উন্নয়নশীল দেশে, বিশেষ করে শিশু ও নারীদের প্রতি যৌন সহিংসতা বৃদ্ধি পাওয়া একটি জটিল সামাজিক সমস্যা, যার পেছনে বহু কারণ কাজ করে। জাতিসংঘ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনের গবেষণায় এই সমস্যার নানা দিক উঠে এসেছে। নিচে কয়েকটি প্রধান কারণ তুলে ধরা হলো—
১. সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কারণ: ক. পিতৃতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা: অনেক অনুন্নত সমাজে পুরুষতান্ত্রিক মনোভাব এতটাই গভীরে প্রোথিত যে নারীর ওপর সহিংসতা স্বাভাবিক হিসেবে বিবেচিত হয় এবং প্রায়ই ভুক্তভোগীকে দোষারোপ করা হয়। খ. ক্ষমতার অস্ত্র হিসেবে ধর্ষণ: যুদ্ধ বা সামাজিক অস্থিরতার সময় ধর্ষণকে নিয়ন্ত্রণ ও দমন করার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়। গ. ভুক্তভোগীর নীরবতা ও বিচারহীনতা: সামাজিক লজ্জা, প্রতিশোধের ভয় এবং বিচার না পাওয়ার আশঙ্কায় অনেকেই অভিযোগ করে না।
২. আইনি ও প্রাতিষ্ঠানিক ব্যর্থতা: ক. দুর্বল আইন ও প্রয়োগের অভাব: অনেক দেশে ধর্ষণের বিরুদ্ধে আইন দুর্বল এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী হয় দুর্নীতিগ্রস্ত, নয়তো অপরাধ দমনে যথাযথ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নয়। খ. বিচারব্যবস্থার দীর্ঘসূত্রতা: মামলার নিষ্পত্তি হতে দীর্ঘ সময় লাগে, অপরাধীরা রাজনৈতিক প্রভাব বা দুর্নীতির কারণে শাস্তি এড়িয়ে যায়।
৩. অর্থনৈতিক কারণ: ক. দারিদ্র্য ও বেকারত্ব: অর্থনৈতিক সংকট ও হতাশা পারিবারিক সহিংসতা এবং অপরাধপ্রবণতা বাড়িয়ে তোলে। খ. মানব পাচার ও যৌন শোষণ: দরিদ্র নারী ও শিশুরা পাচার ও যৌন শোষণের শিকার হয়, যা অপরাধের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দেয়।