ইমরান হুসাইন

"হাসিনা আমারে শান্তি দিছে, আল্লাহ তারেও যেনো শান্তিতে রাহে" কথাটি বলেছেন মানিকগঞ্জের দরিদ্র এক বৃদ্ধা। যিনি প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পেয়ে অত্যন্ত আনন্দ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। বৃদ্ধার কথাটা কোন সাধারণ কথা নয়। এটি আসলে তার আনন্দের বহিঃপ্রকাশ। যে ঘর পেয়ে তিনি খুবই খুশি হয়েছেন এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্যও দোয়া করেছেন। একজন মানুষের মুখ থেকে এমন একটি কথা তখনই বের হয় যখন যে অতি আনন্দিত হন। এমনভাবে যেসকল অস্বচ্ছল মানুষগুলো প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া এই উপহার পাচ্ছেন তাদের উচ্ছ্বাসও অনেক বেশি। একজন অসহায় মানুষের থেকে এমন আশীর্বাদ যুগযুগ ধরে বাঁচিয়ে রাখে।

আমার দেশের একটি মানুষও গৃহহীন বা ভূমিহীন থাকবে না এমন ঘোষণা রয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। ২০২০ সালের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা দিয়েছিলেন, মুজিবর্ষে দেশের কোনো মানুষ গৃহহীন থাকবে না। সরকার সকল ভূমিহীন, গৃহহীন মানুষকে ঘর তৈরি করে দেবে। সে অনুযায়ী শুরু হয় প্রতিটি অঞ্চলে গৃহহীনদের তালিকা তৈরির কাজ। তালিকা তৈরি শেষে শুরু হয় করে বাড়ি নির্মাণের কাজ। এরইমধ্যে প্রায় ৭০ হাজার বাড়ির কাজ শেষ হয়েছে। স্বপ্ন বাস্তবায়নে উদ্যমী একজন ব্যক্তিত্ব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নকে বাস্তবে রুপদান করছেন।

একজন মানবিক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, যিনি সারাক্ষণ দেশ ও জাতির কল্যাণে সর্বদা কাজ করে চলেছেন। করোনার এই মহামারিতেও সকল বাধা অতিক্রম করে মানবতার সেবায় বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করে চলেছেন। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাকে যিনি ধীরে ধীরে বাস্তবে রুপদান করে চলেছেন। ক্ষমতার উচ্চ আসনে অবস্থান করেও যিনি দেশের গরীব-দুখী ও খেটে খাওয়া মানুষের কথা ভাবেন ও তাদের মঙ্গলের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন তিনি হলেন জাতীর পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যার মানবিকতার ছোয়া দেশ ছাড়িয়ে বৈশ্বিক পর্যায়েও স্থান করে নিয়েছে।

সমাজের গৃহহীন-ভূমিহীন মানুষের কথা চিন্তা করে আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাস্তবায়ন করেছেন। লক্ষ্য লক্ষ্য মানুষের মাথা গোঁজার ঠাঁই করে দিচ্ছেন। এক প্রতিবেদনে দেখা যায় ১৯৯৭ সালের ১৯ মে কক্সবাজার জেলাসহ পার্শ্ববর্তী এলাকা ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় বহু পরিবার গৃহহীন হয়ে পড়ে। সে সময়ের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওই বছর ২০ মে এলাকাটি পরিদর্শনে যান। তিনি মানুষের দুঃখ-দুর্দশা দেখে সহানুভূতিশীল হয়ে পড়েন এবং গৃহহীন পরিবারকে পুনর্বাসনের তাৎক্ষণিক নির্দেশ দেন।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৯৭ সালে আশ্রয়ণ' প্রকল্প গ্রহণ করা হয়।প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার প্রেক্ষিতে কক্সবাজারের স্থানীয় একজনের দানকৃত জমিতে, বাংলাদেশ নৌবাহিনীর মাধ্যমে ঘূর্ণিঝড় ও নদীভাঙন কবলিত ভূমিহীন, গৃহহীন ও ছিন্নমূল পরিবার পুনর্বাসনের লক্ষ্যে ১৯৯৭ সালে আশ্রয়ণ নামে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। প্রকল্পটি প্রধানমন্ত্রীর প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হচ্ছে। কক্সবাজার জেলা হতেই শুরু হয়ে ভূমিহীন, গৃহহীন ও ছিন্নমূল পরিবার পুনর্বাসনের জন্য আশ্রয়ণ প্রকল্পের কার্যক্রম এখন সারা দেশে দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। সম্পূর্ণ সরকারের অর্থায়নে ১৯৯৭ সাল থেকে জানুয়ারি ২০২১ পর্যন্ত চারটি ধাপে আশ্রয়ণ প্রকল্পে মোট তিন লাখ ৮৯ হাজার ৯৫৬টি পরিবার পুনর্বাসন করা হয়।

দেশের তৃণমূল পর্যায়ের গৃহহীন, ভূমিহীন, অসহায় মানুষদের কথা চিন্তা করে তাদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর এই বিশাল উপহার ইতিহাসে এক অনবদ্য সৃষ্টি হয়ে থাকবে আজীবন। স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছরে এমন দৃষ্টান্তমূলক কাজ আগে কখনও দেখা যায়নি আর হয়তো দেখাও যাবে না ভবিষ্যতে। কেননা সাধারণ মানুষ নিয়ে চিন্তা করা ও তাদের কল্যাণে কাজ করা মানুষ খুব কমই আছে। মুজিববর্ষে শেখ হাসিনার এই উপহার বাংলার মানুষ সারাজীবন মনে রাখবে। শুধু বাংলার মানুষ না সারা বিশ্বের মানুষের কাছেই স্মরণীয় হয়ে থাকবে।

শুধু তাই নয় বাংলাদেশ ছাপিয়ে বৈশ্বিক পর্যায়েও প্রধানমন্ত্রীর মানবতার ছাপ এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে আছে। মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত লক্ষ্য লক্ষ্য রোহিঙ্গা শরণার্থীদের কথা আমরা সবাই জানি। বিতাড়িত অসহায় রোহিঙ্গাদের মানবতার চাদরে আগলে রেখেছেন তিনি। দেখিয়েছেন নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন।

মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতনে প্রাণ বাঁচাতে ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর আস্থার জায়গা এখন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যিনি আশ্রয় দিয়ে জীবন বাঁচিয়েছেন, খাবার দিয়ে ক্ষুধা নিবারণ করেছেন। সেই শেখ হাসিনার প্রতি তাদের শ্রদ্ধা আর আস্থার জায়গা তৈরি হয়েছে। মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অত্যাচার-নির্যাতনে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের বেশিরভাগই আহত ও ঘরহীনছিল।

পরে তাদেরকে আশ্রয় দেয়া ও নতুন ঠিকানা করে দিয়েছেন নোয়াখালীর ভাসানচর। প্রথম দফায় ১ হাজার ৬৪২ জন রোহিঙ্গা ভাসনচরে পৌঁছেছেন এর আগে মালয়েশিয়া যেতে সমুদ্র উপকূলে আটকা পড়া আরো তিন শতাধিক রোহিঙ্গা সেখানে রাখা হয়। এবং দ্বিতীয় ধাপে ১১৩৪ জন রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে স্থানান্তর করা হয়।

প্রায় ৩ হাজার ১০০ কোটি টাকায় নির্মিত রোহিঙ্গাদের জন্য এই অস্থায়ী আবাসস্থল এখন কর্মমুখর। রোহিঙ্গাদের জন্য আধুনিক বাসস্থান ছাড়াও বেসামরিক প্রশাসনের প্রশাসনিক ও আবাসিক ভবন, আইন প্রয়োগকারী সংস্থার ভবন, মসজিদ, স্কুল হিসেবে ব্যবহারের জন্য প্রয়োজনীয় ভবন, হাসপাতাল, ক্লিনিক, খেলার মাঠ, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালিত হচ্ছে।

ভাসানচরে অবস্থানরত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের তত্ত্বাবধানে ৩৬টি শেল্টারকে মোডিফিকেশন করে দুটি ২০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল এবং চারটি কমিউনিটি ক্লিনিক তৈরির কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। এ সংক্রান্ত স্বাস্থ্যকর্মী, চিকিৎসক ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে নিয়ন্ত্রিত হবে।

শুধু এখানেই শেষ নয়,করোনাভাইরাসের মহামারিতে দেশের সংকটের সময়ে গরীব কৃষকদের সাহায্য করা। কাজ হারানো বহু মানুষের খাদ্য সহযোগিতা ভিক্ষুক নাজিমুদ্দিনের গৃহায়ণ ব্যবস্থা করে মানবতার এর বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।মানবতার সেবায় নিজেকে নিয়জিত রেখে দেশ ও জাতির কল্যাণ্যে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণে কাজ করে চলেছেন অবিরাম। দেশের সকল বাধা অতিক্রম করে,সকল কুচক্রীদের তুচ্ছজ্ঞান করে দেশ ও জাতির কল্যাণে ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের লালিত স্বপ্ন পূরণে অবিরাম ধারায় কাজ এগিয়ে যাক মানবতার নেত্রী শেখ হাসিনা। এগিয়ে যাক বাংলাদেশ।

লেখক : শিক্ষার্থী বাংলা বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।

এইচআর/জেআইএম



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews