রেন-রাশিয়া বৈঠক দেশটির কূটনৈতিক রূপান্তরের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে নিরপেক্ষতার নীতিতে অটল থেকেছে সৌদি আরব, যা বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংঘাতে দেশটির গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি করেছে। এছাড়া, শত শত কোটি ডলারের বিনিয়োগ আকর্ষণের লক্ষ্যে নীতিগত পরিবর্তন এনেছে রিয়াদ, যা যুবরাজের ভিশন ২০৩০ বাস্তবায়নে সহায়ক ভূমিকা রাখবে। এই ভিশনের মাধ্যমে সৌদি আরবের তেলনির্ভর অর্থনীতিকে বহুমুখীকরণ করা হচ্ছে।

ইয়েমেন যুদ্ধ থেকে সরে এসে যুবরাজ সালমান কৌশলগতভাবে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে কাজ করছেন। এমনকি দীর্ঘদিনের প্রতিদ্বন্দ্বী ইরানের সঙ্গেও সম্পর্ক স্বাভাবিক করার চেষ্টা চালাচ্ছেন। একইসঙ্গে চীন ও রাশিয়ার সঙ্গে তার সম্পর্ক আরও দৃঢ় হয়েছে, পাশাপাশি পশ্চিমা বিশ্ব বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গেও সৌদি আরবের ঘনিষ্ঠতা বজায় রয়েছে।

বিশ্লেষকদের মতে, আগামী চার বছর মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে মার্কিন প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে, আমেরিকান নেতৃত্বের চাপ সামলানো এবং আঞ্চলিক স্বার্থের ভারসাম্য রক্ষা করতে যুবরাজ সালমানকে নিতে হবে সুকৌশলী পদক্ষেপ।

আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সৌদি আরবের দ্রুত বিকাশ এবং মোহাম্মদ বিন সালমানের নেতৃত্ব গুণের কারণে বিশ্ব রাজনীতির গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রস্থলে পরিণত হচ্ছে রিয়াদ। এই পরিবর্তন মধ্যপ্রাচ্যের ভূ-রাজনৈতিক চিত্রে নতুন মাত্রা যোগ করছে, যেখানে সৌদি যুবরাজ কার্যত বিশ্বকে নতুন দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন।

ভিডিও দেখুন: https://youtu.be/OvCJaYZMATc?si=4wkT0VyxT3dygP25



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews