যাত্রী কল্যাণ সমিতির প্রতিবেদন

ঈদযাত্রায় ৩৫২ প্রাণহানি আগের চেয়ে ২১% কম

ঈদুল ফিতরের আগে-পরে ১৫ দিনে ৩৪০ সড়ক, রেল ও নৌ দুর্ঘটনায় ৩৫২ জনের প্রাণ গেছে। এ সংখ্যা আগের বছরের রোজার ঈদের তুলনায় ২০ দশমিক ৮৮ শতাংশ কম। গত বছরের তুলনায় দুর্ঘটনা কমেছে ২১ দশমিক ০৬ শতাংশ। দীর্ঘ ছুটির কারণে এ বছর দুর্ঘটনা ও দুর্ভোগ কমেছে।

যাত্রী কল্যাণ সমিতির প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। বুধবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলনে তারা এসব তথ্য জানিয়েছে।

সমিতির দুর্ঘটনা মনিটরিং সেলের প্রতিবেদনে বলা হয়, সড়ক-মহাসড়কে ৩১৫টি দুর্ঘটনায় ৩২২ জন নিহত ও ৮২৬ জন আহত হয়েছেন। রেলপথে ২১টি দুর্ঘটনায় ২০ জন নিহত ও ৮ জন আহত হয়েছেন। নৌপথে ৪টি দুর্ঘটনায় ১০ জনের প্রাণ গেছে। নিখোঁজ রয়েছেন একজন।

সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, সড়কে সবচেয়ে দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেলের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। ১৩৫টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১৫১ জন নিহত ও ১৫৫ জন আহত হয়েছেন। মোট সড়ক দুর্ঘটনার ৪২ শতাংশ এবং নিহতের প্রায় ৪৭ শতাংশ। সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহত ৭০ জন চালক, ৪৭ পরিবহনের শ্রমিক, ৫০ পথচারী, ৬০ নারী, ৪০ শিশু, ৩৩ জন শিক্ষার্থী। 

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর আন্তরিকতা এবং ভোক্তা অধিকার ও বিআরটিএ’র তৎপরতায় এবারের ঈদযাত্রা মাফিয়াতন্ত্র মুক্ত ছিল। সরকারের বিভিন্ন সংস্থার যাত্রীবান্ধব সিদ্ধান্তের কারণে মানুষ নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পেরেছে। ভবিষ্যতে এ ধরনের কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান মোজাম্মেল হক।

দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে সড়ক-মহাসড়কে মোটরসাইকেল, ব্যাটারিচালিত রিকশার অবাধ চলাচল, পর্যাপ্ত রোড মার্কিং বা সড়কবাতি না থাকা, সড়ক বিভাজকের অভাব, সড়ক ও যানবাহনের নির্মাণ ত্রুটি, উল্টোপথে যান চলাচল, চালকের অদক্ষতা এবং বেপরোয়া চলাচলকে দায়ী করা হয়। 

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ঈদকে কেন্দ্র করে গণপরিবহনগুলোতে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের কারণে বাসের ছাদে, ট্রেনের ছাদে, খোলা ট্রাকে, পণ্যবাহী পরিবহনে যাত্রী হয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দরিদ্র লোকজনকে বাড়ি যেতে হয়েছে।

বিশ্লেষণে দেখা যায়, দুর্ঘটনায় পড়া যানবাহনের ৩২ দশমিক ২৭ শতাংশ মোটরসাইকেল, ১৬ দশমিক ৫৬ শতাংশ বাস, ১৪ দশমিক ৮৬ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিকশা, ১৪ দশমিক ৪৩ শতাংশ ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান, ৮ দশমিক ০৬ শতাংশ কার-মাইক্রোবাস, ৭ দশমিক ২১ শতাংশ নছিমন-করিমন ও ৬ দশমিক ৫৮ শতাংশ সিএনজিচালিত অটোরিকশ। দুর্ঘটনার ৩৮ দশমিক ৪১ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে, ২১ দশমিক ২৬ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে ও ৩৪ দশমিক ৬ শতাংশ ফিডার রোডে ঘটেছে।

দুর্ঘটনা প্রতিরোধে মোটরসাইকেল ও ব্যাটারিচালিত রিকশা আমদানি ও নিবন্ধন বন্ধ, মহাসড়কে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করা, দক্ষ চালক ও যানবাহনের ডিজিটাল পদ্ধতিতে ফিটনেস দেওয়া, গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কে সার্ভিস লেনের ব্যবস্থা, চাঁদাবাজি বন্ধ করা, ঈদের ছুটি বাড়ানোসহ ১১ দফা সুপারিশ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সমিতির চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ জকরিয়া, যুগ্ম মহাসচিব তাওহীদুল হক লিটন, অর্থ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান রাসেল প্রমুখ। 



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews