অতীশ দীপঙ্কর বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠচক্র

আসছে ফাল্গুনে আমরা দ্বিগুণ হব

বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন নিয়ে প্রথম উপন্যাস জহির রায়হানের অসাধারণ সৃষ্টি ‘আরেক ফাল্গুন’। ১৯৫৫ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে ভাষাশহীদদের স্মরণ করার প্রেক্ষাপটে রচিত উপন্যাসের মূল চরিত্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রনেতা মুনিম। এ ছাড়া সালমা, রেনু, বানু, নীলা, আসাদ, কবি রসুলসহ আরও অনেক চরিত্রে দৃশ্যপট রচিত হয়েছে। তাদের সবাই শিক্ষার্থী। কালজয়ী এ উপন্যাসে উঠে এসেছে ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারির মর্মান্তিক ঘটনা ও বীরত্বগাথা।

জহির রায়হানের লেখনীতে বাস্তবতা, আবেগ এবং সামাজিক-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের নিপুণ সমন্বয় দেখা যায়। তাঁর উপন্যাসের চরিত্রগুলো জীবন্ত এবং গল্পের প্লট পাঠককে আবেগাপ্লুত করে। জহির রায়হানের লেখা শুধু সাহিত্য নয়, এটি ইতিহাসেরও একটি দলিল, যা বাংলাদেশের সংগ্রাম ও সংস্কৃতিকে চিরস্মরণীয় করে রেখেছে।

১৩ মার্চ অতীশ দীপঙ্কর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় সুহৃদ সমাবেশের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয় ‘সুহৃদ পাঠচক্র’। এতে জহির রায়হান ও তাঁর সৃষ্টিকর্ম নিয়ে এমনটাই তুলে ধরেন আলোচকরা।

বায়ান্নর আন্দোলনের উত্তাল সময় নিয়ে রচিত এ উপন্যাসে বিভিন্ন চরিত্রের মাধ্যমে রাজনৈতিক ও সামাজিক আন্দোলনের বাস্তবতা তুলে ধরা হয়েছে। গল্পের প্রধান চরিত্রগুলোর মধ্যে আছে তরুণ ছাত্রনেতা, রাজনৈতিক কর্মী এবং সাধারণ মানুষ; যারা ভাষার অধিকারের জন্য সংগ্রাম করছে। উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্ররা ব্যক্তিগত সম্পর্ক ও রাজনৈতিক সংগ্রামের মধ্যে পড়ে যায়। একদিকে রাষ্ট্রের দমননীতি, অন্যদিকে ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব– এই দুইয়ের টানাপোড়েন পুরো উপন্যাসে ছড়িয়ে আছে।

শেষ পর্যন্ত আন্দোলনের রক্তাক্ত পরিণতি ও শহীদদের আত্মত্যাগ ইতিহাসের অংশ হয়ে যায়। কিন্তু সেই আত্মত্যাগ বৃথা যায় না, বরং একটি নতুন দিনের সূচনা করে, যেখানে ভাষার জন্য সংগ্রাম একটি শক্তিশালী আন্দোলনে পরিণত হয়। এমনটাই আলোচকরা তুলে ধরেন। প্রখ্যাত ঔপন্যাসিক জহির রায়হানের জনপ্রিয় উপন্যাস ‘আরেক ফাল্গুন’ ছিল আলোচনার মূল বিষয়।

পাঠচক্রে আলোচনায় অংশ নেন লেখক ও শিক্ষক গায়ত্রী মৃধা এবং ট্রাস্টি কবি মো. কামরুজ্জামান লিটু, সুহৃদ প্রধান উপদেষ্টা ও সিএসই বিভাগের চেয়ারম্যান শারমিন আকতার, আইন বিভাগের চেয়ারম্যান আ ম মো. সাঈদ  প্রমুখ।

শারমিন আকতার বলেন, উপন্যাসের নাম ‘আরেক ফাল্গুন’ প্রতীকী অর্থ বহন করে। এটি বোঝায় যে আন্দোলন ও প্রতিরোধ একেবারেই শেষ হয় না, বরং নতুন নতুন সংগ্রামের জন্ম দেয়। উপন্যাসের শেষদিকে ছাত্রদের নাম ধরে ধরে জেলখানায় ঢোকানোর সময় ডেপুটি জেলার সাহেব হাঁপিয়ে ওঠেন এবং বিরক্তির সঙ্গে বলেন, ‘উহু, এত ছেলেকে জায়গা দেব কোথায়। জেলখানা তো এমনিতে ভর্তি হয়ে আসছে।’ প্রত্যুত্তরে পাশ থেকে ছাত্রদের মধ্য থেকে একজন চিৎকার করে বলেন, ‘এতেই ঘাবড়ে গেলেন নাকি? আসছে ফাল্গুনে আমরা কিন্তু দ্বিগুণ হবো।’ সংগ্রামকে দারুণভাবে উজ্জীবিত করা যায় তার জ্বলন্ত উদাহরণ এ উক্তি।

সুহৃদ উপদেষ্টা হাসান বলেন, এটি শুধু একটি কাহিনি নয়, এটি মুক্তিযুদ্ধের সময়কার মানুষের সংগ্রাম, আশা এবং স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষার একটি শক্তিশালী দলিল। সুহৃদ অভিজিৎ মৃধা, আহসান হাবিব প্রমুখ অংশগ্রহণ করেন। v

সভাপতি সুহৃদ সমাবেশ, অ্যাডাস্ট



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews