দক্ষিণ কোরিয়ার বিরোধী দল সোমবার দেশটির সাংবিধানিক আদালতকে স্থগিত প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওলের অভিশংসনের বিষয়ে দ্রুত রায় দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে। একই সাথে বিলম্ব করা হবে দায়িত্বজ্ঞানহীন এবং তা সামাজিক অস্থিরতা সৃষ্টি করছে বলে জানিয়েছে বিরোধী দল।
সিউল থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।
গত ৩ ডিসেম্বর সামরিক আইন জারির বিপর্যয়কর ঘোষণার কারণে আইন প্রণেতারা ইউনকে অভিশংসিত করেছিলেন এবং আদালত গত মাসে তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে পদ থেকে অপসারণ করা হবে কিনা তা সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য কয়েক সপ্তাহ ধরে উত্তেজনাপূর্ণ অভিশংসন শুনানি পরিচালনা করে।
বিশেষজ্ঞরা মার্চের মাঝামাঝি সময়ে রায় ঘোষণার পূর্বাভাস দিলেও সাংবিধানিক আদালত এখনো কোনো রায় দেয়নি। ফলে ইউনের মামলাটিকে এর ইতিহাসের দীর্ঘতম আলোচনায় পরিণত করেছে।
সোমবার পুলিশ জানিয়েছে, সপ্তাহান্তে প্রায় এক লাখ মানুষ সিউলের রাস্তায় নেমে আসে। ইউনকে অবিলম্বে পদ থেকে অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভের পাশাপাশি তার সমর্থনে বিশাল সমাবেশও হয়েছিল।
সোমবার এক দলীয় সভায় বিরোধীদলীয় সাংসদ কিম মিন-সিওক বলেন, ’দেশের জনগণ তাদের শেষ সীমায় পৌঁছে গেছে, উত্তেজনা এবং ধৈর্য ইতিমধ্যেই তাদের সীমা ছাড়িয়ে গেছে।’
তিনি বলেন, আমরা সাংবিধানিক আদালত থেকে একটি দায়িত্বশীল সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করছি। আরো বিলম্ব অস্বাভাবিক এবং দায়িত্বজ্ঞানহীন হবে।’
পুলিশ জানিয়েছে, আদালত যখন অভিশংসনের রায় ঘোষণা করবে, তখন অস্থিরতা রোধ করতে তারা ’সকল উপলব্ধ সরঞ্জাম’ ব্যবহার করতে প্রস্তুত।
একজন বিচারক ইউনের আটকের মেয়াদ বাড়ানোর পর ইউনের সমর্থকরা ইতোমধ্যেই একবার সিউলের একটি আদালতে হামলা চালিয়েছে। সিউলের একটি জেলা আদালতের দরজা-জানালা ভেঙে ফেলেছে। কর্তৃপক্ষ আসন্ন রায়কে ঘিরে সহিংসতার বিষয়ে সতর্ক করেছে।
সোমবার একজন পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, রায়ের দিন আশেপাশের দোকান এবং পেট্রোল পাম্পগুলো সাময়িকভাবে বন্ধ রাখার বিষয়ে আমরা আলোচনা করছি।
সিউল মেট্রোপলিটন পুলিশ এজেন্সির ভারপ্রাপ্ত প্রধান পার্ক হিউন-সু গত সপ্তাহে সাংবাদিকদের বলেছিলেন যে পুলিশ ’সাংবিধানিক আদালতের ১০০ মিটারের মধ্যে এলাকাটিকে প্রতিবাদ-মুক্ত অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করা হবে।
পার্ক বলেন, পুলিশকে মরিচের স্প্রে এবং লাঠি ব্যবহারের অতিরিক্ত প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে এবং সংস্থাটি বোমার হুমকির জবাব দেয়ার জন্য’ পুলিশের বিশেষ বাহিনী মোতায়েনের কথাও বিবেচনা করছে।
অভিশংসনের রায়ের পাশাপাশি ডিসেম্বরে সামরিক আইন জারির জন্য বিদ্রোহের অভিযোগে ইউন একটি ফৌজদারি বিচারের মুখোমুখি হচ্ছেন, যা তাকে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রথম দায়িত্বরত প্রেসিডেন্ট হিসেবে ফৌজদারি মামলায় বিচারের মুখোমুখি করেছে।
সূত্র : এএফপি/বাসস