স্বাস্থ্য সচেতনদের কাছে দারুণ জনপ্রিয় চিয়া বীজ। উপকারী এই বীজে ভিটামিন, খনিজ এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে প্রচুর পরিমাণে। নিয়মিত চিয়া বীজ খেলে হজম ভালো হয়, কোলেস্টেরল ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং সর্বোপরি ভালো থাকে হার্টের স্বাস্থ্য। সুপারফুড হিসেবে জনপ্রিয় চিয়া বীজ আমাদের পানিশূন্যতা রোধ করে। ফাইবারে পরিপূর্ণ ছোট্ট এই বীজ প্রদান করে প্রোটিনও। তবে চিয়া বীজ স্বাস্থ্যের উপর কিছু নেতিবাচক প্রভাবও ফেলতে পারে। বিশেষ করে অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়া হলে। জেনে নিন চিয়া বীজ সম্পর্কে ১০ তথ্য। 

  1. হার্ভার্ড মেডিক্যাল স্কুলের একটি রিপোর্ট বলছে, প্রতিদিন ২৮ গ্রাম অথবা ২ থেকে ৩ টেবিল চামচ চিয়া সিড খাওয়া যেতে পারে। সুস্থ থাকতে এটি নানাভাবে আপনাকে সাহায্য করবে। ইউএসডিএ ন্যাশনাল নিউট্রিয়েন্ট ডাটাবেস অনুসারে, এক আউন্স (প্রায় দুই টেবিল চামচ) চিয়া বীজে রয়েছে ১০ গ্রাম ফাইবার, ৪ গ্রাম প্রোটিন, ৯ গ্রাম স্বাস্থ্যকর চর্বি, দৈনন্দিন চাহিদার ১৮ শতাংশ ক্যালসিয়াম, ৩০ শতাংশ ম্যাগনেসিয়াম ও ২৭ শতাংশ ফসফরাস। 
  2. আমেরিকান ডায়েটিক অ্যাসোসিয়েশনের জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ১২ সপ্তাহ ধরে প্রতিদিন পরিমাণ মতো চিয়া বীজ খেলে টাইপ ২ ডায়াবেটিসসহ অতিরিক্ত ওজন এবং স্থূল প্রাপ্তবয়স্কদের কার্ডিওভাসকুলার ঝুঁকি কমে। ইউরোপীয় জার্নাল অব ক্লিনিকাল নিউট্রিশনে প্রকাশিত আরেকটি গবেষণায বলছে, চিয়া বীজ উচ্চ রক্তচাপযুক্ত ব্যক্তিদের রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। 
  3. চিয়া সিডের পুষ্টিগুণ পেতে ১০ থেকে ১৫ মিনিট ভিজিয়ে রাখাই যথেষ্ট। ১ টেবিল চামচ চিয়া বীজ ৩ টেবিল চামচ দুধ বা পানিতে ১৫ মিনিট ভিজিয়ে রাখলেই এগুলো পর্যাপ্ত তরল শোষণ করে নেবে। স্মুদি, দই বা ওটসের সঙ্গে মিশিয়ে খেতে পারেন এই চিয়া বীজ। তবে শুধু চিয়া-পানি না খেয়ে অন্য কোনও রেসিপিতে চিয়া বীজ যোগ করতে চাইলে ঘণ্টা দুয়েক ভিজিয়ে রাখুন। আধা ঘণ্টা থেকে দুই ঘণ্টা পর্যন্ত চিয়া সিড ভিজিয়ে রাখলে এটি আরও বেশি পানি শোষণ করে আরও নরম হবে। চিয়া-পুডিং বা এ ধরনের ঘন কিছু বানিয়ে খেতে চাইলে এই নরম বীজই আদর্শ। 
  4. সকালে খালি পেটে চিয়া বীজ ভেজানো পানি খেতে পারেন। এতে মেটাবোলিজম বাড়বে এবং দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা থাকবে।
  5. রাতের খাবার শেষে চিয়া সিড খেলে হজমের সমস্যা দূর হয়। অ্যাসিডিটিও নিয়ন্ত্রণ করে এটি।
  6. চিয়া বীজ আমাদের ভেতর থেকে হাইড্রেট করে। ভেজা চিয়া বীজ পানিতে তাদের ওজনের ১০-১২ গুণ পর্যন্ত শোষণ করতে পারে। ভিজে তারা একটি জেল তৈরি করে যা ধীরে ধীরে শরীরে আর্দ্রতা ছেড়ে দেয়। এই কারণেই ক্রীড়াবিদরা ওয়ার্কআউটের আগে চিয়া পানীয়তে চুমুক দেন। এটি হাইড্রেশন এবং ইলেক্ট্রোলাইট ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে, বিশেষ করে যখন তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়।
  7. প্রোটিনের চমৎকার উৎস চিয়া বীজ। অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে পরিপূর্ণ এই বীজ শরীরের অক্সিডেটিভ স্ট্রেস এবং প্রদাহের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সহায়তা করে৷ চিয়া বীজ ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং ফসফরাস সমৃদ্ধ, যা হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
  8. চিয়া বীজ ক্যালোরি সমৃদ্ধ। ফলে চিয়া বীজের পানি পান করলে ক্যালোরি গ্রহণ করা হয়। যদি প্রচুর পরিমাণে খাওয়া হয় বা যদি অন্যান্য ক্যালোরিযুক্ত খাবার বা পানীয়গুলোতে চিয়া বীজ যোগ করা হয়, তবে ক্যালোরি গ্রহণের পরিমাণ বেড়ে যায়। অত্যধিক ক্যালোরি গ্রহণ এড়াতে এটি পরিমিত খাওয়া জরুরি।
  9. চিয়া বীজে নয়টি অপরিহার্য অ্যামিনো অ্যাসিড থাকে।
  10. চিয়া সিড খাওয়ার ব্যাপারে কিছু সাবধানতাও মেনে চলতে হবে। অতিরিক্ত পরিমাণে চিয়া সিড খেলে হজমের সমস্যা হতে পারে। চিয়া বীজ তাদের ওজনের ১২ গুণ পানি শোষণ করতে পারে। ফলে এগুলো পেটে উল্লেখযোগ্যভাবে প্রসারিত হয়। এটি প্রচুর পরিমাণে খাওয়া হলে পেট ফাঁপতে পারে বা পেটে ব্যথা হতে পারে।

তথ্যসূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া, ইকোনোমিক টাইম ও হার্ভার্ড হেলথ  



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews