ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের সর্বনিম্ন গতি ২০ এমবিপিএস করার প্রস্তাব করেছে ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো। এখন থেকে তারা ৫০০ টাকায় ৫ এমবিপিএস থেকে বাড়িয়ে ১০ এমবিপিএস গতির সেবা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। শনিবার রাজধানীর বিটিআরসি ভবনে ইন্টারনেট সেবার মান নিয়ে এক সেমিনারে এই ঘোষণা দেয় ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডটার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (আইএসপিএবি)।
এ সময় সাশ্রয়ী মূল্যে ইন্টারনেটের মানসম্মত সেবা দেওয়ার বিষয়ে মোবাইল অপারেটরদের আহ্বান জানানো হয়।
টেলিকম অ্যান্ড টেকনোলজি রিপোর্টার্স নেটওয়ার্ক, বাংলাদেশ (টিআরএনবি) এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত) ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, দ্রুতই সর্বনিম্ন গতি হিসেবে ২০ এমবিপিএসের নিশ্চয়তা দেওয়া হবে। এজন্য ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট প্রোভাইডারদের অ্যাকটিভ শেয়ারিংসহ প্রয়োজনীয় পলিসি সাপোর্ট দিতে নীতি সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
তৈয়্যব বলেন, বাংলাদেশের মানুষ ইন্টারনেট ক্রয়ক্ষমতায় পিছিয়ে রয়েছে। এই খাতের ব্যবসায়ীদের ইন্টারনেটের দাম কমিয়ে গুনগত মান বাড়াতে হবে।
টেলিযোগাযোগ খাতে বড় ধরনের সংষ্কার করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, লাইসেন্সিং ক্যাটাগরি কমিয়ে তিনটিতে নিয়ে আসা হবে। ডিজিটাল সেবাকে প্রাধান্য দেওয়া দিয়ে নেটওয়ার্ক টপোলজিতে পরিবর্তন আনা হবে। একই সঙ্গে টেলিযোগাযোগ খাতে রাজনৈতিক প্রভাব ছেঁটে ফেলা হবে। টেলিযোগাযোগ আইন ২০০১ আইনে পরিবর্তন আনা হবে, যাতে করে ইন্টারনেট সেবা বন্ধের সুযোগ চিরতরে বন্ধ দেওয়া যায়। কারণ ইন্টারনেট বন্ধে ফ্রিল্যান্সাররা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, বিনিয়োগে সমস্যা দেখা দিয়েছে। আর ইন্টারনেট বন্ধ হবে না- এটা বিনিয়োগকারীদের জানাতে হবে।
বিটিআরসি চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) মো. এমদাদ উল বারী বলেন, যারা ফিক্সড ব্রডব্যান্ড সেবা দেবে তারা ওয়্যারলেস দিতে পারবে না, আর যারা ওয়্যারলেস সেবা দেবে তারা ফিক্সড ব্রডব্যান্ড সেবা দিতে পারবে না। আইএসপি লাইসেন্সিংয়ে থানা পর্যায়ে যারা কাজ করবে তাদের লাইসেন্স লাগবে না, শুধু নিবন্ধন করতে হবে।
ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডটার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (আইএসপিএবি) সভাপতি ইমদাদুল হক বলেন, ব্রডব্যান্ডে আইআইজি থেকে দাম কমানোর সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে না। সে কারণে জনগণের কাছে সেবা পৌঁছাতে পারছি না।
আইএসপিএবি সাধারণ সম্পাদক নাজমুল করিম ভূঞা বলেন, কেন একটিভ শেয়ারিং হচ্ছে না জানি না। প্রতিমাসে আইএসপিরা একশ’ কোটি টাকা লোকসান দেয়।
ফাইবার এট হোমের চেয়ারম্যান মঈনুল হক সিদ্দিকী বলেন, ইন্টারনেট এখন লাইফ লাইন। ইন্টারনেটের ব্যবহার বাড়াতে হবে। এজন্য নীতিমালা তৈরি হোক।
গত ৮ মাসে ১৭ শতাংশ ইন্টারনেটের দাম কমানো হয়েছে হয়েছে বলে দাবি করে এমটব মহাসচিব মোহাম্মদ জুলফিকার বলেন, বিটিআরসির একটি কস্ট মডেলিং করা উচিত, তাহলে আমরা বুঝতে পারবো আমরা কত কম দামে সেবা দেবো। ইন্টারনেটের গ্রাহক কিন্ত বাড়েনি। এক্ষেত্রে গুনগত কনটেন্ট একটি ইস্যু।
টেলিযোগাযোগ বিশেষজ্ঞ মোস্তফা মামুন হোসেন বলেন, মোবাইল অপারেটরেরা লাভ করছে। বিদেশের তুলনায় বাংলাদেশের মোবাইল অপারেটরদের লাভের শতাংশ অনেক বেশি।
তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ সুমন আহমেদ সাবির বলেন, আমাদের লক্ষ্য ঠিক করা উচিত যে, আগামী ৩ বছর বা ৫ বছরে ইন্টারনেট কোথায় নিয়ে যেতে চাই।