বাংলাদেশে আসা বিদেশি কোচ ও ফুটবলাররা আয়কর ফাঁকি দিচ্ছেন। জড়িয়ে পড়ছেন মাদক ব্যবসাসহ নানা অপরাধে। কর ফাঁকি দেওয়ার অপরাধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) দেশের বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলেও অধরা থেকে যাচ্ছেন তারা।

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে (বিসিবি) একাধিক বিদেশি কোচ কাজ করছেন। তাদের সঙ্গে বিসিবির চুক্তির কপি বোর্ড অব ইনভেস্টমেন্টে (বিওআই) জমা দেওয়া হয়। এরপর নিরাপত্তা ক্লিয়ারেন্সের জন্য পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি) ও রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআই থেকে ছাড়পত্র নিতে হয়।

বিসিবির সিইও নিজামউদ্দিন চৌধুরী বলেন, বিসিবির প্রত্যেক বিদেশি কোচ, স্টাফের আয়ের বিপরীতে আয়কর যথাযথ নিয়ম মেনে জমা দেওয়া হয়।

বিদেশি কোচরা বিসিবিতে কাজ শুরু করার পর তাদের বেতন থেকে আয়কর কেটে রাজস্ব বিভাগে জমা দেয় বিসিবি। যখন কোচ মেয়াদ শেষে বাংলাদেশ থেকে চলে যান, ইমিগ্রেশনে ট্যাক্স পরিশোধের সনদপত্র দেখাতে হয়।

এখানেই ফুটবল কোচদের শুভঙ্করের ফাঁকি। বাংলাদেশের আইটি অর্ডিন্যান্স ১৯৮৪-এর ২(৪২) ধারায় বলা হয়েছে, বিদেশি নাগরিকদের আয়ের শতকরা ৩০ ভাগ কর দিতে হবে। ১৬৬ ধারায় আয়কর ফাঁকি দেওয়া ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে জরিমানা ও ফৌজদারি আইনে মামলা করার বিধান রয়েছে। কিন্তু বাফুফে বছরের পর বছর ধরে করের টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেয় না। কর ফাঁকি দেওয়ার জন্য কোচদের সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ শেষ না করে বরখাস্ত করা হয়। বাফুফের সাবেক এক অর্থ কর্মকর্তার সূত্রে জানা গেছে, বিদেশি কোচরা এ পর্যন্ত প্রায় ১০ কোটি টাকা কর ফাঁকি দিয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

গত ১৫ বছরে জাতীয় দলে মূল কোচের পাশাপাশি বেশ কজন সহকারী বিদেশি কোচ কাজ করেছেন। তাদের আয়কর রাজস্ব বিভাগে জমা দেয়নি বাফুফে। মাসিক ১০ লাখ টাকা বেতন দিয়ে ব্রিটিশ বংশোদ্ভূত অস্ট্রেলিয়ান টেকনিক্যাল ডিরেক্টর পল স্মলিকে পুষেছিল বাফুফে। 

তিন বছর ধরে কাজ করা স্মলিকে সাড়ে তিন কোটি টাকা বেতন-ভাতা দেওয়া হয়েছে। তার কর বাবদ প্রায় এক কোটি টাকা জমা দেয়নি বাফুফে। আয়কর না দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটিয়েছিলেন জাতীয় ফুটবল দলের ব্রিটিশ কোচ জেমি ডে।

তবে বাফুফের সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন তুষার বলেন, আমরা অডিট রিপোর্টে ট্যাক্স বাবদ টাকার হিসাব দেখিয়েছি। জেমি ডের নামে ট্যাক্স কেটে রাখা হয়েছিল।

বিদেশি কোচদের আয়ের বিপরীতে কর দেওয়া হয়েছে এমন কোনো ডকুমেন্ট দেখানো যাবে? এই প্রশ্নের জবাবে তুষার বলেন, এটা আসলে ফাইন্যান্স বিভাগ দেখে। ডকুমেন্ট ওদের কাছে থাকবে।

ফুটবলাররা মাদক ব্যবসাসহ নানা ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছেন। কয়েক বছর আগে সিআইডির মানি লন্ডারিং শাখা কজন বিদেশি ফুটবলারকে অপকর্মের দায়ে আটক করেছিল। এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, প্রায়ই বিভিন্ন অভিজাতপাড়ার ক্লাব, ডিসকোতে হানা দিয়ে বিদেশিদের আটক করা হলেও পরে ফুটবলার পরিচয়ে তাদের ছেড়ে দিতে হয়। এসব খেলোয়াড় ইয়াবা, হেরোইন ও ফেনসিডিলসহ বিভিন্ন মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ছেন। এদের আটক করা হলে সংশ্লিষ্ট ক্লাবের কর্মকর্তারা এসে ছাড়িয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য তদবির করেন।



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews