বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে নিয়ে বিএনপির রাজশাহী জেলার আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদের দেয়া একটি বক্তব্যকে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্যে ভরপুর বলে মন্তব্য করেছে জেলা জামায়াত।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর রাজশাহী জেলার আমির অধ্যাপক আব্দুল খালেক ও সেক্রেটারি মো: গোলাম মুর্তজা বুধবার (২ এপ্রিল) গণমাধ্যমে বিবৃতি দিয়েছেন।
এতে নেতৃদ্বয় বলেন, ‘বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে নিয়ে বিএনপির রাজশাহী জেলার আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদের দেয়া একটি বক্তব্য আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। আবু সাঈদ চাঁদের দেয়া বক্তব্যটি আজ বুধবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার হচ্ছে। কিন্তু তার এই বক্তব্য মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্যে ভরপুর, যা অনাকাঙ্ক্ষিত ও অপ্রত্যাশিত। আমরা তার এই বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’
‘জামায়াতে ইসলামীকে নিয়ে কোনো বক্তব্য দিতে হলে তাকে আরো জেনে-বুঝে বক্তব্য দেয়া উচিত। দায়িত্বশীল পদে থেকে দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্য দেয়া তার জন্য সমীচীন নয় বলে আমরা মনে করি।’
নেতৃদ্বয় বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতি সব সময়ই সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে। জামায়াতের এই ভূমিকা গোটা জাতি গ্রহণ করেছে।’
উল্লেখ্য, আবু সাঈদ চাঁদ গোপালপুর মাদরাসা মাঠে স্মৃতি ফুটবল ম্যাচ শেষে জামায়াতের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে বক্তব্য দেন। জামায়াতে ইসলামীকে ইঙ্গিত করে বলেন, ‘জামায়াত মনে করেছে তারা ক্ষমতায় চলে এসেছে। তারা অস্ত্রবাজী, চাঁদাবাজী ও পায়ের রগ কাটে।’
‘চাঁদের এ ধরনের বক্তব্য কয়েক দশক ধরে প্রচার করা হচ্ছে। রগ কাটা, অস্ত্র ও চাঁদাবাজী—এসব বক্তব্য জনগণ বহু আগেই প্রত্যাখ্যান করেছে। চাঁদ জামায়াতের বিরুদ্ধে এসব কথা উচ্চারণ করে কী অর্জন করতে চান, তা জনগণের কাছে স্পষ্ট নয়,’ বলেন জামায়াত নেতৃদ্বয়।
তারা আরো বলেন, ‘তিনি যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা চরম মিথ্যাচার ছাড়া আর কিছুই নয়। ইতোপূর্বে বাঘা উপজেলার চিহ্নিত সন্ত্রাসী বাউসা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিম, সেক্রেটারি নাসির উদ্দিন, যুবদল সভাপতি এনামুলসহ একদল সন্ত্রাসীর নেতৃত্বে প্রকাশ্য দিবালোকে ঈদুল ফিতরের আগের দিন রোজা রাখা অবস্থায় ইসলামী ছাত্রশিবিরের বাঘা উপজেলার সাথী সোহরাব হোসেন ও মো: মুস্তাফিজুর রহমান ফয়সালের উপর পৈশাচিক হামলা চালানো হয়। তারা এখনো মারাত্মক আহত অবস্থায় বাঘা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এছাড়া জামায়াত কর্মী টুটুল, মিজানুর রহমান সাইদুর ও শিবির কর্মী রোহানের দোকানপাট ভাঙচুর ও লুটপাট করেছে এবং মিজানুর রহমান শিল্পী (বাউসা ইউনিয়ন জামায়াতের ৪ নম্বর ওয়ার্ড সভাপতি) ও শিবির নেতা রোহানের বাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুর ও নগদ দুই লাখ টাকা, ছয় ভরি স্বর্ণালঙ্কার লুট করে নিয়ে গেছে। কিন্তু আবু সাঈদ চাঁদ সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কোনো কথা না বলে এহেন মিথ্যা বক্তব্য দিয়ে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টির অপচেষ্টা করেছেন বলে প্রতীয়মান হয়।’
নেতৃদ্বয় আরো বলেন, ‘জামায়াত দেশের মানুষের অধিকার, আইনের শাসন, ন্যায়বিচার, মানবাধিকার ও ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আপসহীনভাবে লড়াই অব্যাহত রেখেছে।’
‘জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতি সকল সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে। জামায়াতের এই ভূমিকা গোটা জাতি গ্রহণ করেছে। আর এই জনপ্রিয়তার কারণেই সম্ভবত আবু সাঈদ চাঁদ এধরনের হিংসাত্মক ও কূরুচিপূর্ণ বক্তব্য প্রদান করেছেন। আমরা এ ধরনের বিভ্রান্তিকর ও অপবাদ আরোপের রাজনীতি থেকে বিরত থাকার জন্য সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি,’ বিবৃতিতে বলেন জামায়াত নেতৃদ্বয়।