টিনের বেড়া দিয়ে জায়গাটা ঘিরে ফেলা হয়েছে। একটা ফাঁক গলিয়ে দুজন সেখানে ঢুকে পড়লাম। রাস্তার ঢালে কয়েক ঝোপ বিজু ফুলের গাছ ও নিচু জায়গায় দাঁতরাঙার ঝোপ। কিন্তু সেখানে গিয়ে হতাশ হলাম, কোনো ফুল নেই, সব ফুটে ঝরে গেছে। রহিম ভাই ভরসা দিয়ে বললেন, ‘এখানে নেই তো কী হয়েছে, আমাদের সুন্দর বনে আছে, চলেন সেখানে যাই।’
সুন্দর বন! সেটা আবার কোথায়? জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাকৃতিক যে বনটুকু আছে, সেটাই এখানে এ নামে পরিচিত। সে বনে গিয়ে পেলাম শাল, সেগুন, মুচকুন্দ, আনই, কুমারীলতা, ভুঁইচাঁপা, বাজনাগাছের মধ্যে বিক্ষিপ্তভাবে ছড়িয়ে থাকা বহু বিজু ফুলের গাছ। কিন্তু সেখানেও ফুলগুলো মলিন, শেষের পথে। বনের আরও ভেতরে ঢুকে অবশেষে দেখা পেলাম সেই সতেজ বিজু সুন্দরীদের। প্রথমে সাদা বিজু ফুলের, পরে পেলাম গোলাপি-সাদার দেখা। সে দিনেই মনে হয় ফুটেছে। সাদা ফুলগুলো থেকে চমৎকার ঘ্রাণ আসছে, গোলাপি ফুলগুলোর ঘ্রাণ সাদা ফুলগুলোর চেয়ে কম। গুল্ম প্রকৃতির অনুচ্চ গাছ, ঝোপ করে আছে। জড়াজড়ি করে আছে শালগাছগুলোর সঙ্গে। পাতা বেশ বড়, রঙ্গনের মতো কিছুটা দেখতে। ফুলও পলকজুঁই ও শ্বেতরঙ্গনের মতো। তবে ফুল খুবই ছোট, ফুলনল অনেক লম্বা ও সরু কাঠির মতো। একটা থোকায় শত শত ফুল, হাওয়ায় মাথা দুলিয়ে যেন আমাদের অভিবাদন জানাচ্ছে।