যুক্তরাষ্ট্রের নব-নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইঙ্গিত দিয়েছেন যে তিনি গাজায় যত দ্রুত সম্ভব যুদ্ধ বন্ধ করতে আগ্রহী। বিদায়ী বাইডেন প্রশাসনও গাজা ছিটমহলে যুদ্ধবিরতি চুক্তির জন্য তাদের শেষ চেষ্টা হিসেবে কূটনৈতিক চাপ অব্যাহত রেখেছে।
চলতি সপ্তাহের শুরুতে ট্রাম্প বলেছেন, ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস পণবন্দীদের ২০২৫ সালের ২০ জানুয়ারির (এটি তার প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ গ্রহণের দিন) মধ্যে বাড়িতে ফিরিয়ে না দিলে 'ব্যাপক সহিংসতা শুরু হবে।'
চলতি মাসের শুরুতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তিনি যে হুমকি দিয়েছিলেন তার সাথে এই হুঁশিয়ারির মিল রয়েছে। তিনি বলেছিলেন, 'মধ্যপ্রাচ্যে এবং সেখানে মানবতাবিরোধী নির্যাতন চালিয়েছে যারা তাদেরকে মারাত্মক মূল্য দিতে হবে। যারা দায়ী তাদেরকে প্রবলভাবে আঘাত করা হবে; যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘ ও ঘটনাবহুল ইতিহাসে এত কঠিন আঘাত আর কাউকে করা হয়নি।'
গাজায় ট্রাম্প কী করতে চলেছেন তা এখনো স্পষ্ট নয়। এই হুমকির বিষয়কে স্পষ্ট করতে বলা হলে তিনি বলেন, 'এর মানে হলো, এটা সুখকর হবে না।'
আটলান্টিক কাউন্সিলের সিনিয়র গবেষক আহমেদ ফুয়াদ আলখাতিব বলেন, হামাসের উপর সামরিক চাপ তৈরি করতে ট্রাম্প সৈন্য মোতায়েন করতে পারেন। তবে, 'গত ১৪ মাস ধরে ইসরাইলিরা যে তাণ্ডব চালিয়েছে তার চেয়ে কঠিন কিছু' হওয়ার সম্ভাবনা কম।
আলখাতিব ভিওএ-কে বলেছেন, 'অন্য একটা বিষয়ও হতে পারে, তবে আমি আশা করব তেমনটা যেন না হয়; সেখানে যে মানবিক ত্রাণ সরবরাহ করা হচ্ছে তা সংকুচিত করা হতে পারে।'
এমনটাও হতে পারে যে ট্রাম্প আসলে গাজার বাইরে থাকা হামাস সদস্য ও তাদেরকে সাহায্য করছে যে দেশগুলো তাদের লক্ষ্য করেই এই হুমকি দিয়েছেন। আলখাতিব আরো যোগ করেন, অর্থায়ন বন্ধ করতে ওই দেশগুলোকে চাপ দিতে পারে ট্রাম্প।
হামাসকে যুক্তরাষ্ট্র সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে বিবেচনা করে।
হামাসের বৈদেশিক শাখাগুলো ওয়াশিংটনের চাপের কাছে আরো নতি স্বীকার করতে পারে। কেননা লেবাননে হিজবুল্লাহর পরাজয় এবং সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের ক্ষমতাচ্যুতির ফলে এই গোষ্ঠীর পৃষ্ঠপোষক তেহরান দুর্বল হয়ে পড়েছে।
ওয়াশিংটন ইন্সটিটিউট ফর নিয়ার ইস্ট পলিসি প্রজেক্টের ‘মধ্যপ্রাচ্য শান্তি প্রক্রিয়া’বিষয়ক অধিকর্তা ডেভিড ম্যাকভস্কি বলেছেন, ট্রাম্পের হুঁশিয়ারি 'মধ্যপ্রাচ্যের জনগণের কাছে নির্ভুল বার্তা পাঠিয়েছে যে, যুক্তরাষ্ট্র এটা করতে চায়।'
এদিকে, বাইডেন প্রশাসন অঙ্গীকার করেছে, ক্ষমতা হস্তান্তরের আগে যে কয়েকটি দিন তাদের হাতে রয়েছে, ওই সময়ের মধ্যে তারা একটি চুক্তি সম্পাদন করতে চেষ্টা করবে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন বুধবার বলেছেন, তিনি একটি সমঝোতায় পৌঁছানোর বিষয়ে 'আশাবাদী।'
সূত্র : ভিওএ