৬১. আমি সামুদ জাতির কাছে তাদের ভাই সালেহকে প্রেরণ করেছিলাম। সে বলেছিল, ‘হে আমার জাতি! তোমরা আল্লাহর ইবাদত করো। তিনি ছাড়া তোমাদের অন্য কোনো উপাস্য নেই। তিনি তোমাদের মাটি থেকে সৃষ্টি করেছেন এবং সেখানেই তিনি তোমাদের বসতি দান করেছেন। সুতরাং তোমরা তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করো এবং তাঁরই দিকে প্রত্যাবর্তন করো। নিশ্চয়ই আমার প্রতিপালক নিকটেই আছেন, তিনি (তাঁর বান্দাদের) আহ্বানে সাড়া দেন।’ [সুরা : হুদ, আয়াত : ৬১ (প্রথম পর্ব)]

তাফসির : হজরত হুদ (আ.) ও তাঁর জাতির ঘটনা বর্ণনার পর এই আয়াতে সামুদ জাতি ও তাদের নবী হজরত সালেহ (আ.)-এর কাহিনী বর্ণনা করা হয়েছে। এই সুরার ৬১ থেকে ৬৮ নম্বর আয়াতে সামুদ জাতি সম্পর্কে বর্ণনা করা হয়েছে। হজরত সালেহ (আ.) হজরত নুহ (আ.) ও হজরত হুদ (আ.)-এর পর আল্লাহর নবী হিসেবে পৃথিবীতে আগমন করেছেন। আগের নবীদের ধারাবাহিকতা রক্ষা করে তিনিও মানুষকে শিরক ও মূর্তিপূজা পরিহার করে এক আল্লাহর ইবাদত করার আহ্বান জানান।

আদ ও সামুদ একই দাদার বংশধরের দুই ব্যক্তির নাম। সামুদ জাতি ছিল আদ জাতিরই পরবর্তী শাখা। হুদ (আ.) ও তাঁর যেসব ইমানদার সঙ্গী আল্লাহর আজাব থেকে রক্ষা পেয়েছিলেন, এরা তাদের বংশধর। এ জাতিকে দ্বিতীয় আদও বলা হয়। আরব ও সিরিয়ার মধ্যবর্তী অঞ্চলকে তখন হিজর বলা হতো, সে এলাকায় এ জাতি বসবাস করত। তারা খুবই শক্তিশালী ও বীর জাতি ছিল। প্রস্তর খোদাই ও স্থাপত্যবিদ্যায় তারা পারদর্শী ছিল। সমতল ভূমির বিশাল এলাকাজুড়ে অট্টালিকা নির্মাণ ছাড়াও পর্বত খোদাই করে তারা নানা ধরনের প্রকোষ্ঠ নির্মাণ করত। এ জাতির মধ্যে কালক্রমে মূর্তিপূজাসহ নানা রকম কুসংস্কারের প্রচলন ঘটে। সালেহ (আ.) ছিলেন তাদেরই বংশের লোক। আল্লাহ তাআলা তাদের সঠিক পথ দেখানোর জন্য সালেহ (আ.)-কে নবী হিসেবে পাঠিয়েছেন। তিনি সারা জীবন তাদের হেদায়েতের পথে আনার চেষ্টা করেছেন। এতে অল্প কিছু সঙ্গী ছাড়া গোটা জাতি তাঁর অবাধ্যই থেকে যায়। একপর্যায়ে তারা দাবি করে, আপনি যদি সত্যিই নবী হয়ে থাকেন, তাহলে আমাদের ‘কাতেবা’ নামের পাথরময় পাহাড়ের ভেতর থেকে একটি ১০ মাসের গর্ভবতী, সবল ও স্বাস্থ্যবতী উষ্ট্রী বের করে দেখান। এটা দেখাতে পারলে আমরা আপনার ওপর ইমান আনব। সালেহ (আ.) আল্লাহর কাছে দোয়া করেন। আল্লাহর কুদরতে পাহাড় থেকে একটি অদ্ভুত রকমের মাদি উট বের হয়। তা দেখে কিছু লোক ইমান নিয়ে আসে। কিন্তু তাদের সরদাররা ইমান আনেনি। একপর্যায়ে তারা সে উটনিকে হত্যা করে ফেলে। এতে সালেহ (আ.) তাঁর জাতির ওপর আল্লাহর আজাব নেমে আসার ঘোষণা দেন। তিনি তাদের সতর্ক করে দেন যে শিগগিরই তোমাদের ওপর আজাব আসবে, তিন দিন পরই আল্লাহর আজাব তোমাদের ধ্বংস করে দেবে। নির্ধারিত সময়ে আসমানি আজাব এসে অবিশ্বাসীদের চিরতরে নিশ্চিহ্ন করে দেয়।

গ্রন্থনা : মাওলানা কাসেম শরীফ



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews