পাকিস্তান ও আফগানিস্তান দীর্ঘদিনের টানাপোড়েনের পর নিজেদের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠার বিষয়ে একমত হয়েছে। এর পাশাপাশি দেশ দু’টি রাষ্ট্রদূত নিয়োগ করার বিষয়েও সম্মত হয়েছে। একে উভয়দেশের সম্পর্ক স্বাভাবিক করার পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি বলে ধরা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (২২ মে) পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডন এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
বুধবার চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে পাকিস্তান, চীন ও আফগানিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের এক অনানুষ্ঠানিক ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে এ সমঝোতায় পৌঁছানো হয়। বৈঠকটি ছিল চীনের বৃহত্তর আঞ্চলিক শান্তি ও সংযোগ নীতির অংশ, যা বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের (বিআরআই) মাধ্যমে এগিয়ে নেয়া হচ্ছে।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই বলেন, ‘আফগানিস্তান ও পাকিস্তান কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নীত করার জন্য স্পষ্ট ইচ্ছা প্রকাশ করেছে এবং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব রাষ্ট্রদূত নিয়োগের বিষয়ে নীতিগতভাবে সম্মত হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘চীন এটিকে স্বাগত জানায় এবং দুই দেশের সম্পর্ক উন্নয়নে সহায়তা অব্যাহত রাখবে।’
এছাড়াও পাকিস্তান ও চীন উল্লেখ করেছে, চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোর সিপিইসি আফগানিস্তান পর্যন্ত সম্প্রসারণের বিষয়ে একটি চুক্তি হয়েছে।
আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও অর্থনৈতিক একীকরণের লক্ষ্যে চীন-আফগানিস্তান-পাকিস্তান ত্রিপক্ষীয় সংলাপটি পুনরায় শুরু করতে সহায়তা করার জন্য এ বৈঠকের আয়োজন করে চীন। ত্রিপক্ষীয় বৈঠকটি ২০২৩ সাল থেকে স্থগিত ছিল।
বৈঠকে একে অপরের রাজধানীতে রাষ্ট্রদূত নিয়োগের পাশাপাশি নিরাপত্তা ও উগ্রবাদ দমনে সহযোগিতা বৃদ্ধির প্রতিশ্রুতি, উগ্রবাদ গোষ্ঠী ও বহিরাগত হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে যৌথ পদক্ষেপ নেয়া, আফগানিস্তানে চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোর সম্প্রসারণে সমর্থন অন্তর্ভুক্ত ছিল। এ সময় চীন-আফগানিস্তান-পাকিস্তান পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের ষষ্ঠ বৈঠকটি কাবুলে আনুষ্ঠানিকভাবে পুনরায় শুরু করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, তালেবান ২০২১ সালে আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলের পর এখনো কোনো দেশ তাদের সরকারকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেয়নি। তবে চীন, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও রাশিয়াসহ কয়েকটি দেশ কাবুলে রাষ্ট্রদূত নিয়োগ করেছে এবং তালেবান নিয়োগকৃত রাষ্ট্রদূতদের নিজেদের দেশেও স্বাগত জানিয়েছে। পাকিস্তান ও আফগানিস্তান এখনো একে অপরের রাজধানীতে কেবল অস্থায়ী কূটনীতিক নিয়োগেই সীমাবদ্ধ আছে।