রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে, ঈদের জন্য শিশুদের জন্য পার্টি পোশাক আর পাঞ্জাবিই বেশি কিনছেন অভিভাবকরা।

ঈদে বড়দের চেয়ে ছোটদের আনন্দটাই যেন বেশি। অভিভাবকদেরও চেষ্টা থাকে সাধ্যের মধ্যে সেরা পোশাক-জুতা সন্তানদের হাতে তুলে দেওয়ার। ঈদের কেনাকাটা করতে গিয়ে শিশুদেরও হরেক বায়নাক্কা,; বিশেষ করে ঝলমলে পোশাক দেখলে তো কথাই নেই।

এবারও রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে, ঈদের জন্য শিশুদের জন্য পার্টি পোশাক আর পাঞ্জাবিই বেশি কিনছেন অভিভাবকরা।

ঈদের দিন পরার জন্য মিরপুর ১০ নম্বরের শাহ আলী প্লাজা থেকে ‘নাইরা কাটের’ কাপড় কিনেছে জেরিন সুলতান।

সে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলল, “এই ড্রেসগুলা দেখতে সুন্দর। পছন্দ হইছে, মাকে বলার পর কিনে দিল।”

জেরিনের মা নিশাত রহমান বলেন, “এরা তো এখন ঈদ যে একটা উৎসব তা বুঝতে শুরু করছে। ফ্রেন্ডরা ভালো ড্রেস পরবে, তাই তারও ওরকম গর্জিয়াস ড্রেস চাই। আর পার্টি ড্রেসে উৎসব উৎসব ভাবটা আসে। সুতির ড্রেস আরামের হলেও, এ ফিলটা আসে না।”

ছেলেদের পাঞ্জাবি-পায়জামা বিক্রি হয় অরবিট মার্টে। দোকানটির ব্যবস্থাপক মাহমুদুল আজমাইন বললেন, বড়দের চেয়ে শিশু-কিশোরদের পাঞ্জাবি বিক্রিতে বেশি সাড়া পাচ্ছেন তারা।

“নিজেদের জন্য কিনতে না পারলেও বাচ্চাদের জন্য নেওয়ার চেষ্টা করছে অনেকে। কেউ আবার নিজের সঙ্গে মিলিয়ে ছেলের জন্য পাঞ্জাবি কিনছেন।”

দোকনটিতে মায়ের সঙ্গে পাঞ্জাবি কিনতে এসেছে ফাইজান মুর্শেদ। তার মা সানজিদা মুর্শেদ বলেন, “ঈদের নামাজ পড়তে যাবে। ঈদের দিন সকালেই সবার সাথে দেখা হয় এ কারণে কিনে দেওয়া।

আর গরমেও আরাম।”

মার্কেটটির ‘বেবী কর্ণার’র বিক্রেতা মো. সাকিব বলেন, এই ঈদেও তারা ভারি কাজের পোশাক বেশি বিক্রি করছেন।

“বাচ্চারা এগুলা চায়, তাদের পছন্দ। সেকারণে বাবা-মাও কিনে দয়ে। আর উৎসবটা তো তাদেরই। তাই একটু বেশি সেজে থাকার চেষ্টা।”

বসুন্ধরা শপিং মল থেকে নিজের দুই ছেলে ও অন্যদেরকে উপহার দিতে পাঞ্জাবি কিনেছেন মাহমুদুর রহমান।

তিনি বলেন, “ঈদ তো তাই পাঞ্জাবি কেনা। একটা উৎসব উৎসব ভাব আসে। অন্য ড্রেস তো সব সময়ই পরা যায়।”

পার্টি ফ্রক বেশি বিক্রির কথা জানিয়েছেন বিক্রেতারাও

মিরপুর ১১ নম্বরের মোহাম্মদীয়া মার্কেটের মক্কা মদিনা বাণিজ্যালয়ে বিক্রি হচ্ছে শিশুদের পার্টি ফ্রক, সারারা, গারারা, সুতির ফ্রক।

দোকানটির ব্যবস্থাপক মো. রাশেদ বলেন, উৎসবের কথা বিবেচনা করে অভিভাবকরা শিশুদের জন্য ভারি কাজের পোশাক কিনলেও কেউ কেউ বিকল্প হিসেবে সঙ্গে সুতির পোশাকও রাখছেন।

“সবাই পার্টি ফ্রক, সারারা, গারারা নিচ্ছে। গরম তো এবার, সেজন্য যাদের সামর্থ আছে তারা সঙ্গে একটা কটনের কাপড় নিচ্ছেই।”

‘বোম্বে কালেকশন’র বিক্রেতা মুশতাক আহমেদ বললেন, ঈদের সময় তো একটু পার্টি ড্রেসই নিতে চায় সবাই। কটনের কাপড় আরামের হলেও গর্জিয়াস লাগে না তেমন সেকারণে ঈদে এসব কাপড় খুব একটা চলে না।

দোকানটিতে ৫ বছরের শিশুর জন্য পোশাক পছন্দ করছিলেন শিউলি আক্তার।

তিনি বলেন, “পার্টি ফ্রক কেনার চিন্তা করছি। বাচ্চারা পছন্দ করে এগুলা। এসব ছাড়া অন্যকিছু কিনলে সেটা গর্জিয়াসও হয় না, তারা পছন্দও করে না।”

‘আল হারারা’ দোকানের বিক্রয়কর্মী আশিক বলেন, ঈদে জমকালো পোশাকের চাহিদা বরাবরই বেশি; ফলে গরমের ঈদে আরামদায়ক কাপড়ের উপর তৈরি পোশাক এনেছেন তারা।

ঈদ গরমে বলে ছেলে শিশুদের আরামের কথা ভেবে পাঞ্জাবিও কিনছেন বাবা-মায়েরা 

“পার্টি ড্রেসে আপনার গরম লাগবেই। তাও এ কাপড়গুলোতে কিছটা কম লাগবে, সফট। বাচ্চাদের যাতে আরও সুন্দর লাগে এজন্য এসব ড্রেস নেয়, ঈদের আনন্দের জন্য৷”

সানজিদা বোরকা হাউজে বিক্রি হচ্ছে পার্টি ফ্রক, সারারা, নাইরা কাট, গাউন।

দোকানটির বিক্রয়কর্মী মো. সাগর বলেন, “পার্টি ফ্রক, স্টোনের কাজ করা কাপড় বেশি চলতেছে এবার। বাচ্চাদের ফুটিয়ে রাখার জন্য সবাইই ঈদে এসব পোশাক নিতে চায়। গরমের জন্য সফট কাপড়ই আনা হয়েছে।”

মহাখালির এসকেএস শপিং মলের ইনসাফ ফ্যাশন ওয়াল্ড এর ব্যবস্থাপক মো. আবু ইউসুফও শিশু-কিশোরদের পার্টি পোশাক বেশি বিক্রির কথা বলছেন।

“লেহেঙ্গাটা বেশি বিক্রি হচ্ছে। যারা এফোর্ট করতে পারছে তারা বাইরের ড্রেসগুলো নিচ্ছে। যারা পারছে না তারা দেশের পোশাকই নিচ্ছে। বাইরের ড্রেসের দাম বেশি তবে আরামের।”

ধানমন্ডির শপিং মল রাপা প্লাজার ক্যাথেতে বিক্রি হচ্ছে ছেলেদের টিশার্ট, প্যান্ট, কোটি সেট; মেয়েদের পার্টি ফ্রক, টি শার্ট, কটনের ফ্রক।

অভিভাবকরা শিশু সন্তানদের জন্য সুতি, আরামদায়ক পোশাকের চেয়ে পার্টি ড্রেসই নিচ্ছেন বেশি 

দোকানটির বিক্রয়কর্মী মো. শফিক বলেন, “গেঞ্জি সেট, কোটি সেট মোটামুটি চলছে। ঈদে পরাতে মেয়েদের জন্য পার্টি ফ্রক নিচ্ছে। গরম লাগলেও উৎসবের কারণে এটা নিচ্ছে।”

দোকানটি থেকে দেড় বছরের মেয়ের জন্য পার্টি ফ্রক কিনেছেন ধানমন্ডি ২৭ নম্বরের বাসিন্দা আয়েশা খন্দকার।

তিনি বলেন, “এই ঈদটা হয়ত ও কিছুটা বুঝবে। সেকারণে কিনে দিলাম, দেখতে সুন্দর লাগবে। আর বেশিক্ষণ তো পরেও থাকবে না, দুয়েকটা ছবি তুলে খুলে দেব। তাই আর গরমের চিন্তা করিনি।”



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews