কানাডার মন্ট্রিল বিমানবন্দরে শঙ্কিত মুখে দাঁড়িয়ে আছেন এক বাংলাদেশি ভদ্রলোক। সঙ্গে আছে দেশ থেকে রান্না করে আনা খাবার। ফরমে যেহেতু লেখা হয়েছে, চেক তো করা হবেই। এদিকে এখানে এসব চেকিংয়ে দেরি হলে যদি টরন্টোর কানেক্টিং ফ্লাইটটা মিস হয়ে যায়! খাবারগুলো হিমায়িত করে পলিপ‍্যাকে ভরে বক্সে রাখা। পলিপ্যাক খুলে দেখছেন ইন্সপেকশন অফিসার, ‘আই ক‍্যান সি ফিশ। কান্ট রিকগনাইজ দ‍্য আদার থিং।’

ফিশটি হলো পাঙাশ মাছের ঝোল আর ‘দ‍্য আদার থিং’টি গরুর ভুঁড়ি। বাংলাদেশি ভদ্রলোক এসব কোনোটিই খান না। স্ত্রী ‘আম্মার রান্না’ খেতে চেয়েছেন বলে এই ঝামেলায় ফেঁসে যাওয়া। টরন্টোর ড‍্যানফোর্থ এলাকায় ঢুঁ মারলে দুই-তিন কেজি থেকে সাত-আট কেজির পাঙাশও মিলবে। মাছ রান্নার রেডি মসলারও অভাব নেই। মেখে চুলায় বসিয়ে দিলেই হয়। তা–ও ইচ্ছা না করলে ড‍্যানফোর্থেই মিলবে বাংলাদেশি রেস্তোরাঁ। হোম শেফও আছেন কয়েকজন। অর্ডার করলেই হয়। তবু তাঁর স্ত্রীর আম্মার রান্নাই চাই। একটু গরমমসলা দেওয়া, খুব করে কষানো, টকটকে লাল ঝোল, নামানোর আগে একটু টালা জিরার গুঁড়া ছড়িয়ে দেওয়া পাঙাশ মাছের তরকারিই চাই। আর সে অনুরোধের ঢেঁকি গিলেই আজ সময়মতো বাড়ি ফেরাটা অনিশ্চিত। যে কারণে এত ঝামেলা, সেই খাবারগুলোও ছাড় পাবে কি না, বোঝা যাচ্ছে না।

সেদিন তাঁর ফ্লাইট মিস হয়েছিল। পরের প্লেন ধরে বাড়ি ফিরতে আরও সাত-আট ঘণ্টা দেরি। ইন্সপেকশন অফিসার ফিশ চেনেন বলে ছেড়ে দিয়েছেন। ভুঁড়ি জিনিসটা যে এভাবে রান্না করে খাওয়া হয়, এটা কানাডিয়ান অফিসারের চিন্তারও বাইরে ছিল। ওটা তাই বিনে ফেলে দেওয়া হলো। এদিকে তাঁর স্ত্রী, মানে আমি দুপুর থেকে ভাত রেঁধে অপেক্ষা করছি আম্মার রাঁধা তরকারির জন‍্য। সেই ভাত খাওয়া হলো রাত ১২টারও পর। তবে দুপুরের বাসিভাত আর তাড়াহুড়ায় গরম করা পাঙাশ মাছের ঝোল দিয়ে ভাত খেতে খেতে আমি সেই ইন্সপেকশন অফিসারকে ক্ষমা করে দিয়েছিলাম।



Contact
reader@banginews.com

Bangi News app আপনাকে দিবে এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা যা আপনি কাগজের সংবাদপত্রে পাবেন না। আপনি শুধু খবর পড়বেন তাই নয়, আপনি পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপভোগও করবেন। বিশ্বাস না হলে আজই ডাউনলোড করুন। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।

Follow @banginews