মঙ্গলবার এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দিয়ে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ বলেন, ’সামাজিক দূর্গ’ নামক উদ্যোগের অংশ হিসেবে বিতরণ করা হবে এসব মাস্ক।
ব্র্যাক জানিয়েছে, উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ জেলা নির্বাচনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে সহযোগিতা নেওয়া হয়েছে। নির্বাচিত জেলাসমূহে ৪১টি স্থানীয় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা এই উদ্যোগে সহযোগী থাকবে।
সংস্থার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এ উদ্যোগের মাধ্যমে ৩৫ জেলায় কাজ করবেন ব্র্যাকের ২৭ হাজার ৫০০ কর্মী। যাতে সবচেয়ে বেশি জোর দেওয়া হবে মাস্ক ব্যবহারের ক্ষেত্রে।
তাছাড়া করোনা প্রতিরোধে নিয়মিত সাবান দিয়ে হাত ধোয়া, হাঁচি-কাশি দেওয়ার সময় যথাযথ সতর্কতা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার প্রচারণা এবং ভ্যাকসিন রেজিস্ট্রেশনের পাশাপাশি সচেতনতামূলক বার্তা ছড়িয়ে দেওয়ার পাশাপাশি ভুল তথ্য ও গুজব নিরসনের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
বাছাই করা জেলাগুলো হল- ময়মনসিংহ, শেরপুর, কিশোরগঞ্জ, টাঙ্গাইল, জামালপুর, গাজীপুর, নারায়নগঞ্জ, ঢাকা, ঝিনাইদহ, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, যশোর, চুয়াডাঙ্গা, নড়াইল, খুলনা, মাগুরা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা, হবিগঞ্জ, সিলেট, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, বগুড়া, জয়পুরহাট, নাটোর, ভোলা, বরিশাল, দিনাজপুর, রংপুর, লালমনিরহাট, কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, ফেনী, নোয়াখালী এবং চাঁদপুর।
প্রয়োজনের নিরিখে পর্যায়ক্রমে সারা দেশে এই উদ্যোগ চালু করার পরিকল্পনার কথাও জানিয়েছে ব্র্যাক।
এই কর্মসূচির মূল অর্থায়ন আসছে গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স কানাডা'র অনুদান ও ব্র্যাক-এর নিজস্ব তহবিল থেকে। এছাড়াও বিভিন্ন সহযোগী প্রতিষ্ঠান ও দাতা সংস্থা এর সাথে যুক্ত হচ্ছেন, যাদের মধ্যে অস্ট্রেলিয়া সরকারও রয়েছে।
ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ বলেন, “করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সামাজিক দূর্গ গড়তে চাই সমাজের সকল স্তরের মানুষের সংযোগ ও সদিচ্ছা, বিশেষত স্থানীয় পর্যায়ের মানুষের নেতৃত্ব।
”দেশের সব মানুষ করোনা টিকার অধীনে না আসা পর্যন্ত, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কোনো বিকল্প নেই। আমরা আমাদের সর্বশক্তি নিয়ে কাজে ঝাঁপিয়ে পড়ছি, পাশে পেয়েছি ৪১টি সহযোগী উন্নয়ন সংস্থাকে।”
ইয়েল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক মুশফিক মোবারক বলেন, “এ দেশে, বিশেষ করে জনসমাগমের স্থানগুলোতে মাস্কের ব্যবহার খুবই কম দেখা যায়।
“ইয়েল ও স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির পক্ষ থেকে আমরা বাংলাদেশের ৬০০ ইউনিয়নে একটি গবেষণা করেছি। তাতে দেখা গেছে, অনেকে মাস্কের প্রয়োজনীয়তা বোঝে না, অনেকে আবার খরচের কথা ভেবে মাস্ক পরে না। আমরা গবেষণাতে আরও পেয়েছি যে তিন স্তরের পুণর্ব্যবহারযোগ্য সার্জিক্যাল মাস্ক কম খরচে এই দেশেই উৎপাদন সম্ভব।”
এর আগে, ব্র্যাক গত ৫ মাস করোনাভাইরাস মোকাবেলায় যুক্তরাজ্য সরকারের ফরেন, কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিসের (এফসিডিও) সঙ্গে অংশীদারত্বে বাংলাদেশের ৬টি জেলায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর (ডিজিএইচএস) এবং কমিউনিটি ক্লিনিক ট্রাস্টের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে একটি পাইলটিং কার্যক্রম পরিচালনা করেছে।
এই প্রকল্পের সাফল্যের উপর ভিত্তি করে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) শনাক্তকৃত উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ জেলায় সংক্রমণ কমাতে এবং স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়নে অংশীদার প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে কাজ করবে ব্র্যাক।
ব্র্যাকের ঊর্ধ্বতন পরিচালক কেএএম মোর্শেদের সঞ্চালনায় এই সংবাদ সম্মেলনে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম, ব্র্যাকের স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও জনসংখ্যা কর্মসূচির পরিচালক মোর্শেদা চৌধুরী বক্তব্য দেন।