নোয়াখালীর মাইজদী থেকে ছেলের ভর্তি পরীক্ষার জন্য আসা আবুল কালাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘এমন পরিস্থিতি দেখে আমরা আতঙ্কিত। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে উত্তীর্ণ হলেও ছেলেকে ভর্তি করাব কি না, সেটিও এখন চিন্তা করতে হবে। এভাবে তারা প্রকাশ্যে দেশীয় অস্ত্র হাতে মহড়া দিল। তাদের মধ্যে ন্যূনতম কোনো ভয় দেখলাম না।’
নগরের তালপুকুরপাড় এলাকার একটি বাসার ভাড়াটে শাহনাজ আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার বাসা ৫ তলায়। কিশোর গ্যাংয়ের চিৎকার শুনে বারান্দায় গিয়ে দেখি তারা দেশীয় অস্ত্র হাতে মহড়া দিচ্ছে। তাদের হাতে ছেনি, রামদা, চাপাতি, হকিস্টিক, রডসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র। এ সময় কয়েকটি ককটেলও বিস্ফোরণ ঘটলে গোটা এলাকার মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়ে।’
প্রায় একইভাবে বিকেল সাড়ে চারটার দিকে নগরের আদালতপাড়া এলাকায় কিশোর গ্যাং মহড়া দিয়েছে বলে প্রথম আলোকে জানান স্থানীয় বাসিন্দা তৌহিদুর রহমান। তিনি বলেন, ‘আমার কাছে মনে হয়েছে কিশোর গ্যাং অতীতের চেয়ে এখন বেশি বেপরোয়া। তাদের অস্ত্রের মহড়ার কারণে মুহূর্তের মধ্যেই পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।’
এর আগে গত ৩ জানুয়ারি বিকেলে নগরের কান্দিরপাড় এলাকায় ভিক্টোরিয়া কলেজ–সংলগ্ন রানীর দিঘির পাড়ে অস্ত্রের মহড়া দেয় কিশোর গ্যাংয়ের অর্ধশতাধিক সদস্য। এ সময় ককটেলের বিস্ফোরণও ঘটানো হয়। পরবর্তী সময়ে এ ঘটনায় বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। কুমিল্লা নগরে কমপক্ষে ১৫টি কিশোর গ্যাং গ্রুপ রয়েছে বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সূত্রে জানা গেছে। ২০১৭ সালের পর গ্যাং কালচারে জড়িয়ে পড়া শিশু-কিশোরদের হাতে আট বছরে অন্তত ১২টি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এ ছাড়া মাদক কারবার, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, ইভ টিজিংয়ের মতো অপরাধে জড়াচ্ছে এসব গ্যাং।